আদিলের বাড়িতে। ছবি: রয়টার্স।
গত মাসে পুলওয়ামায় সিআরপি বাহিনীর কনভয়ে বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি নিয়ে ঢুকে গিয়েছিল তাঁরই ছেলের গাড়ি। আত্মঘাতী সেই জইশ জঙ্গি আদিল দারের বাবা স্পষ্ট জানালেন, দু’দেশ আলোচনার রাস্তায় না হাঁটলে এই ধরনের হামলা ভবিষ্যতে আরও ঘটতে পারে কাশ্মীরে। তাঁর ছেলের মতোই আরও অনেক কাশ্মীরি যুবক সন্ত্রাসবাদের পথে পা বাড়াতে পারে।
ত্রালের গুন্ডিবাগ এলাকায় থাকেন পঞ্চাশোর্ধ গুলাম হাসান দার। আনন্দবাজারকে ফোনে জানালেন, নিহত জওয়ানদের পরিবারের উপর দিয়ে কী ঝড় বইছে, তা তিনি বুঝতে পারছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ওঁদের পরিবারের কষ্টটা বুঝতে পারি। কারণ আমিও একই কষ্টের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি।’’ গুলামের বক্তব্য, একমাত্র শান্তি আলোচনাই কাশ্মীরি মানুষের সমস্যার সমাধান করতে পারে। সেই সঙ্গেই তাঁর সংযোজন, ‘‘দু’দেশের মধ্যে কথা না হলে আরও যুবক জঙ্গিদের দলে গিয়ে নাম লেখাবে।’’ আর সেটা যে তিনি চান না তা-ও জানালেন গুলাম। তবে তাঁর কথায়, ‘‘ভারত সরকার যদি পেশিশক্তির আস্ফালন ঘটায় তা হলে কোনও দিনই কাশ্মীরের সমস্যার সমাধান হবে না। শান্তির সঙ্গে আত্মসম্মান না থাকলেই ছেলেরা হাতে অস্ত্র তুলে নেবে।’’
আদিলের বাবা জানিয়েছেন, সেনার ‘অত্যাচারে’ অতিষ্ঠ হয়েই জইশে নাম লিখিয়েছিল তাঁর ছেলে। আদিলের এক সম্পর্কিত ভাই জঙ্গিদের দলে যোগ দিয়ে সেনার গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে। আর এক ভাইও জঙ্গি দলে যোগ দিয়েছে বেশ কিছু দিন হল। গুলামের কথায়, ‘‘এক বার স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে সেনা ওকে (আদিল) মাটিতে নাক ঘষতে বলেছিল। বাড়ি ফিরে খুব কেঁদেছিল ও। বলেছিলাম, এ সব কথা মনে না রাখতে। কিন্তু কথা শোনেনি। শুধু বলত, আজাদির জন্য কিছু একটা করতে হবে। এই অপমান নিয়ে এখানে বাঁচা যায় না।’’ ছেলেকে ফেরানোর অনেক চেষ্টা তঁরা করেছিলেন বলে জানিয়েছেন গুলাম। কিন্তু আদিল সেই রাস্তায় হাঁটেনি।