কাসভের সঙ্গে একই জঙ্গি ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ হয়েছিল নাভেদের।—ফাইল চিত্র।
উচ্চতা পাঁচ ফুটের কাছাকাছি। ছোটখাটো চেহারা। নাভেদ জাটের সঙ্গে অনেকটাই মিল ২৬/১১ জঙ্গি হামলায় ধৃত জঙ্গি আজমল আমির কাসভের সঙ্গে। দু’জনই পাকিস্তানি। ঠান্ডা মাথায় খুনের ক্ষেত্রেও দু’জনের সমান কুখ্যাতি। কিন্তু শুধু চেহারা-চরিত্রেই নয়, এ বার দুই জঙ্গির মধ্যে আরও বড় সাযুজ্য ফাঁস করল পুলিশ। কাসভের সঙ্গে একই জঙ্গি ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ হয়েছিল নাভেদের। কাশ্মীর পুলিশের আইজি শ্যাম প্রকাশ পানি জানান, ২০১৪ সালে গ্রেফতারের পর নাভেদকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ এই তথ্য জানতে পারে।
এই নাভেদ জাট ‘রাইজিং কাশ্মীর’ পত্রিকার সম্পাদক শুজাত বুখারি হত্যাকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত। বুধবার সকালে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বদগাঁওয়ে অভিযান চালায় কাশ্মীর পুলিশ ও সেনার যৌথ বাহিনী। তাতেই এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় নাভেদের। নাভেদের মৃত্যুতে পুলিশ মহলে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। কাশ্মীর পুলিশের এক শীর্ষকর্তা মুনির আহমেদ বলেন, ‘‘এই ঘটনা বড় সাফল্য এবং স্বস্তি দিয়েছে।’’
আইজি শ্যাম প্রকাশ বলেন, ‘‘২০১২ সালে পাকিস্তান থেকে ভারতে ঢোকার আগে নাভেদ এবং কাসভ একই গ্রুপের সদস্য ছিল। একটি মাদ্রাসায় দু’জনকে একই সঙ্গে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। ২০১৪ সালে গ্রেফতারের পর তাকে জেরায় এই তথ্য পেয়েছিল কাশ্মীর পুলিশ।’’
আরও পড়ুন: করতারপুর করিডর ধরে শান্তির বার্তা, ‘ইয়ার দিলদার ইমরান’, বলে এলেন সিধু
২০১৪ সালে নাভেদকে গ্রেফতার করে কাশ্মীর পুলিশ। চার বছর হাজতবাস করার পর এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে শুজাত বুখারি হত্যার মাস চারেক আগে পালিয়ে যায় নাভেদ। শ্রীনগর সেন্ট্রাল জেল থেকে হাসপাতালে চেক আপের জন্য নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের গাড়িতে গুলি করে নাভেদকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় জঙ্গিরা। ঘটনায় দুই পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয়। এর পর বুধবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বদগাঁওয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। সেই অভিযানেই গুলিযুদ্ধে মৃত্যু হয় নাভেদের।
আরও পড়ুন: পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে ভারতের অংশ দেখাল চিনা সংবাদমাধ্যম
পুলিশ জানিয়েছে, কাসভের মতো নাভেদেরও মগজ ধোলাই করে জিহাদের পাঠ দেয় লস্কর জঙ্গিরা। নাভেদ সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জঙ্গি বাহিনীতে কিশোর যুবকদের নিয়োগ করার কাজও করত। একইসঙ্গে সে ছিল গা ঢাকা দেওয়ায় সিদ্ধহস্ত। বদগাঁওয়ের মতো অনেক জায়গাতেই বহু বার তার উপস্থিতির সূত্রে পেয়েছে পুলিশ। কিন্তু প্রতি বারই পুলিশের হাত ফস্কে পালিয়েছে। কিন্তু এ বার আর শেষরক্ষা হল না। কাসভের সঙ্গে এক ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ এবং চেহারা ও হিংস্রতায় অনেক মিলের মতোই দুই জঙ্গির পরিণতিও হল একই। ভারতে সন্ত্রাস চালাতে এসে মৃত্যু। কাসভের ফাঁসিতে। আর নাভেদের পুলিশের গুলিতে।
আরও পড়ুন: করতারপুর করিডর মানেই আলোচনা নয়, সার্কের আমন্ত্রণ ফিরিয়ে