সংসদে লাগাতার হইচইয়ের ফলে আটকে গিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকারের আর্থিক সংস্কারের বিভিন্ন প্রস্তাব। পণ্য ও পরিষেবা বিলটি (জিএসটি) নিয়েও অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হওয়ায় এ বার সরাসরি কংগ্রেস দল ও তার নেত্রী সনিয়া গাঁধীকে নিশানা করলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। সংসদের কাজকর্ম ঠিক ভাবে চালানোর চেষ্টায় সোমবার সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়েছে। তার আগে জেটলির মন্তব্য, জিএসটি বিলটি কংগ্রেসেরই আনা। কিন্তু এখন নিছক রাজনীতি করতেই তারা একে আটকানোর চেষ্টা করছে।
সংসদে বিরোধীদের চাপের মুখে মাথা নোয়ানোর রাস্তায় যাননি নরেন্দ্র মোদী। সুষমা স্বরাজের মতো মন্ত্রীর ইস্তফার দাবি সরাসরি খারিজ করেছে সরকার। উত্তাল সংসদে ললিত মোদী বিতর্কে নিজের বক্তব্য প্রকাশ করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করেছিলেন সুষমা স্বরাজ। এ বার জেটলিও সেই পথে হেঁটে জিএসটি নিয়ে বিরোধী কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছেন। তাঁর দাবি, এনডিএ সরকার পণ্য ও পরিষেবা কর চালু করতে নতুন কোনও বিল নিয়ে আসেনি। বড়সড় পরিবর্তনও আনা হয়নি। বরং এ বিষয়ে বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে যে জটিলতা ছিল, তা দূর করতেই জোর দিয়েছিল মোদী সরকার। অর্থমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, কংগ্রেস এখন ‘রাজনীতির কারণে’ যে ‘নেতিবাচক’ মনোভাব নিচ্ছে, তাতে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি হচ্ছে। জেটলির মতে, কংগ্রেসের উচিত আত্মসমালোচনা করা। কেননা, বিলটি মনমোহন সিংহ সরকারের নিয়ে আসা। কংগ্রেসের রাজ্য সরকারগুলিও তখন একে সমর্থন করেছিল।
২০১৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে সারা দেশে পণ্য ও পরিষেবা কর চালু করতে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে সংসদে সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ করাতে হবে। সেইসঙ্গে প্রয়োজন দেশের অন্তত ১৫টি রাজ্যের সমর্থন। সে ক্ষেত্রে কংগ্রেসের সাহায্য প্রয়োজন।
সংসদের অধিবেশনে গুরুত্বপূর্ণ বিল কোনও কারণ ছাড়াই কংগ্রেস আটকাতে চাইছে বলে জেটলির অভিযোগের পাল্টা জবাব দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা। তাঁর মন্তব্য, জেটলি কংগ্রেসকে জ্ঞানদান করছেন, কিন্তু মোদী সরকার নিজের দায়িত্ব পালন করছে না। ফলে সরকারের দ্বিচারিতাকে তুলে ধরাই কংগ্রেস সহ অন্য বিরোধী দলগুলির কর্তব্য।
এই টানাপড়েনের মধ্যে বিতর্কে জড়িয়ে থাকা জমি বিল নিয়েও জট খোলার ইঙ্গিত নেই। জমি বিল নিয়ে গঠিত যৌথ কমিটি সংসদে তাদের রিপোর্ট দিতে চার দিন সময় চাইবে বলে জানা গিয়েছে।