National News

ছবি ‘ঘুরিয়ে’ বিতর্কে বিজেপির আইটি সেল

শুক্রবার টুইটারে একটি ছবি শেয়ার করেন এবিভিপির জাতীয় সাংগঠনিক সভাপতি আশিস চৌহান, যেখানে দেখা যাচ্ছে ঐশীর ডান হাতে প্লাস্টার।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:৩৪
Share:

‘হাতবদল’: ঐশীর সাংবাদিক বৈঠক ও তার ‘মিরর ইমেজ’ (ডান দিকে)।

জেএনইউ ছাত্র সংসদের সভাপতি ঐশী ঘোষের চোট লাগেনি বলে দাবি করে টুইটারে ভুয়ো ছবি ছড়ানোর অভিযোগ উঠল এবিভিপি-বিজেপির একাধিক নেতার বিরুদ্ধে। পরে তা নিয়ে বিতর্ক বাধলে তাঁরা সেই টুইটগুলি মুছে দেন। প্লাস্টার করা হাত দেখিয়ে ঐশী শনিবার আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘আমি প্রথম দিন থেকেই বলে আসছি আমার চোট বাঁ হাতে। আগেও বিজেপির এক নেতা আমার চোট নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো ছবি ছড়ানো হচ্ছে। যাঁরা এগুলো করছেন তাঁদের কিছুই বলার নেই। তাঁরা এমসের চিকিৎসকদের জিজ্ঞাসা করলেই সত্যিটা জানতে পারবেন।’’

Advertisement

গত ৫ জানুয়ারি, রবিবার জেএনইউয়ে মুখোশধারী দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। আহত হন ঐশী। তাঁর বাঁ হাত ভেঙে যায়, মাথা ফেটে যায়। বাঁ হাতে প্লাস্টার, মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়েই ৬ জানুয়ারি, সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি। শুক্রবার টুইটারে একটি ছবি শেয়ার করেন এবিভিপির জাতীয় সাংগঠনিক সভাপতি আশিস চৌহান, যেখানে দেখা যাচ্ছে ঐশীর ডান হাতে প্লাস্টার। ঐশীকে ‘বলিউড নায়িকার থেকেও বড় অভিনেত্রী’ বলে কটাক্ষ করে তিনি প্রশ্ন তোলেন, প্লাস্টার কি করে অন্য হাতে চলে এল। একই ছবি রিটুইট করে ঐশীর চোট যে ভুয়ো, সেই দাবি তোলেন গেরুয়া শিবিরের একাধিক নেতা-কর্মী। তাঁদের মধ্যে ছিলেন, বিজেপি নেতা বিজয় চৌথাইওয়ালে।

খবর যাচাই করার একাধিক সংস্থা অবশ্য জানিয়ে দেয় গেরুয়া-শিবিরের ছড়ানো ওই ছবি ভুয়ো। আসল ছবিকে (বাঁ হাতে প্লাস্টার) ঘুরিয়ে বা তার ‘মিরর ইমেজ’ তৈরি করে ওই টুইট করা হয়। সমাজমাধ্যমে বিতর্ক শুরু হতেই টুইট মুছে দেন আশিস। গেরুয়া শিবিরের পক্ষে শেফালি বৈদ্য ওই ছবি দিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপকে। অনুরাগ পাল্টা শেফালির ছবি ও তার ‘মিরর ইমেজ’ পাশাপাশি রেখে কটাক্ষ ফেরান।

Advertisement

আরও পড়ুন: হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেই চলছিল জেএনইউ হামলার প্রস্তুতি, ৩৭ জনকে চিহ্নিত করল পুলিশ

নভেম্বরেও উঠেছিল একই অভিযোগ। তখন ফি-বৃদ্ধির বিরুদ্ধে দিল্লির রাস্তায় জেএনইউয়ের ছাত্রছাত্রীদের মিছিল ও তাতে পুলিশি লাঠিচার্জের অভিযোগের সময় নানা প্রান্তের পড়ুয়া, সাধারণ নাগরিকও আন্দোলনের পাশে দাঁড়ান। তখনই টুইটারে এক তরুণীর একটি ছবি ছড়ানো হয়, যাতে দেখা যায় তাঁর এক হাতে বোতল ও আর এক হাতে সিগারেট। ওই তরুণী জেএনইউয়ের ছাত্রী বলে প্রচার হয়। লেখা হয়, ‘‘যারা নেশার জন্য টাকা খরচ করতে পারে তারা ফি কমানোর আন্দোলন করে কোন যুক্তিতে?’’ সেই ছবিও যাচাই করে বোঝা যায়, তা ভুয়ো।

এবিভিপি নেতৃত্বের অন্য টুইটেও বেধেছে বিতর্ক। শুক্রবারই সাংবাদিক বৈঠক করে জেএনইউ হামলায় সন্দেহভাজনদের ছবি প্রকাশ করেন অপরাধদমন শাখার ডিসিপি জয় তিরকে। তাতে বাম শিবিরের একাধিক ছাত্রকে অভিযুক্ত করা হয়। খবর যাচাই করার একটি সংস্থা পুলিশের প্রকাশ করা ছবিগুলি ধরে ধরে দেখায়, ওই একই ছবি সোম-মঙ্গলবারই এবিভিপি নেতৃত্ব প্রকাশ করেছিলেন। টুইট করেছিলেন আশিস চৌহান নিজে। এমনকি পুলিশকর্তা যে কাগজগুলি ধরে ধরে অভিযুক্তদের ছবি দেখান, সেই কাগজে যা লেখা ছিল, এবং যে ভাবে লেখা ছিল, তা হুবহু মিলে গিয়েছে এবিভিপি নেতাদের টুইটের সঙ্গে। তার পরেই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘এই তদন্ত কে করেছে? দিল্লি পুলিশ না এবিভিপি?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন