(বাঁ দিকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় বর্মাকে ফের ডেকে পাঠাল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকে তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। এই নিয়ে গত ১০ দিনের মধ্যে দ্বিতীয় বার প্রণয়কে ডেকে পাঠাল মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক ডেকে পাঠিয়েছিল তাঁকে। এ বার ফের মঙ্গলবার সকালে ডেকে পাঠানো হল।
কী কারণে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে ফের ডেকে পাঠানো হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে গত কয়েক দিনে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েন ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে বাংলাদেশে বেশ কিছু ভিসা-কেন্দ্র সম্প্রতি বন্ধ রাখে ভারত। সোমবার এক রাতের মধ্যে ভারতে তিনটি ভিসা-কেন্দ্র বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশও। ঠিক তার পরের দিন সকালেই ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে ঢাকার বিদেশ মন্ত্রকে ডেকে পাঠানোয়, ঘটনার গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
সম্প্রতি ঢাকায় ভারতীয় ভিসা আবেদনকেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নয়াদিল্লি। তার পরে আরও দুই শহর রাজশাহী এবং খুলনাতেও ভারতীয় ভিসা আবেদনকেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় চট্টগ্রামে ভারতীয় ভিসা-কেন্দ্রও। বাংলাদেশের কিছু নেতার ভারতবিরোধী মন্তব্য, ভারতের কূটনৈতিক দফতরে অভিযানের ফলে ভারতীয় হাইকমিশন এবং উপহাইকমিশনগুলির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দানা বাঁধে। তার পরে বাংলাদেশের তরুণ নেতা ওসমান হাদির মৃত্যুর পরে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। নিরাপত্তাজনিত কারণেই ভিসা-কেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত।
উদ্ভূত এই পরিস্থিতির মাঝে ময়মনসিংহে যুবক হত্যার প্রতিবাদে দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনের কাছে বিক্ষোভ হয়। রবিবার তা নিয়ে একটি বিবৃতিও প্রকাশ করে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। নয়াদিল্লির তরফে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, ওই ঘটনাকে বাংলাদেশের কিছু সংবাদমাধ্যমে অতিরঞ্জিত করে দেখানো হয়েছে। ভারত সরকার জানিয়েছে, বিক্ষোভ হলেও বিক্ষোভকারীরা কেউই বাংলাদেশের কূটনৈতিক দফতরের ভিতরে প্রবেশ করেননি। তবে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কূটনৈতিক টানাপড়েন জিইয়ে রাখার চেষ্টা দেখা গিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের। ভারত সরকার ওই ঘটনাকে ‘সরলীকরণ’ করার চেষ্টা করছে বলে দাবি করে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার।
এর পরে সোমবার অনির্দিষ্ট কালের জন্য দিল্লিতে বাংলাদেশের ভিসা-কেন্দ্র বন্ধ করে দেয় ঢাকা। তার পরে জানা যায়, শিলিগুড়ি এবং আগরতলায়ও ভিসা-কেন্দ্র সাময়িক ভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ। বস্তুত, সোমবার শিলিগুড়িতে বাংলাদেশি ভিসা-কেন্দ্রের কাছে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন একদল জনতা। তার পরেই এই পদক্ষেপ করেন বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ।