শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে যাঁরা মুখর, তাঁদের উপর কড়া নজর রাখছে কেন্দ্র। চার বছরে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে যে সাংবাদিক, সাহিত্যিক, অভিনেত্রী, বুদ্ধিজীবীরা মুখ খুলেছেন, তাঁদের সতর্ক করে দিলেন প্রশান্ত পটেল উমরাও। যিনি পেশায় আইনজীবী হলেও, রাজনৈতিক ভাবে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত।
নজরে কারা রয়েছেন সেই তালিকাও নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে দিয়েছেন প্রশান্ত। তালিকায় রয়েছেন অরুন্ধতী রায়, অপর্ণা সেন থেকে যোগেন্দ্র যাদব, বরখা দত্ত। ৪৯ জনের নাম করেছেন প্রশান্ত। তাঁর দাবি, এঁদের উপর কেন্দ্র নজর রাখছেন। কারণ, এঁরা ভারত-বিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত। এঁদের লেখা, বক্তব্য বা টুইট কাশ্মীরে অস্থিরতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। যার ফায়দা লোটে পাকিস্তান। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক অবশ্য এ ধরনের কোনও তালিকার কথা উড়িয়ে দিয়েছে। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে প্রশান্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছে মন্ত্রক।
প্রশান্ত সম্পর্কে আজ অবশ্য কোনও মন্তব্য করেননি বিজেপির কোনও নেতা। তবে অমিত শাহ কাল সোশ্যাল মিডিয়ার লোকজনদের নিয়ে লোকসভা নির্বাচনের জন্য কী ভাবে ঝাঁপানো হবে, তার মন্ত্র দিয়েছেন। প্রশান্ত নিজে সেই বৈঠকে ছিলেন। তা ছাড়া, মাওবাদী ও জঙ্গিদের মানবাধিকার প্রশ্নে সরব, শাসক-বিরোধী বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা নিয়ে বিজেপি দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন তুলে আসছে। আজও বিজেপি নেতা অরুণ জেটলি নিজের ব্লগে লেখেন, ‘‘অধিকাংশ মানবাধিকার সংগঠনগুলি চালাচ্ছেন অতি-বামপন্থী কিছু ব্যক্তি। যাঁরা আসলে নিষিদ্ধ সংগঠনগুলির প্রকাশ্য মুখ। এঁরা জঙ্গি বা মাওবাদীদের মানবাধিকারের প্রশ্নে সরব। অথচ, সন্ত্রাসের শিকার হওয়া নিরীহ মানুষ বা নিরাপত্তারক্ষীদের মৃত্যুতে চোখের জলও ফেলেন না।’’ জেটলির দাবি, ‘‘কংগ্রেস নীতিগত ভাবে জঙ্গি ও মাওবাদীদের বিপক্ষে। অথচ, জেএনইউ বা হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারত-বিরোধী আওয়াজ তোলা শক্তির সঙ্গে হাত মেলাতে রাহুল গাঁধীর কোনও আপত্তি হয় না।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘আপ ও তৃণমূলের মতো দলগুলি নিজেদের রাজনৈতিক লাভের জন্য দেশবিরোধী শক্তির সঙ্গে হাত মেলাতেও পিছপা হয় না।’’
কংগ্রেসের দিল্লির নেতা পবন খেরা এই টুইট প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘একজন সাধারণ নাগরিকের কাছে সরকারের তথ্য কী করে আসে? আর সরকারের মতের সঙ্গে কারও অমিল হলেই তাঁকে সরাসরি ভারত-বিরোধী আখ্যা দেওয়া কেনই বা হবে? শুধুমাত্র ভয় পাওয়ানোর জন্যই এমন কাজ করা হয়েছে। যে তালিকা দেখানো হচ্ছে, তাতে কারও সইও নেই।’’