অশোক চহ্বাণ। —ফাইল চিত্র।
দলত্যাগের কথা ভাবছেন মহারাষ্ট্রের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক চহ্বাণ! একটি ভাইরাল অডিয়ো ক্লিপে তাঁকে এ রকমই বলতে শোনা গিয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই অডিয়ো ক্লিপ আনন্দবাজারের হাতে পৌঁছয়নি। তাই তার সত্যতা যাচাই করাও সম্ভব হয়নি আনন্দবাজারের পক্ষে।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, অডিয়ো ক্লিপটা অশোক চহ্বাণ এবং চন্দ্রপুরের এক কংগ্রেস কর্মীর মধ্যে টেলিফোনিক কথাবার্তা। শনিবার এই অডিয়ো ক্লিপ সামনে এসেছে। তাতে চহ্বাণকে বলতে শোনা যায়, তিনি ‘দল থেকে পদত্যাগ করার’ কথা চিন্তাভাবনা করছেন। যে দলীয় কর্মীর সঙ্গে কথা বলতে শোনা গিয়েছে চহ্বাণকে, তিনি নিজের পরিচয় রাজুরকার বলে দিয়েছেন অডিয়োতে। এখনও এ নিয়ে কংগ্রেস প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য না করলেও, লোকসভা নির্বাচনের আগে চহ্বাণের এই অডিয়ো ক্লিপ তাদের পক্ষে যে খুবই অস্বস্তিকর, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
রাজুরকারকে বলতে শোনা যায়, চন্দ্রপুরে বিধায়ক বালু ধানোরকারকে প্রার্থী করা হলে ‘নিশ্চিত জয়’ হত কংগ্রেসের। এর পর চহ্বাণ রাজুরকারকে বলেন, ‘আমিও এই ব্যাপারে আপনার সঙ্গে রয়েছি। কিন্তু এখানে কেউই আমার কথা শুনছে না। আপনি ওয়াসনিক (কংগ্রেস নেতা মুকুল ওয়াসনিক)-এর সঙ্গে কথা বলেছেন। আমিও দলত্যাগের কথাই ভাবছি।’ অডিয়োতে দু’জনের কথাবার্তাতে স্পষ্ট, ধানোরকারকে চন্দ্রপুরে প্রার্থী করার পরিকল্পনা ছিল চহ্বাণের।
আরও পড়ুন: ‘দিল্লির চাপে আমার স্ত্রীকে নিয়ে মিথ্যা খবর ছড়াচ্ছে’, সাংবাদিক বৈঠকে বললেন অভিষেক
ঔরঙ্গাবাদের বিধায়ক আব্দুল সাত্তারকে টিকিট না দিয়ে এই আসনের টিকিট দেওয়া হয়েছে অন্য একজনকে। এই বিষয়ে আগে সাত্তারও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এমনকি প্রয়োজনে তিনি নির্দল প্রার্থী হয়ে লড়বেন বলেও জানিয়েছিলেন। অডিয়োতে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি চহ্বাণকেও সেই বিষয় নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করতে শোনা গিয়েছে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
অডিয়ো ক্লিপের প্রসঙ্গে চহ্বাণ কী বলছেন? এমন কিছু ঘটেছে বলে তাঁর কানেই আসেনি বলে জানিয়েছেন চহ্বাণ। তবে মহারাষ্ট্রে যে আসন সমঝোতা নিয়ে চন্দ্রপুরের নেতাদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে তা মেনে নিয়েছেন তিনি। বলেন, ‘‘অডিয়ো ক্লিপের ব্যাপারে আমি কিছু শুনিনি। তবে এটা স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, চন্দ্রপুরের নেতাদের মধ্যে টিকিট পাওয়া নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। কী ভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায় তা দেখছি।’’ আর সাত্তারের মন্তব্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচনের আগে এ রকম ঘটনা ঘটে। সবটাই খুব তাড়াতাড়ি মিটিয়ে ফেলা হবে।’’
২০১০ সালে আদর্শ হাউজিং কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত হয়ে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি ছাড়তে হয়েছিল চহ্বাণকে। তারপর অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করে দেয় বম্বে হাইকোর্ট। মুখ্যমন্ত্রীর গদি থেকে সরালেও কংগ্রেস চহ্বাণকে কখনওই দলের মধ্যে কোণঠাসা করার চেষ্টা করেনি। এই মূহূর্তে তিনি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও সাংসদ।