রবিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। ছবি: ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।
দেশবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বর্তমানে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন বিদেশি পণ্য জুড়ে গিয়েছে। এর থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে। আমাদের ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ পণ্য কিনতে হবে। প্রতিটি বাড়িকে স্বদেশি পণ্যের প্রতীক বানাতে হবে, প্রতিটি দোকানকে স্বদেশি পণ্যে সাজাতে হবে।” গর্বের সঙ্গে স্বদেশি পণ্যের কেনাবেচা করার আহ্বান জানান তিনি। প্রতিটি রাজ্যে স্বদেশি পণ্যের উৎপাদনের গতি আরও বৃদ্ধি করার জন্যও রাজ্য সরকারগুলিকে পরামর্শ দেন তিনি। বিনিয়োগের জন্য পরিবেশ তৈরি করারও পরামর্শ দেন তিনি। মোদী বলেন, “কেন্দ্র এবং রাজ্য একসঙ্গে এগোলে, তবেই আত্মনির্ভর ভারতের স্বপ্ন পূরণ হবে।”
স্বদেশি পণ্যের ব্যবহার আরও বৃদ্ধি করার জন্য আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “ভারত যখন উন্নয়নের শিখরে ছিল, তখন দেশের অর্থব্যবস্থার মূল ভিত্তি ছিল ক্ষুদ্র-মাঝারি-কুটির শিল্প। ভারতে তৈরি পণ্যের মান অত্যন্ত ভাল হত। সেই গৌরবময় অধ্যায়কে পুনরুদ্ধার করতে হবে।” প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশীয় পণ্যের মান এমন হবে, যা গোটা বিশ্বের ভারতের গৌরব বৃদ্ধি করবে। সেই লক্ষ্যকেই দেশবাসীকে এগোতে হবে। তিনি বলেন, “দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন যেমন স্বদেশি মন্ত্রে শক্তি পেয়েছে, তেমনই দেশের উন্নতিতেও স্বদেশি মন্ত্রই শক্তি জোগাবে।”
প্রধানমন্ত্রী জানান, সময়ের দাবি মেনে, সব পক্ষের মতামত শুনে, নতুন প্রজন্মের জন্য নতুন জিএসটি কাঠামো উপহার দেওয়া হচ্ছে নবরাত্রিতে। এ প্রসঙ্গে খাদ্যপণ্য, ওষুধ, সাবান, জীবনবিমা, স্বাস্থ্যবিমা-সহ অন্য বেশ কিছু পণ্য ও পরিষেবার কথা উল্লেখ করেন মোদী। তিনি জানান, এগুলির মধ্যে অনেকগুলিই সম্পূর্ণ করমুক্ত হয়ে যাচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে কর কমিয়ে পাঁচ শতাংশ করে দেওয়া হয়েছে।
জাতির উদ্দেশে মোদী জানান, দেশকে আত্মনির্ভর করার দিকে সোমবার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করা হবে। তিনি বলেন, আগামিকাল থেকে দেশবাসীর সাশ্রয় শুরু হবে। এর ফলে দেশবাসীর সঞ্চয় বৃদ্ধি পাবে এবং অনেক পণ্য সস্তা হয়ে যাবে। এর ফলে দেশবাসী নিজেদের পছন্দ মতো জিনিস সহজেই কিনতে পারবেন। জিএসটির এই ‘সাশ্রয় উৎসব’ দেশের সর্বস্তরের মানুষকে সুবিধা দেবে বলে জানান মোদী।
দেশবাসীকে নবরাত্রির শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি জানান, ২২ সেপ্টেম্বর, নবরাত্রির প্রথম দিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন প্রজন্মের পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) কার্যকর হয়ে যাবে।
রবিবার বিকেল ৫টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কী নিয়ে তিনি বার্তা দেবেন, তা নিয়ে সরকারি ভাবে এখনও কোনও ঘোষণা করা হয়নি। সোমবারই জিএসটির নতুন কাঠামো কার্যকর হচ্ছে। তার আগে জাতির উদ্দেশে মোদীর ভাষণের সিদ্ধান্তে জল্পনা তৈরি হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, জিএসটি নিয়ে কোনও বার্তা দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। তবে তা এখনও নিশ্চিত নয়।
জিএসটি কাঠামো সংস্কারের মাধ্যমে দেশের পণ্য ও পরিষেবা কর দু’টি স্তরে নামিয়ে এনেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর আগে ৫, ১২, ১৮ এবং ২৮ শতাংশ হারে জিএসটি নেওয়া হত। এখন থেকে কর নেওয়া হবে শুধু দু’টি হারে— ৫ শতাংশ এবং ১৮ শতাংশ। ১২ এবং ২৮ শতাংশের স্তর দু’টি তুলে দেওয়ার ফলে সোমবার থেকে অনেক নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমতে চলেছে।
সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর থেকে দেশ জুড়ে চালু হতে চলেছে পণ্য ও পরিষেবা করের (জিএসটি) নতুন কাঠামো। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ আগেই সে কথা ঘোষণা করেছিলেন। তার ঠিক আগের দিন বিকেলে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।