সম্মান: বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠকের মঞ্চে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে লালকৃষ্ণ আডবাণী, অমিত শাহ, সুষমা স্বরাজ। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে। পিটিআই
সংসদের পাঠাগার ভবনের অডিটোরিয়ামে ঢুকেই হতবাক বিজেপির সাংসদরা!
মঞ্চে সাজানো সাতটি চেয়ার। গত চার বছরে শেষ কবে এমন সাজানো মঞ্চ দেখেছেন, মনে করতে পারছেন না অনেকেই। সংসদ চললে প্রতি মঙ্গলবার সকালে বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠক হয়। কিন্তু মঞ্চ খালি থাকে। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের বলতে হলে মাইক হাতে বলেন। সকলে নীচেই বসেন।
অবাক হওয়ার পালা তখনও শেষ হয়নি বিজেপির অনেক সাংসদের। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ পৌঁছতেই মঞ্চে একে একে ডাকা হল লালকৃষ্ণ আডবাণী, সুষমা স্বরাজ, রাজনাথ সিংহ, নিতিন গডকড়ীকে। গত লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির এই নেতারা মোদীর বিপক্ষেই ছিলেন। এখনও নানাভাবে মোদী বিরোধিতায় সক্রিয় হচ্ছেন। আর এঁদের অনেকেরই তারিফ করেন রাহুল গাঁধী থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মোদী আসতেই সংসদীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমার হঠাৎই একটি পেল্লাই ফুলের মালা ধরিয়ে দিলেন আডবাণী ও সুষমার হাতে। চিত্রনাট্য এমনটাই সাজানো ছিল। বললেন, মোদীকে মালা পরিয়ে দিতে। দলের অনুগত সৈনিক হিসেবে আডবাণী-সুষমারা তা করলেনও। অমিত শাহের হাতে দেওয়া হল লাড্ডুর বাক্স। সেখান থেকে মোদীকে লাড্ডু খাওয়ালেন অমিত।
কারণ? নরেন্দ্র মোদী অনাস্থা ভোট জিতে এসেছেন। উগান্ডাতেও তাঁর তারিফ হচ্ছে। ক’দিন আগেই মোদী যখন গিয়েছিলেন। তাই এই উৎসব। বাকি নেতাদের দিয়ে তো বলানো হলই, এমনকি মোদী নিজেও নিজের জয়গান গাইলেন। বললেন, ‘‘পরিস্থিতি কিংবা সংখ্যার জোর না থাকলেও বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে। তাই ফায়দা হয়েছে বিজেপিরই। বিরোধীদের দ্বিগুণ ধন্যবাদ প্রাপ্য। কারণ, এর ফলে সরকারের চারে সাড় বছরের সাফল্য তুলে ধরা সম্ভব হয়েছে।’’ নিজের সাজানো চিত্রনাট্যে নিজের সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে মোদী অবশ্য অনাস্থা জয়ের কৃতিত্ব তুলে দিলেন দলের সব সাংসদের উপর।
সকাল সকাল বিজেপির বন্ধঘর বৈঠকে এমন কাণ্ডের কথা শুনে কংগ্রেসের এক নেতা বললেন, ‘‘ঠেলার নাম বাবাজি। মোদী বুঝতে পারছেন, তাঁর জনপ্রিয়তা শুধু দেশে নয়, দলের মধ্যেও কমছে। তাই দলের সামনেও নিজের ঢাক নিজেকেই পেটাতে হচ্ছে। আর ভোটের আগে যে নেতারা ফের ফোঁস করতে পারেন, তাঁদেরও সঙ্গে রাখতে চাইছেন।’’
বৈঠক শেষে বিজেপি সাংসদদের অনেকে হাসাহাসি করছেন। কিন্তু তাঁদের মুখে কুলুপ।