জম্মু-কাশ্মীরে হাসপাতালগুলিতে পুলিশের তল্লাশি। ছবি: সংগৃহীত।
জম্মু-কাশ্মীরের হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকদের জন্য বরাদ্দ লকারগুলিতে তল্লাশি অভিযান আরও জোরদার করল পুলিশ। আর এই ঘটনায় বেশ অস্বস্তিতে চিকিৎসকেরা। অনেকে আবার আতঙ্কিত বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি। এই তল্লাশি অভিযানের নেপথ্যে অনন্তনাগে সরকারি মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক আদিল রাথর। যাঁর লকার থেকে একে ৪৭ রাইফেল উদ্ধার হয়েছিল। আর যে সূত্রে ধরেই ‘ডক্টর টেরর মডিউল’-এর হদিস মেলে। আর সেই মডিউল-এর সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে দিল্লি বিস্ফোরণের ঘটনা।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত দু’সপ্তাহ ধরে জম্মু-কাশ্মীরের হাসপাতালগুলিতে এই তল্লাশি অভিযান চলছে। কোন কোন হাসপাতালে, কী ভাবে তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে, তার পুরোটাই ভিডিয়ো রেকর্ডিং করা হচ্ছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, প্রত্যেকটি লকার খতিয়ে দেখা হবে। শুধু তা-ই নয়, আগামী দিনে আচমকা তল্লাশি অভিযানেরও প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আর এ ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষগুলিকে পূর্ণ সহযোগিতা করার জন্য বলা হয়েছে। হাসপাতালগুলিতে তল্লাশি অভিযানে তদন্তকারীদের সঙ্গে থাকবেন সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের সুপারও।
তদন্তকারী এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘উপত্যকার বেশির ভাগ হাসপাতালগুলিতেই তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে। আগামী কয়েক দিনে এই অভিযান শেষ করে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। তবে যে কোনও দিন যে কোনও মুহূর্তে আচমকা তল্লাশি অভিযানে যেতে পারি আমরা।’’ তবে এই তল্লাশি অভিযানে লকারগুলি থেকে এখনও পর্যন্ত সন্দেহজনক কিছু মিলেছে কি না, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানায়নি পুলিশ। শ্রীনগরের এক পুলিশ আধিকারিক সংবাদসংস্থাকে বলেন, ‘‘চিকিৎসকেরা সমাজের সম্মাননীয় ব্যক্তি। এ ভাবে তল্লাশি অভিযান চালালে সমগ্র চিকিৎসক সমাজ এবং আমজনতার কাছে ভুল বার্তা যাবে। চিকিৎসক সমাজের সঙ্গে একটা শত্রুতা সৃষ্টি হতে পারে। এমনকি এই ধরনের অভিযান বিরূপ প্রভাবও ফেলতে পারে। কয়েক জন চিকিৎসকের জন্য গোটা চিকিৎসক সমাজকে সন্দেহের তালিকায় নিয়ে আসা যায় না। আর এ ভাবে অনেক চিকিৎসকের ভবিষ্যৎ এবং কেরিয়ারেও প্রভাব পড়বে, বিশেষ করে যাঁরা জম্মু-কাশ্মীরের বাইরে কর্মরত।’’
ঘটনাচক্রে, স্বাস্থ্য দফতর থেকেও সমস্ত হাসপাতালগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, অজ্ঞাতপরিচয় বা ব্যবহার হচ্ছে না, এমন লকারগুলিকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে। শ্রীনগরের হাসপাতালে কর্মরত এক চিকিৎসক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে বলেন, ‘‘আমরাও নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত। কিন্তু যে ভাবে তল্লাশি ভিডিয়ো এবং লাইভ রেকর্ডিং করা হচ্ছে, তাতে সমাজে ভুল বার্তাই যাচ্ছে। এ ভাবে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে আমাদের জঙ্গি তকমা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।’’
প্রসঙ্গত, দিল্লি বিস্ফোরণের আগে অনন্তনাগের সরকারি মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎক আদিল রাথরের লকার থেকে একে ৪৭ উদ্ধার হয়। ঘটনাচক্রে, দিল্লি বিস্ফোরণে যে সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রাথরও রয়েছেন।