নতুন বিতর্কে কানহাইয়া, হুমকির অভিযোগ ছাত্রীর

বিতর্ক কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না কানহাইয়া কুমারের। কিছুদিন আগেই আদালত চত্বরে জুটেছিল মার। আর আজ তাঁকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে জেএনইউয়েই পৌঁছে গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৬ ০৩:২৭
Share:

বিতর্ক কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না কানহাইয়া কুমারের।

Advertisement

কিছুদিন আগেই আদালত চত্বরে জুটেছিল মার। আর আজ তাঁকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে জেএনইউয়েই পৌঁছে গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। বহিরাগত এই যুবকটি কানহাইয়াকে চড় মারার চেষ্টা করে। তবে শেষপর্যন্ত সেই কাজে সফল হয়নি সে। নিরাপত্তারক্ষীরা তাকে আটকে দেয়। কিছুদিন আগেই কানহাইয়াকে যে ভাবে হুমকি দিয়েছে পূর্বাঞ্চল সেনা, তার পরে এই ধরণের ঘটনা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। এ সবের মধ্যেই যদিও ফের বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে কানহাইয়াকে নিয়ে। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ এনেছেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক প্রাক্তন ছাত্রী। ফেসবুকে তিনি দাবি করেছেন, তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে কানহাইয়াকে তিন হাজার টাকা জরিমানা পর্যন্ত করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নিজের দাবির স্বপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা ফেসবুকে পোস্ট করেন ওই ছাত্রী। যদিও এই নির্দেশিকা জাল বলে উড়িয়ে দিয়েছে কানহাইয়া শিবির। তাঁদের দাবি, এ সব বিরোধীরদের অপপ্রচার ছাড়া কিছু নয়।

চলতি বিতর্কের সূত্রপাত ফেসবুকে একটি পোস্টকে ঘিরে। সেখানে কমলেশ পরমেশ্বরী নামে জেএনইউয়ের এক প্রাক্তন ছাত্রী লেখেন, ‘‘অবাক করা কাণ্ড! কানাহাইয়া কুমার আন্তর্জাতিক নারী দিবস নিয়ে বক্তব্য রেখেছেন। অথচ, এই কানহাইয়াকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোর এক মহিলাকে হুমকি দেওয়া ও দুর্ব্যবহার করার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।’’ সেই অভিযোগকারিণী যে তিনিই ছিলেন, সে কথা ওই পোস্টে জানিয়ে ছাত্রীটি লিখেছেন, সে সময়ে এক মাসের বেতনের সমান (৩০০০ টাকা) জরিমানা দিয়েছিলেন জেএনইউয়ের ছাত্র নেতা।

Advertisement

পরমেশ্বরীর দাবি, ২০১৫ সালের ১০ জুন সকালে তিনি পূর্বাঞ্চল রোড দিয়ে জগিং করতে করতে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ে ব্রহ্মপুত্র হোস্টেলের বাসিন্দা কানহাইয়াকে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতে দেখেন। পরমেশ্বরীর অভিযোগ, তিনি কানহাইয়াকে বারণ করেছিলেন। কিন্তু এ কথা বলার পরেই কানহাইয়া তাঁর দিকে এগিয়ে আসেন। হুমকি দিয়ে বলেন যে পরমেশ্বরী একজন মানসিক রুগি। তাঁর মানসিক হাসপাতালে চলে যাওয়া উচিত। এটা কানহাইয়ার হোস্টেল এলাকা। তিনি এখানে যা খুশি তাই করতে পারেন। পরমেশ্বরীর অভিযোগ, এর পর তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন কানহাইয়া। অভিযোগ জানাতে পরে চিফ প্রক্টোরের দ্বারস্থ হন পরমেশ্বরী।

ফেসবুকে আপলোড করা জেএনইউয়ের নির্দেশিকা বলছে, এ ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত, জেএনইউয়ের চরিত্র বিরোধী। কিন্তু কানহাইয়ার ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাঁকে ৩০০০ টাকা ক্ষতিপূরণ ও সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ভবিষ্যতে এই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিষয়টি সামনে আসতে সুর চড়িয়েছে কানহাইয়া-বিরোধী শিবির। কানহাইয়ার প্রকৃত চেহারা ক্রমশ লোকের সামনে স্পষ্ট হচ্ছে বলে দাবি করেছেন এবিভিপি নেতৃত্ব। যদিও ওই নির্দেশিকার বিষয়টি মানতে চাইছেন না কানহাইয়া শিবির। ফেসবুকে পোস্ট করা নির্দেশিকায় কোনও সই বা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিল না থাকায় চিঠিটি জাল বলেই দাবি করছে তারা।

এ সব বিতর্কের মধ্যেই যদিও গবেষণা ও উদ্ভাবনী শক্তির জন্য আজ রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেয়েছে জেএনইউ। আর কানহাইয়াকে নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই আইআইএম থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন যিনি, সেই অধ্যাপক অমিত সেনগুপ্ত আজ জেএনইউয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, জেএনইউয়ে ছাত্ররা অতীতে কখনও হিংসা ছড়ায় নি। বরং এখানে ভাবনার লড়াই হয়েছে। এটাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য।

আরও পড়ুন...

জেএনইউতে ঢুকে কানহাইয়ার উপর হামলার চেষ্টা বহিরাগতর

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement