লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলী মনোহর জোশীদের মতো প্রবীণ নেতারা ভোটে লড়বেন কি না, তা তাঁদের উপরেই ছেড়ে দিতে চান বিজেপি নেতৃত্ব। শুক্রবার রাতে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের নেতৃত্বে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলা বিজেপি সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ৭৫ বছরের বেশি বয়সের নেতারা ভোটে লড়তে পারবেন। কিন্তু দল এবং সরকারে তাঁদের কোনও পদ দেওয়া হবে না।
নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পরেই একটি অঘোষিত নিয়ম চালু হয়েছিল যে, ৭৫ বছরের উপরের নেতাদের কোনও পদ দেওয়া হবে না। ক্ষমতায় এসেই আডবাণী, জোশীদের নিয়ে একটি ‘মার্গ দর্শক মণ্ডলী’ গঠন করা হয়। বলা হয়েছিল, বিজেপির সব বড় সিদ্ধান্তে ওই প্রবীণ নেতাদের মতামত নেওয়া হবে। কিন্তু গত পাঁচ বছরে
এই মণ্ডলীর একটিও বৈঠক হয়নি। প্রবীণদের থেকে পরামর্শ নেওয়া তো দূরস্থান। ফলে এ বার ভোটের আগে এই নেতারা প্রার্থী হতে পারবেন কি না, সেই প্রশ্ন আবার উঠে আসছিল দলের মধ্যে।
আরও পড়ুন: জোট প্রশ্নে প্রিয়ঙ্কা থমকে, সরব সিন্ধিয়া
আডবাণীর বয়স এখন ৯১ বছর। জোশীর ৮৫। স্পিকার সুমিত্রা মহাজন আগামী এপ্রিলে ৭৫ পার করবেন। এ ছাড়াও কলরাজ মিশ্র, শান্তা কুমার, হুকুমদেব নারায়ণ যাদব, ভগৎ সিংহ কোশিয়ারি, ভুবন চন্দ্র খান্ডুরি, কারিয়া মুন্ডার মতো ডজন খানেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা বিজেপিতে রয়েছেন, যাঁদের বয়স ৭৫ পেরিয়ে গিয়েছে।
বিজেপির এক নেতা অবশ্য বলছেন, ‘‘দল যদিও প্রবীণদের ভোটে লড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কিন্তু কর্মক্ষম নন এমন নেতারা যাতে না লড়েন, সেই বার্তাই পাঠানো হবে। তারপরেও যদি কোনও নেতা ভোটে লড়ার জেদ ধরে বসেন, তখন তা আলোচনা সাপেক্ষ। এই নেতার কথায়, ‘‘৯১ বছরের আডবাণী নিশ্চয় আগের মতো ভোট প্রচার করতে পারবেন না।’’
বিজেপির তরফে এখনও প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা না হলেও মোটামুটি ভাবে ঠিক আছে যে, নরেন্দ্র মোদী বারাণসী থেকেই লড়বেন। আর কোন কোন সাংসদকে ফের টিকিট দেওয়া হবে, তা ঠিক হবে কাজের মূল্যায়নের ভিত্তিতে। গত পাঁচ বছরে তাঁরা কেমন কাজ করেছেন, জনপ্রিয়তা কত, সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয়তা কেমন— এই সমস্ত কিছু নজরে রেখেছেন মোদী, শাহ। নমো অ্যাপের মাধ্যমেও প্রধানমন্ত্রী সমীক্ষা করিয়েছেন। এ ছাড়া দলীয় সংগঠনের তরফ থেকে নিয়মিত ফিডব্যাক তো রয়েইছে। আছে জাতপাতের সমীকরণও।
তবে বিজেপি এ বার সমাজের কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তিকেও টিকিট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত ক্রিকেটার, ইঞ্জিনিয়ার, চিকিৎসক, চিত্রতারকা যেমন রয়েছেন, তেমনই কয়েক জন অবসর নেওয়া সেনা আধিকারিককেও টিকিট দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।