খাদ্য উৎসবে ‘জাতীয় খাবার’-এর মর্যাদা পেতে চলেছে খিচুড়ি!

খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রক জানাচ্ছে, খিচুড়িকে গোটা বিশ্বে জনপ্রিয় করতে চায় তারা। ‘জনতার খাবার’ বার্গার-পাস্তা যদি বিশ্বজয় করতে পারে, তা হলে খিচুড়ি কেন নয়?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:২৭
Share:

থিচুড়ি ‘সুপারফুড’।

রসে-বশে ধীরে, চালে-ডালে ‘সুপারফুড’!

Advertisement

স্লোগানের ছাঁচে ফেললে ব্যাপারটা অনেকটা এ রকম। আগামী ৩ নভেম্বর দিল্লির বিজ্ঞান ভবন চত্বর ও ইন্ডিয়া গেটে চলবে খাদ্যোৎসব— ‘ওয়ার্ল্ড ফুড-২০১৭’। গোটা পঞ্চাশেক দেশ আসছে। ‘থিম’ নিউজিল্যান্ড। ভারতের ২৮ রাজ্যও আসছে নিজের নিজের সেরা খাবারের স্টল নিয়ে।

সেই উৎসবেই কপাল খুলছে কৌলীন্যহীন খিচুড়ির। পুজোর ভোগ থেকে বৃষ্টির দুপুর— ধোঁয়া ওঠা যে সোনালি সৃষ্টি পাতে না পড়লে সিংহভাগ বাঙালির প্রাণ আঁকুপাঁকু করে, খাদ্য উৎসবে সেই খিচুড়িকে ‘জাতীয় খাবার’ হিসেবে সম্মানিত করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

ভোজ-মেলার আগে অবশ্য পশ্চিমবঙ্গ আর ওডিশাকে মৃদু সতর্ক করেছে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়। বহুদিন ধরেই দুই রাজ্যের লেগেছে রসগোল্লা নিয়ে। দু’পক্ষেরই দাবি, তারাই রসগোল্লার জন্মভূমি। রসগোল্লার ভৌগোলিক তকমা (জিআই) চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ দুই রাজ্যই। এই অবস্থায় মোদীর অফিস বাংলা ও ওডিশাকে বলেছে— খাদ্য উৎসব চলাকালীন তারা যেন ‘রসগোল্লার আবিষ্কার’ নিয়ে কোনও বাড়াবাড়ি না করে।

রসগোল্লায় যখন যুদ্ধবিরতির ফরমান, তখন খাদ্য উৎসবে খিচুড়ি দেখা দিচ্ছে ‘সুপারফুড’ হয়ে। খিচুড়ি নানা রকমের। কিন্তু মোটের ওপর কেন্দ্র মনে করছে— সহজপাচ্য, আমজনতার এই খাবারে আছে সমস্ত খাদ্যগুণ। তাই খিচুড়িই হবে দেশের খাবারের ‘মুখ’। এ দেশে খিচুড়ির ইতিহাস বেশ পুরনো। অনেকের মতে, সংস্কৃত শব্দ ‘খিচ্চা’ থেকে ‘খিচুড়ি’ শব্দের আবির্ভাব। ভূ-পর্যটক ইবন বতুতা, এমনকী আলেকজান্ডারের সময়েও গ্রীক ইতিহাসবিদেরা দেখেছিলেন, ভারতীয়রা চাল ও ডাল মিশিয়ে খেতে পছন্দ করেন। যা সম্ভবত বর্তমান খিচুড়ির আদি রূপ।

আরও পড়ুন: বক্তৃতার ব্যাটিং গড়ে সকলকে পিছনে ফেলে দিয়েছেন মোদী

খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রক জানাচ্ছে, খিচুড়িকে গোটা বিশ্বে জনপ্রিয় করতে চায় তারা। ‘জনতার খাবার’ বার্গার-পাস্তা যদি বিশ্বজয় করতে পারে, তা হলে খিচুড়ি কেন নয়? এত দিন বিদেশিরা ভারতীয় খাবার মানেই ‘কারি’ বুঝতেন। এ বার খাদ্য উৎসবে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা যাতে সেখানেই হাতে-গরম ‘সুপারফুড’ চেখে দেখতে পারেন, তার জন্য অনুষ্ঠানের দিন ৮০০ কেজি খিচুড়ি বানাবে কেন্দ্র।

পরশু বিজ্ঞান ভবনে উৎসবের উদ্বোধন করবেন মোদী। এক কর্তার কথায়, ‘‘খিচুড়ি আমিষ না নিরামিষ, তা নিয়ে যেমন বিতর্ক নেই, তেমনই ভুলে যাবেন না প্রধানমন্ত্রীও খিচুড়ি খুব ভালবাসেন।’’

‘সুপারফুড’ বলে কথা!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন