খাওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় মৃত্যু হয়েছে কেরলের ১৮ বছরের তরুণীর। ছবি: সংগৃহীত।
মোটা হয়ে যাওয়ার ভয়ে খাওয়া প্রায় বন্ধই করে দিয়েছিলেন ১৮ বছরের শ্রীনন্দা। না খেতে খেতে তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির এমন অবনতি হয়েছিল যে, হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। তবে তরুণীকে বাঁচানো গেল না। ‘ডায়েট’ করতে গিয়ে মৃত্যু হল তাঁর।
কেরলের কুথুপরম্বার বাসিন্দা শ্রীনন্দা। গত কয়েক দিন ধরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর ওজন খুব কমে গিয়েছিল। ফলে শরীরে নানা রকম জটিলতা তৈরি হয়। তরুণীর পরিবারের সদস্যেরা জানিয়েছেন, খাওয়া প্রায় বন্ধই করে দিয়েছিলেন তিনি। কেবল জল খেয়ে থাকতেন। অনলাইনে এই ধরনের ‘ডায়েট’-এর কথা জানতে পেরেছিলেন তিনি। মোটা হয়ে যাওয়ার ভয়ে ‘ডায়েট’ মেনে চলার চেষ্টা করেছিলেন। তার ফলেই এই বিপত্তি। গত পাঁচ থেকে ছ’মাস ধরে তিনি অত্যধিক দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন। বার বার হাসপাতালে নিয়ে যেতে হচ্ছিল।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শ্রীনন্দা অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসা রোগে ভুগছিলেন। এই রোগে আক্রান্ত হলে খাবারের প্রতি অনীহা তৈরি হয়। রোগী নিজের শারীরিক গঠন, ওজন এবং খাদ্যপ্রক্রিয়া সম্বন্ধে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। স্বাভাবিকের চেয়ে তাঁর ওজন কম হলেও তিনি মনে করতে শুরু করেন, তাঁর ওজন বাড়ছে। করোনা-পরবর্তী সময়ে এই রোগের প্রবণতা বেড়েছে বলেও জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
কেরলের একটি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন শ্রীনন্দা। পরিবার সূত্রে খবর, আচমকা খাওয়াদাওয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। পরিবারের সদস্যদের সে কথা বুঝতেও দেননি। বাবা-মা যে খাবার দিতেন, তা লুকিয়ে রাখতেন। হয় ফেলে দিতেন, নয়তো অন্য কাউকে দিয়ে দিতেন। নিজে খেতেন কেবল গরম জল। পাঁচ মাস আগে তাঁকে প্রথম দুর্বলতার কারণে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। চিকিৎসকেরা তাঁকে বেশি করে খেতে বলেছিলেন। মনোবিদের পরামর্শও নিতে বলেছিলেন। কিন্তু তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে দিন দিন। শেষ দিকে মাত্র ২৪ কিলোগ্রাম ওজন হয়েছিল শ্রীনন্দার। রক্তে শর্করার মাত্রা অত্যধিক কমে গিয়েছিল। তীব্র শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। ফলে আইসিইউতে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখতে হয়েছিল তাঁকে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।