স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ চেয়ে কেরল হাই কোর্টের দ্বারস্থ মহিলা। —প্রতীকী চিত্র।
একাধিক স্ত্রীর ভরণপোষণের ক্ষমতা না-থাকলে মুসলিমদের একাধিক বিয়ে না-করাই শ্রেয়। সম্প্রতি এক মামলায় এমনটাই জানিয়েছে কেরল হাই কোর্ট। মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের ব্যক্তিগত আইন (শরিয়ত আইন)-এর ব্যাখ্যা করার সময় আদালতের পর্যবেক্ষণ, বহুবিবাহের প্রসঙ্গে একটি ভুল ধারণা রয়েছে। অনেকেই মনে করেন মুসলিমরা চাইলে একাধিক বিয়ে করতে পারেন। কিন্তু এটি ভুল ধারণা বলেই মত আদালতের।
কেরলের ৩৯ বছর বয়সি এক মহিলা স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণের খরচ চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। ভরণপোষণের জন্য স্বামীর কাছ থেকে মাসে ১০ হাজার টাকা করে চান তিনি। ওই মামলার শুনানি চলাকালীনই সম্প্রতি এই মন্তব্য করেছে হাই কোর্ট। মামলাকারী মহিলার স্বামী ভিক্ষা করে সংসার চালান। তিনি ওই ব্যক্তির দ্বিতীয় স্ত্রী। তাঁর স্বামী আরও একটি বিয়ে করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে আদালতে জানান ওই মহিলা। এ অবস্থায় হাই কোর্ট জানিয়েছে, আদালত একজন ভিক্ষুককে তাঁর স্ত্রীর ভরণপোষণের জন্য টাকা দিতে নির্দেশ দিতে পারে না। মামলাকারী মহিলা যাতে খাবার এবং আশ্রয় পান, সে বিষয়ে প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
তবে শরিয়ত আইনের একাধিক বিবাহ প্রথার ব্যাখ্যাও দিয়েছে আদালত। হাই কোর্ট জানিয়েছে, একজন মুসলিম পুরুষ চাইলেই একাধিক মহিলাকে বিয়ে করতে পারেন বলে মানুষের মনে একটি ভুল ধারণা রয়েছে। আদালত জানিয়েছে, বহুবিবাহ কেবল ব্যতিক্রম। কোনও ব্যক্তি প্রত্যেক স্ত্রীর সমান ভাবে দায়িত্ব নিতে না পারলে তাঁর একাধিক বিবাহ করা উচিত নয়।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বর্তমানে একটিই বিয়ের চল রয়েছে। ধর্মীয় নেতাদের কর্তব্য, যাঁরা এখনও একাধিক বিয়ে করেন, তাঁদের এ বিষয়ে আরও বেশি সচেতন করা। পাশাপাশি প্রশাসনকেও দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দিয়েছে হাই কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, যাঁরা মুসলিমদের জন্য আইনের মৌলিক নীতির বিষয়ে সম্যক জ্ঞান না রেখেই একাধিক বিয়ে করেন, তাঁদের পর্যাপ্ত কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা উচিত প্রশাসনের।