Tejaswi yadav

‘ইডির টানা জিজ্ঞাসাবাদে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী অসুস্থ’! সিবিআই তলব করলেও গেলেন না তেজস্বী

শুক্রবার তেজস্বীর দিল্লির বাড়ির পাশাপাশি পটনা, মুম্বই, রাঁচীতে লালু পরিবারের একাধিক সদস্য এবং পরিজনেদের মোট ২৪টি ঠিকানায় তল্লাশি অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছে ইডি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৩ ১৪:৪৬
Share:

ইডির ১২ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদে তেজস্বীর স্ত্রী রাজশ্রী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি বলে অভিযোগ। ফাইল চিত্র।

এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর টানা ১২ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদের ধকলে তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে আরজেডি নেতা তথা বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের অভিযোগ। হাসপাতালে ভর্তি স্ত্রীকে দেখাশোনার জন্যই তিনি শনিবার সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে পারেননি বলে লালু-পুত্রের ঘনিষ্ঠ মহলের তরফে জানানো হয়েছে।

Advertisement

‘জমির বিনিময়ে চাকরি’ মামলায় তেজস্বীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে নোটিস পাঠিয়েছিল সিবিআই। শনিবার তাঁকে দিল্লির সিবিআই দফতরে তলব করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি হাজির হননি। রেলে অবৈধ নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের খোঁজ পেতে শুক্রবার তেজস্বীর দিল্লির বাড়ি-সহ ২৪টি ঠিকানায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সে সময় বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী রাজশ্রীকে প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে বসিয়ে রেখে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে অভিযোগ। ধকল এবং রক্তচাপের সমস্যার কারণে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান এবং হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় বলে শনিবার আরজেডির তরফে জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহে এই মামলায় আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ এবং তাঁর স্ত্রী তথা বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ী দেবী এবং কন্যা মিসা ভারতীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। তার আগে লালু এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের একাধিক ঠিকানায় তল্লাশিও চালানো হয়েছিল। এ বার দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা ‘নিশানা’ করেছে লালু-রাবড়ীর পুত্র তেজস্বীকে। কংগ্রেস-সহ একাধিক বিরোধী দল ইতিমধ্যেই এই ঘটনা নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’র অভিযোগ তুলেছে।

Advertisement

‘জমির বিনিময়ে চাকরি’ মামলায় লালু, রাবড়ী-সহ মোট ১৬ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সমন জারি করেছিল দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। সিবিআইয়ের পেশ করা চার্জশিটের ভিত্তিতে আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে লালুদের জবাব তলব করা হয় ওই সমনে। ঘটনাচক্রে, তার পরেই নতুন করে ‘সক্রিয়তা’ শুরু করেছে সিবিআই এবং ইডি।

অসুস্থ লালু এবং তাঁর কন্যা মিসাকে গত মঙ্গলবার এই মামলায় সিবিআই টানা ৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। সোমবার পটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল রাবড়ীকে। গত রবিবার সিবিআই এবং ইডির মতো সংস্থাকে অপব্যবহার করার অভিযোগ তুলে মোদীকে চিঠি দিয়েছিলেন তেজস্বী-সহ ৯ জন বিরোধী নেতানেত্রী। তার পরই রাবড়ীর বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। সিবিআই-ইডির এই নতুন সক্রিয়তা প্রসঙ্গে তেজস্বী বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাগুলি এখন বিরোধীদের বিরুদ্ধে বিজেপির প্রধান অস্ত্র।’’

প্রসঙ্গত, লালু প্রথম ইউপিএ সরকারের রেলমন্ত্রী থাকাকালীন (২০০৪-০৯) বিহারের বহু যুবককে জমির বিনিময়ে রেলের ‘গ্রুপ ডি’ পদে নিয়োগ করা হয়েছিল বলে অভিয়োগ ওঠে। এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল লালুর স্ত্রী তথা বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ী দেবী এবং তাঁদের দুই কন্যা মিসা এবং হেমার বিরুদ্ধে। ঘটনার তদন্তে গত বছরের ২০ মে সিবিআই পটনা, দিল্লি-সহ দেশের মোট ১৫টি জায়গায় সিবিআই তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল। এর পর অগস্টে অভিযান চালানো হয় আরজেডির একাধিক নেতার বাড়িতে।

গত ২২ অক্টোবর ‘জমির বদলে চাকরি’ দুর্নীতি মামলায় চার্জশিট পেশ করে সিবিআই। লালু, রাবড়ী এবং তাঁদের দুই কন্যা মিসা ভারতী এবং হেমা যাদবের নামও রয়েছে। এ ছাড়াও আরও ১২ জনের নাম রয়েছে চার্জশিটে। সিবিআইয়ের তরফে দাবি করা হয়, লালুপ্রসাদ রেলমন্ত্রী থাকার সময় বিভিন্ন ‘অযোগ্য’ ব্যক্তিকে মুম্বই, জব্বলপুর, কলকাতা-সহ রেলের বিভিন্ন জ়োনে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়। অবৈধ উপায়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা টাকা বা জমি নিয়েছিলেন লালুর পরিবার এবং ঘনিষ্ঠ নেতারা। অন্য দিকে ইডির দাবি, শুক্রবার তেজস্বীর দিল্লির বাড়ি-সহ লালুর পরিজনেরদের ২৪টি ঠিকানায় তল্লাশি চালিয়ে নগদ ৭০ লক্ষ টাকা, দু’কিলোগ্রাম সোনা এবং ৯০০ আমেরিকান ডলার উদ্ধার করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন