বিমা বিল নিয়ে ভাবনা যৌথ অধিবেশনেরও

রাজ্যসভায় সংখ্যা নেই, নির্ভর করতে হচ্ছে বিরোধীদের উপর। সাত বছর ধরে একই প্রস্তাব নিয়ে দৌত্য চালিয়েও এখন এগারো দলকে নিয়ে বিরোধিতায় সরব কংগ্রেস। চাপ রয়েছে সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রীর মার্কিন সফরের। এই পরিস্থিতিতেও বিমা বিল পাশে মরিয়া সরকার। এক দিকে বরফ গলাতে দৌত্যের চেষ্টা, অন্য দিকে বিকল্প হিসেবে যৌথ অধিবেশনে বিল পাশের চিন্তাভাবনা চলছে মোদী শিবিরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৪ ০৩:২০
Share:

রাজ্যসভায় সংখ্যা নেই, নির্ভর করতে হচ্ছে বিরোধীদের উপর। সাত বছর ধরে একই প্রস্তাব নিয়ে দৌত্য চালিয়েও এখন এগারো দলকে নিয়ে বিরোধিতায় সরব কংগ্রেস। চাপ রয়েছে সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রীর মার্কিন সফরের। এই পরিস্থিতিতেও বিমা বিল পাশে মরিয়া সরকার। এক দিকে বরফ গলাতে দৌত্যের চেষ্টা, অন্য দিকে বিকল্প হিসেবে যৌথ অধিবেশনে বিল পাশের চিন্তাভাবনা চলছে মোদী শিবিরে।

Advertisement

সরকারের ডাকা সর্বদল বৈঠকে আজ কোনও মীমাংসা হয়নি। পরশু ফের সর্বদল বৈঠক ডেকেছে সরকার। সরকারের একটি সূত্র এ-ও জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় বিলটি পেশ করার চেষ্টা হবে। কিন্তু কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা আজ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বিলটি পেশের সময়েই আপত্তি জানিয়ে ভোটাভুটি চাইবে কংগ্রেস।

২০০৮ সালে, বিমা ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির সীমা ২৬ শতাংশ থেকে ৪৯ শতাংশ করার প্রস্তাবকে নিয়ে ইউপিএ সরকার যখন বিল পাশ করাতে সচেষ্ট হয়, তখন বাধা দিয়েছিল বিজেপি। এখন মোদী সরকারই যেখানে বিল পাশে আগ্রহী, কংগ্রেসের আপত্তি কোথায়? জবাবে রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, “সরকার ইউপিএ প্রস্তাবিত বিলের কিছু মৌলিক পরিবর্তন করেছে। সে সব বিবেচনা না করে কংগ্রেস বিলকে সমর্থন করতে পারে না। তাই বিলকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব।” আজাদের মন্তব্য, “তাড়াহুড়ো কীসের? শীতকালীন অধিবেশনে বিল পাশ করাতে কংগ্রেস সাহায্য করবে।”

Advertisement

কংগ্রেস এখন বিরোধী শিবিরে ঐক্য ধরে রাখতে তৎপর। পাল্টা কৌশল নিচ্ছে বিজেপিও। কংগ্রেসের চাপের মুখে বিরোধী শিবিরে ভাঙন ধরাতে তৎপর হয়েছেন অরুণ জেটলি। পাশাপাশি, আনন্দ শর্মার কাছে অর্থমন্ত্রী জেটলি তিনটি প্রস্তাব দিয়েছেন। এক, সর্বদল বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে বর্তমান বিলে প্রয়োজন মতো সংশোধন করে মীমাংসা হোক। দুই, বিরোধীদের প্রস্তাব সরকার বিবেচনা করতে প্রস্তুত। এবং তিন, বিলটি প্রথমে রাজ্যসভায় পেশ হোক। তার পর বিলের কোনও বিষয় নিয়ে আপত্তি থাকলে আলোচনার পর খারিজ করে দেওয়া হোক। এর পিছনের কৌশল হল, রাজ্যসভায় বিলটি নিয়ে আলোচনার পর তা ভোটাভুটিতে পরাস্ত হলে বিজেপি-র কাছে অন্য বিকল্প থাকবে। তখন সংসদের যৌথ অধিবেশন ডেকে বিলটি পাশ করাতে সচেষ্ট হবে মোদী সরকার। রাজ্যসভায় সরকার সংখ্যালঘু হলেও দুই সভা মিলিয়ে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে।

কিন্তু রাজ্যসভায় বিলটি পেশ করাতে না পারলে যৌথ সভা ডাকা সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। আর তাই কংগ্রেস বিলটি পেশ করার সময়েই বিরোধিতা করে ভোটাভুটির দাবি করতে চলেছে। এডিএমকে, তৃণমূল কংগ্রেসও জোরদার ভাবে বিলটির বিরোধিতা করছে। ডেরেক ও ব্রায়েন আজ বলেন, “বিল নিয়ে ভোটাভুটি হলে ওয়াকআউট করার প্রশ্ন নেই। রাজ্যসভায় দলের সাংসদরা বিলটি রুখে দিতে সব রকম চেষ্টা চালাবে।”

তবে বিজু জনতা দল ইতিমধ্যেই বিলটির সমর্থনে রায় দিয়েছে। সমর্থন করতে পারে শরদ পওয়ারের দলও। বিজেপির আশা, জয়ললিতার সমর্থনও জুটতে পারে শেষমুহূর্তে। সব মিলিয়ে চলতি অধিবেশনে বিমা বিলের ভবিষ্যৎ এখনও সুতোয় ঝুলছে।

বিমা ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্ন্যি আনার বিরোধিতায় সোমবার দেশ জুড়ে বিমা কর্মচারীদের ধর্মঘটের কথা বলেছিল কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি। এই সংক্রান্ত বিলটি অবশ্য এ দিন রাজ্যসভায় পেশ হয়নি। এলআইসি-র কর্মচারী সংগঠনের সূত্রে জানানো হয়েছে, বিলটি যে দিন সংসদে পেশ হবে, তার পরের দিনই ধর্মঘট করা হবে। বিমা ধর্মঘটের সমর্থনে রয়েছে সঙ্ঘপরিবারের শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement