দশ দিনে পা দিল নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে (জেএনইউ) ছাত্রদের অনির্দিষ্টকালীন অনশন।
আন্দোলনের অন্যতম মুখ কানহাইয়া কুমার গত কালই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ওই ছাত্রনেতা। জেএনইউয়ের ছাত্র সংসদের তরফে লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, ক্যাম্পাসে ফিরলেও চিকিৎসকদের পরামর্শে অনশন ভেঙেছেন কানহাইয়া। তাঁকে অন্তত কয়েক দিন টানা বিশ্রাম নিতে বলেছেন চিকিৎসকেরা। কানহাইয়ার পাশাপাশি, ২৮ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এই অনশনে সামিল ছাত্রছাত্রীদের অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অসুস্থতার কারণে এখনও পর্যন্ত ছ’জন পড়ুয়া অনশন ভেঙেছেন বলে জানিয়েছে ছাত্র সংসদ। তবে তাতে আন্দোলন থামবে না বলে জানিয়েছেন ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিরা।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি জেএনইউ ক্যাম্পাসে আফজল গুরুর সমর্থনে স্লোগান তোলার অভিযোগে গ্রেফতার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্র কানহাইয়া, উমর খালিদ এবং অনির্বাণ ভট্টাচার্য। তবে জুতসই প্রমাণ না মেলায় দেশদ্রোহে অভিযুক্ত ওই তিন ছাত্র জামিনে ছাড়া পান। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির রিপোর্ট তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করে। কানহাইয়াকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এক সেমেস্টারের জন্য সাসপেন্ড করা হয় উমরকে। অনির্বাণ ১৫ জুলাই পর্যন্ত এবং আরও এক ছাত্র মুজিব ঘেটো দুটো সেমেস্টারের জন্য সাসপেন্ড হন। পাশাপাশি, আগামী ৫ বছর অনির্বাণ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও কোর্সে ভর্তি হতে পারবেন না বলে জানায় রিপোর্ট।
এই শাস্তির প্রতিবাদের ২৮ এপ্রিল থেকে শুরু হয় ছাত্রদের অনির্দিষ্ট অনশন। আন্দোলনকারীদের মতে, যে অভিযোগ সত্যি নয়, তার জন্য শাস্তি কীসের? এই শাস্তি মেনে নিলে পক্ষান্তরে স্বীকার করে নেওয়া হবে যে তাঁরা সত্যিই দোষী। পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে অনশন শুরু করেন ছাত্ররা।
কানহাইয়া অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাঁদের আন্দোলন যে থামবে না, আগেই স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন জেএনইউয়ের অনশনকারী ছাত্ররা।
অন্য দিকে, অনশনকারী আর এক ছাত্র উমরকে কলকাতার একটি আলোচনাসভায় আসার অনুমতি দিল দিল্লির একটি আদালত। ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত মিছিলে দেশবিরোধী স্লোগান দেওয়ায় অভিযুক্ত উমর গ্রেফতারির পর অন্তর্বর্তী জামিনও পান। তবে তখন আদালত জানায়, আদালতের অনুমতি ছাড়া দিল্লির বাইরে যেতে পারবেন না তিনি। বস্তারের আদিবাসীদের অধিকারের প্রশ্নে আয়োজিত একটি আলোচনাসভায় যোগ দেওয়ার কথা ছিল উমরের। ২০ থেকে ২৩ মে কলকাতার মুক্তাঙ্গন হলে আয়োজিত ওই আলোচনাসভায় আসার অনুমতি শেষ পর্যন্ত পেয়েছেন উমর।