ছবি: পিটিআই।
রাজ্যে গণতন্ত্র নেই, এই অভিযোগে প্রায় প্রতিদিন বাংলার প্রতিটি বুথকে ‘স্পর্শকাতর’ ঘোষণা করার দাবি তুলছে বিজেপি। অথচ বিজেপি শাসিত পড়শি রাজ্য ত্রিপুরায় ‘অরাজকতা’র অভিযোগে লোকসভা ভোট প্রক্রিয়াই পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে নির্বাচন কমিশন। যা নিয়ে মুখে স্বাগত জানালেও দৃশ্যত ‘অস্বস্তি’তে এই রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্ব।
ত্রিপুরা পশ্চিম আসনের নির্বাচন হয়ে গেলেও ত্রিপুরা পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল আজ, বৃহস্পতিবার। কিন্তু বিজেপির বিরুদ্ধে ভোটের আগে ‘সন্ত্রাস’, ‘হুমকি’র অভিযোগ তোলে সেখানকার বিরোধী দল সিপিএম। তারই জেরে নির্বাচন ৫ দিন পিছিয়ে দিয়েছে কমিশন। বুধবার এ বিষয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘নির্বাচন কমিশন যা ঠিক মনে করেছে, তা-ই করেছে। ত্রিপুরা সরকার কমিশনের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার কমিশনের সঙ্গে সহযোগিতা করছে না। এটাই আমাদের অভিযোগ।’’
পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির বক্তব্য, আরও বেশি নিরাপত্তার দাবিতে ত্রিপুরায় বিজেপি-সহ সমস্ত দলই নির্বাচন কমিশনের কাছে ভোট পিছনোর আবেদন করেছিল। নির্বাচন কমিশন সেই আবেদনেই সাড়া দিয়েছে। তাদের দাবি, গত দশ বছরে ত্রিপুরার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি একটু একটু করে খারাপ হচ্ছিল। পাহাড় এবং সমতলের মধ্যে অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি হচ্ছিল। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর সেখানে সেতুবন্ধনের কাজ শুরু করেছে। কিন্তু এত দ্রুত তা শেষ করা যায়নি।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
যদিও তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘ত্রিপুরার ঘটনায় বিজেপির থোঁতা মুখ ভোঁত হয়েছে। ওখানে পঞ্চায়েতে একতরফা ভোট হয়েছিল। যদিও এর পরেও দিলীপ ঘোষের মতো দু’কান কাটা বিজেপি নেতারা চেঁচাতেই থাকবেন।’’ আর সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে যা চলছে ত্রিপুরার অবস্থাও তা-ই, বরং আরও খারাপ। এখানেও ভোট লুঠ হয়, ওখানেও তাই হয়। ত্রিপুরার এই ঘটনা বুঝিয়ে দিল, গণতন্ত্রের প্রশ্নে বাংলায় তৃণমূলের বিকল্প কখনওই বিজেপি হতে পারে না। বামপন্থীরা দুর্বল হয়ে গেলে কী অবস্থা হয়, তা ত্রিপুরার মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন।’’