Joshimath

১০০০ বাড়ি ভাঙতেই হবে জোশীমঠে! ৩৫ শতাংশ এলাকা অতিঝুঁকিপূর্ণ, তবু ঘর ছাড়ছেন না বাসিন্দারা

এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে একের পর এক বৈঠক হয়েছে প্রশাসনের। তাঁদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাতে তাঁদের জীবিকার ক্ষতি হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:১৪
Share:

ছবি: পিটিআই।

এক বছর আগে ‘দেবভূমির দরজা’ জোশীমঠে দেখা দিয়েছিল ভূমি বিপর্যয়। আড়াআড়ি ফাটল তৈরি হয়েছিল শহর জুড়ে। ভূতাত্ত্বিকরা জানিয়ে দিয়েছিলেন জোশীমঠের অনেকটাই ‘ডুবন্ত’। তবু সেই ডুবতে বসা শহরকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছিল রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় প্রশাসন। সম্প্রতি জানা গিয়েছে সেই চেষ্টা সফল করতে গেলে অবিলম্বে ভাঙতে হবে জোশীমঠের অন্তত ১০০০টি নির্মাণ। যার মধ্যে অধিকাংশই সাধারণ মানুষের বসতবাড়ি। কিন্তু সরকারের কাছ থেকে ঘর ছাড়ার নোটিস পেয়ে বাড়ির মায়া কাটাতে পারছেন না জোশীমঠের বাসিন্দারা।

Advertisement

জোশীমঠে ফাটল বিপর্যয় দেখা গিয়েছিল গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে। তার পর থেকে জোশীমঠের সমস্যা এবং তার সমাধানের নানা চেষ্টা করেছে রাজ্য প্রশাসন। কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর তরফেও দেওয়া হয়েছিল রিপোর্ট। যেখানে বলা হয়েছিল, ঠিক কোন কোন এলাকাকে খালি করে দিতে পারলে ডুবন্ত শহরকে বাঁচানো যাবে। সেই রিপোর্টই বলছে জোশীমঠের ৩৫ শতাংশ এলাকাই ‘হাই রিস্ক জোন’ অর্থাৎ অতিঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। যার মধ্যে চারটি পুরসভা এলাকা অবিলম্বে খালি করা প্রয়োজন। ওই পুরসভা এলাকায় অসংখ্য ঘরবাড়ি রয়েছে। বসতবাড়ির পাশাপাশি বাণিজ্যিক ভবনও রয়েছে কিছু। এ ছাড়া রয়েছে দোকানপাট, হোটেল, হোমস্টে। এই সব কিছু মিলিয়ে ১০০০টি নির্মাণ অবিলম্বে ভেঙে তার ধ্বংসস্তূপ অন্য কোথাও সরিয়ে ফেলতে হবে বলে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে।

গত বছর মার্চ মাসে এই রিপোর্ট দিয়েছিল এনডিআরএফ। পরে ওই রিপোর্ট পুনর্বিবেচনা করে চূড়ান্ত হয় মে মাসের শেষে। তার পরও সাত মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু নির্মাণ ভাঙার কাজ শুরু করা যায়নি। উত্তরাখণ্ড সরকার জানিয়েছে, মনোহর বাগ, সুনীল, মারওয়াড়ি এবং সিংহদ্বার— এই চারটি পুরসভা এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। এই এলাকার বাসিন্দাদের ৯০ কিলোমিটার দূরে গৌচরে একটি অস্থায়ী আস্তানায় পাঠানোর চেষ্টা করছে রাজ্য। কিন্তু বাসিন্দারা নিজেদের বাড়ি ছেড়ে যেতে রাজি নন।

Advertisement

এ ব্যাপারে ওই এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে পর পর বৈঠক হয়েছে প্রশাসনের। এলাকার সাধারণ মানুষের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, তাঁদেরকে বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাতে তাঁদের জীবনধারণ এবং জীবিকার সমস্যা হবে। জোশীমঠ হল বদ্রিনাথ, হেমকুণ্ড-সহ দেবভূমির বহু পর্যটনক্ষেত্র বা ট্রেকিং রুটের প্রবেশদ্বার। অনেকেরই জীবিকা এই পর্যটনের উপর নির্ভর। জোশীমঠের বাসিন্দাদের বক্তব্য, মন্দির শহরের মূল এলাকা থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে চলে গেলে তাঁদের ব্যবসা এবং জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আপাতত এই দোটানাতেই আটকে রয়েছে ডুবন্ত শহরের ভাগ্য। শহর ডুবলে জীবিকাও যে থাকবে না সেই সত্য এখনও উপলব্ধি করতে পারছেন না জোশীমঠের বাসিন্দারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement