অসমে লুকিয়ে জামাতুল জঙ্গিরা, জানাল সরকার

অসমে প্রায় ৬০ জন জেহাদি ও ৩০ জন মাওবাদী জঙ্গি লুকিয়ে রয়েছে বলে জানাল রাজ্য সরকার। স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে মন্ত্রী রকিবুল হুসেন আজ বিধানসভায় জানান, অসমে ৮টি জঙ্গি সংগঠন এখন সক্রিয়। আরও ১৩টি জঙ্গিদল সংঘর্ষবিরতিতে রয়েছে। রাজ্যে সক্রিয় জঙ্গি সংগঠনগুলির মধ্যে পয়লা নম্বরে রয়েছে এনডিএফবি সংবিজিৎ বাহিনী। সংবিজিৎ ও জি বিদাইয়ের নেতৃত্বে থাকা ওই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা ২৭০ জন। এর পর রয়েছে পরেশ বরুয়ার নেতৃত্বাধীন আলফা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৫ ০৩:৪৪
Share:

অসমে প্রায় ৬০ জন জেহাদি ও ৩০ জন মাওবাদী জঙ্গি লুকিয়ে রয়েছে বলে জানাল রাজ্য সরকার।

Advertisement

স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে মন্ত্রী রকিবুল হুসেন আজ বিধানসভায় জানান, অসমে ৮টি জঙ্গি সংগঠন এখন সক্রিয়। আরও ১৩টি জঙ্গিদল সংঘর্ষবিরতিতে রয়েছে। রাজ্যে সক্রিয় জঙ্গি সংগঠনগুলির মধ্যে পয়লা নম্বরে রয়েছে এনডিএফবি সংবিজিৎ বাহিনী। সংবিজিৎ ও জি বিদাইয়ের নেতৃত্বে থাকা ওই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা ২৭০ জন। এর পর রয়েছে পরেশ বরুয়ার নেতৃত্বাধীন আলফা। যাদের সদস্য সংখ্যা ২৪০। সরকারি হিসেবে, রাজ্যে কেএলও ‘লিঙ্কম্যানের’ সংখ্যা ৭০ জন। কোনও নাশকতা না ঘটালেও রাজ্যে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ বা জেএমবি মডিউলের বাড়বাড়ন্ত নিয়েও চিন্তায় অসম সরকার। পুলিশের সন্দেহ, জেএমবি সদস্যরা নিজেরা কোনও নাশকতায় জড়াচ্ছে না। রাজ্যে থাকা ‘মুসলিম ইউনাইটেড লিবারেশন টাইগার্স-অসম’ (মুলটা), হরকত উল মুজাহিদিনের ‘স্লিপার সেলের’ সঙ্গে যোগাযোগ রাখাই এখন জেএমবি মডিউলের সদস্যদের উদ্দেশ্য। রাজ্যে মুলটার নেতৃত্বে রয়েছে মনসুর ওরফে সোনমণি। হরকতের মাথা মৌলানা ফকরুদ্দিন ওরফে আক্রাম মাস্টার। জামাতের নেতা জাহিদুল ইসলাম ওরফে এহসার। বর্ধমানে বিস্ফোরণ-কাণ্ডে শাহনুর আলম, তার স্ত্রী সুজিনা, ভাই জাকারিয়া-সহ ১৪ জন জেএমবি সদস্যকে অসমে গ্রেফতার করা হয়েছিল। শাহনুর ও তার সঙ্গী রফিকুল ও সাইখুলকে এনআইএ কলকাতায় নিয়ে গিয়েছে। ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট না দিতে পারায় সুজিনা ও জাকারিয়া সম্প্রতি জামিন পেয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, কোলের শিশু-সহ সুজিনাকে জেলে রাখতে সমস্যা হচ্ছিল। তার বিরুদ্ধে তেমন কোনও প্রমাণও জোগাড় করা যায়নি। জেরায় সুজিনা সব সময় স্বামীর উপরে দায় ঠেলে দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের দু’টি মাদ্রাসায় ধর্মশিক্ষা নেওয়া ছাড়া তার বিরুদ্ধে জেহাদি কাজে সরাসরি যুক্ত থাকার প্রমাণ মেলেনি। একই ভাবে, শাহনুরের ভাই জাকারিয়ার বিরুদ্ধেও তেমন জোরদার তথ্য জোগাড় করতে পারেনি পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, জামাতের ‘মডিউল’-এর বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগ বা অস্ত্র শিক্ষার প্রমাণ মিলছে না। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ধৃতদের যোগাযোগের কথা পুলিশ জানতে পারলেও, তা প্রমাণ করা যাচ্ছে না। সুজিনা, জাকারিয়াদের জেলে রেখে তাই লাভ হচ্ছিল না। পুলিশের বক্তব্য ছিল, সুজিনা ও জাকারিয়া জামিন পেলে, তাদের উপর নজর রেখে আরও কিছু সূত্র মিলতে পারে।

Advertisement

সরকারি সূত্রে খবর, জেহাদিদের পাশাপাশি সুনীলজির মতো মাওবাদীর নেতৃত্বে অসমে জঙ্গি চিন্তাধারা ছড়াচ্ছে। এ রাজ্যে সেনাধ্যক্ষ টিংরাজ ওরাং। মূলত কার্বি আংলং, গোলাঘাট জেলায় ঘাঁটি গড়েছে মাওবাদীরা। তা ছাড়া, বরাক ও বড়োভূমির চা বাগানে আদিবাসী যুবকদের দলে টানছে। প্রাক্তন আনলা নেতার সঙ্গে ঝাড়খণ্ড-ছত্তীসগঢ়ের মাওবাদীদের যোগাযোগ প্রমাণিত। উজানি অসম ও অরুণাচলেও তাদের গতিবিধি রয়েছে। মাওবাদীদের বিরুদ্ধে রাজ্যে ৭টি নাশকতার ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ৮৮ জনকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন