Lakhimpur Kheri

ধর্ষকদের বিয়ে করতে বলেছিল লখিমপুর খেরির নির্যাতিতারা, সেই ‘অপরাধে’ই শ্বাসরোধ করে খুন!

ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, করিমুদ্দিন এবং আরিফ দুই বোনকে গলা টিপে খুন করেন। তার পর পাঁচ জন মিলে গলায় ফাঁস লাগিয়ে গাছে ঝুলিয়ে দেন যাতে দেখে মনে হয় দুই কিশোরী আত্মহত্যা করেছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লখিমপুর খেরি শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:৩১
Share:

এই আখ ক্ষেত থেকে উদ্ধার হয় দুই কিশোরীর দেহ।

ধর্ষকদের বিয়ে করতে বলেছিল নির্যাতিতা দুই বোন। আর সেই রাগেই ধর্ষকরা ওড়না দিয়ে দুই কিশোরীকে শ্বাসরুদ্ধ করে খুন করেছে। উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরির ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় যখন তোলপাড় চলছে গোটা উত্তরপ্রদেশে, সেই সময় এমনই দাবি করলেন জেলার পুলিশ সুপার সঞ্জীব সুমন।

Advertisement

তিনি বলেন, “জেরায় অভিযুক্তরা জানিয়েছেন, দুই বোন তাদের বিয়ে করার জন্য জোরাজুরি করছিল। তখন রাগের বশে গলা টিপে খুন করেন তাঁরা। তার পর ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে গাছে ঝুলিয়ে দেন।”

এই ঘটনায় মোট ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তরা হলেন, ছোটু, জুনেইদ, সোহেল, হাফিজুল করিমুদ্দিন এবং আরিফ। তাঁদের মধ্যে ছোটু ওই কিশোরীদের পড়শি। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, জুনেইদ, সোহেল এবং হাফিজুলের সঙ্গে দুই কিশোরীর পরিচয় করিয়ে দেন ছোটু। জুনেইদ, সুহেল এবং হাফিজুল কিশোরীদের পাশের গ্রামের লালপুরে বাসিন্দা। এই তিন জনই ধর্ষণ করেন কিশোরীদের। তার পর তাঁরা করিমুদ্দিন এবং আরিফকে ফোন করে ডেকে আনেন।

Advertisement

ধর্ষণের ঘটনার পাঁচ অভিযুক্ত।

ধৃতদের জেরা করে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে যে, করিমুদ্দিন এবং আরিফ দুই বোনকে গলা টিপে খুন করেন। তার পর পাঁচ জন মিলে নির্যাতিতাদের গলায় ফাঁস লাগিয়ে গাছে ঝুলিয়ে দেন যাতে দেখেই মনে হয় দুই কিশোরী আত্মহত্যা করেছে।

কিশোরীর মায়ের দাবি, বুধবার বিকেল ৪টের সময় তাঁর দুই মেয়েকে বাইকে করে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান দুই যুবক। তিনি আটকানোর চেষ্টা করলে পেটে লাথি মেরে ফেলে দেওয়া হয়। তাঁর কথায়, “আমার চিৎকার শুনে গ্রামবাসীরা যুবকদের পিছনে ধাওয়া করেন। কিন্তু নাগাল পাননি। সন্ধ্যাবেলায় গ্রাম থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে আখ ক্ষেতে দুই মেয়ের ঝুলন্ত দেহ মেলে। ধর্ষণের পর খুন করে আমার মেয়েদের ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।” কিশোরীর বাবা বলেন, “বুধবার আমি বাড়ি ফিরে কাউকে দেখতে না পেয়ে পড়শিদের জিজ্ঞাসা করে ঘটনার কথা জানতে পারি। তার পরই আখ ক্ষেতে গিয়ে আমার মেয়েদের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পাই। আমার মেয়েদের যারা মেরেছে তাদের ফাঁসি চাই।”

কিশোরীর মা-বাবা মেয়েদের অপহরণের দাবি করলেও পুলিশ সুপার কিন্তু সেই দাবি খারিজ করেছেন। তিনি বলেন, “বুধবার বিকেলে তিন যুবক সুহেল, হাফিজুল এবং জুনেইদ বাইকে করে নিঘাসন গ্রামে যান। দুই বোনকে কথার জালে ফাঁসিয়ে প্রথমে ক্ষেতে নিয়ে যান। তার পর ধর্ষণ করেন।”

পরিবারের উপস্থিতিতে কিশোরীদের ময়নাতদন্ত হয়েছে। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনার পর উত্তাল হয় লখিমপুর খেরি। প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন স্থানীয়রা।

রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে বলেছেন, “অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেবে সরকার যে, এ ধরনের কাজ করতে আগামী প্রজন্মের আত্মা কেঁপে উঠবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন