এই সেই থালি।— নিজস্ব চিত্র।
মন্ত্রী ও বিশিষ্ট অতিথিদের বক্তব্য রাখার জন্য মঞ্চ প্রস্তুত ছিল। কার পরে কে বক্তব্য রাখবেন, সেই সূচিও তৈরিই ছিল। কিন্তু যে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সময় ‘আবরণ উন্মোচন’ করতেই দেখা গেল বাটি ভর্তি কচি পাঁঠার ঝোল আর দেশি মুরগির কারি সেখানে কথার থেকে হাত-মুখই যে বেশি চলবে সে তো বলাই বাহুল্য। শেষ পর্যন্ত মঞ্চে কোনও নেতা-মন্ত্রী-আমলা উঠলেন না। আস্তিন গুলিয়ে সটান ডাইনিং টেবিলে বসে খাবারেই মন দিলেন তাঁরা।
বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে ‘ঝাড়খণ্ড থালি’-র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হল রবিবার রাতে, হরমুর একটি হোটেলে। ঝাড়খণ্ডের পর্যটন সচিব অবিনাশ কুমারের কথায়, ‘‘ঝাড়খণ্ডের আদিবাসীদের তৈরি করা নানা সুস্বাদু খাবার ঝাড়খণ্ডের পরিচয় বহন করবে। পর্যটকরা বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে এই থালি পাবেন।’’
নিজে ঝাড়খণ্ডের ভূমিপুত্র হলেও ব্রয়লার মুরগি খেয়ে খেয়ে দেহাতি দেশি চিকেনের স্বাদ ভুলেই গিয়েছিলেন পর্যটনমন্ত্রী অমর বাউরি। তাই হিংয়ের গন্ধ মাখানো বাটি ভর্তি দেহাতি মুরগি দেখে চওড়া হাসি ফুটে উঠল তাঁর মুখে। তাঁর পাশেই বসেছিলেন বিধানসভার স্পিকার দীনেশ ওঁরাও। থালা ভর্তি সাজানো খাবার দেখে তাঁরা দু’জনেই স্বীকার করলেন ঝাড়খণ্ডে এসে পর্যটকরা যদি এরকম আতিথেয়তা পান, তা হলে আগামী দিনে ঝাড়খণ্ডে পর্যটন শিল্পের ভবিষ্যত সত্যিই উজ্জ্বল।
কচি পাঁঠার টুকরোতে কামড় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মিডিয়াকে ‘বাইট’ দেওয়াও চলছিল। থালা ভর্তি খাবারের সঙ্গে যা একটু অস্বস্তিকর হলেও মন্ত্রিমশাই হাসিমুখেই তা মেনে নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘সামনেই পর্যটনের মরসুম। এই নিরামিষ ও আমিষ থালি সব পর্যটন কেন্দ্রগুলির হোটেল ও সরকারি অতিথিশালাতে রাখতেই হবে।’’ মন্ত্রীর কথায় শুধু এই রাজ্যের পর্যটকদের জন্য নয়, পড়শি রাজ্যগুলি থেকেও আসেন প্রচুর পর্যটক। বিশেষ করে বেতলা, নেতারহাটের মতো জায়গায় হোটেলগুলিতে প্রায় অর্ধেক কলকাতার পর্যটকদের বুকিং থাকে। ভ্রমণপ্রিয় বাঙালিরা ঝাড়খণ্ডে বেড়াতে এসে এই ঝাড়খণ্ডের থালি পছন্দ করবেনই।
শুধু মন্ত্রী বা আমলাই নন, এ দিন ঝাড়খণ্ডের থালি চাখার জন্য হাজির ছিলেন অনেক অতিথি ও বিশিষ্টজনেরা। শুধু খাবারই নয়, ব্যবস্থা ছিল আদিবাসী নাচ-গানেরও। কিন্তু ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন রাজ্যপাল সৈয়দ আহমেদের মৃত্যুর খবর আসতে গানের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়।