জগদীপ ধনখড়। — ফাইল চিত্র।
উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর তাঁকে সরকারি বাসভবনের বাইরে দেখেননি কেউই। সেই জগদীপ ধনখড় সরকারি বাসভবনের বাইরে বেরোলেন। তাঁর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, সোমবার দিল্লির ধৌলা খান এলাকায় সেনাবাহিনীর হাসপাতালে দাঁতের চিকিৎসকের কাছে যান ধনখড়। ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, গত ২১ জুলাই উপরাষ্ট্রপতি পদে ইস্তফা দেওয়ার পরে সরকারি বাসভবনেই নিজেকে বন্দি করে ফেলেছিলেন ধনখড়। তবে আত্মীয়স্বজন এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত দেখা করতেন তিনি। তবে সোমবারই প্রথম বাড়ির বাইরে ধনখড় পা রাখলেন বলে জানিয়েছে ওই সূত্রটি।
অন্য দিকে, ধনখড়ের ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, রাতেই উপরাষ্ট্রপতির জন্য নির্দিষ্ট সরকারি বাসভবন ছেড়ে দিল্লির ছতরপুর এলক্লেভের একটি বাড়িতে উঠে যাবেন তিনি। ওই বাড়িটি হরিয়ানার রাজনৈতিক দল ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোক দল (আইএনএলডি)-র প্রধান অভয় সিংহ চৌটালার। চৌটালা এই খবরের সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, “আমাদের দীর্ঘ দিনের পারিবারিক সম্পর্ক। উনি (ধনখড়) আমার কাছে বাড়ির জন্য বলেননি। আমিই তাঁকে প্রস্তাব দিই।” তিনি যে বাড়ি বদল করছেন, তা ইতিমধ্যেই তাঁর নিরাপত্তারক্ষীদের জানিয়ে দিয়েছেন ধনখড়।
পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার অনেক আগেই গত ২১ জুলাই রাতে আচমকা উপরাষ্ট্রপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান জগদীপ ধনখড়। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে ইস্তফাপত্র পাঠান তিনি। পর দিন সকালেই সেই ইস্তফা গৃহীত হয়। ধনখড় ইস্তফাপত্রে লিখেছিলেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণেই এই পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত। যদিও এই তত্ত্ব বিরোধী দলগুলি মানেনি। বেশ কিছু দিন ধরেই উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের পদ থেকে ধনখড়কে সরাতে চেয়েছিলেন বিরোধীরা। তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবও আনা হয়েছিল। সেই আবহে হঠাৎ পদ থেকে সরে দাঁড়ানোকে ‘অস্বাভাবিক’ বলেই মনে করেন বিরোধীরা। ইস্তফা দেওয়ার পর মাস দেড়েক জনসমক্ষে দেখা যায়নি ধনখড়কে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের অন্য একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল, নতুন বাংলোয় যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন ধনখড় দম্পতি। ২১ জুলাইয়ের পর থেকে জিনিসপত্র গোছানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা। নতুন বাংলো বরাদ্দ করা হলেই তাঁরা সেখানে উঠে যাবেন বলে জানা গিয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতিও সরকারি বাংলো, সরকারি গাড়ি এবং নিরাপত্তারক্ষী পেয়ে থাকেন। তবে নতুন বাংলো পাওয়া না-অবধি চৌটালার বাড়িতেই ধনখড় দম্পতি থাকবেন বলে মনে করা হচ্ছে। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন। নবনির্বাচিত উপরাষ্ট্রপতি সরকারি বাসভবনে থাকেন। সেই নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগেই উপরাষ্ট্রপতির বাসভবন ছাড়তে চলেছেন ধনখড়।