মহারাষ্ট্রের ওয়ার্ধার সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া
মেরুকরণের তিরে এ বার কংগ্রেসকেও ঘায়েল করার চেষ্টা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মহারাষ্ট্রের একটি সভায় তাঁর কটাক্ষ, ‘‘হিন্দু অধ্যুষিত আসনে প্রার্থী দিতেই ভয় পাচ্ছে কংগ্রস।’’ প্রধানমন্ত্রীর নিশানায় যে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর দ্বিতীয় কেন্দ্র ওয়ানাড, তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। একই সঙ্গে মোদীর আক্রমণ, ‘হিন্দু সন্ত্রাস’ শব্দবন্ধের আমদানি করে কংগ্রেস আসলে হিন্দুদের অপমান করেছে। ‘শান্তিপ্রিয় হিন্দু’দের সন্ত্রাসী বলে দেগে দিয়েছে।
অমেঠীর পাশাপাশি কেরলের ওয়ানাড কেন্দ্রে প্রার্থী হচ্ছেন রাহুল গাঁধী। রবিবারই এই ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। আর তার পরের দিনই মহারাষ্ট্রের ওয়ার্ধায় নির্বাচনী জনসভা থেকে রাহুলের নাম না করেও খোঁচা দিলেন প্রধানমন্ত্রী। এই বিষয়টিই তুলে এনে মোদীর আক্রমণ, ‘‘কংগ্রেস হিন্দুদের অপমান করেছে। সাধারণ মানুষ তাদের শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওই দলের (কংগ্রেস) নেতারা হিন্দু প্রধান কেন্দ্রে প্রার্থী দিতেই ‘ভয়’ পাচ্ছেন।’’এই ওয়ানাড কেন্দ্রে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ প্রায় ২৮ শতাংশ। অন্যান্য কেন্দ্রের তুলনায় কিছুটা বেশি।
লোকসভা ভোটের প্রচারে বিজেপির প্রচারে অন্যতম হাতিয়ার মেরুকরণ তথা কট্টর হিন্দুত্ববাদ। সোমবার মোদী যে শুধু সেই হিন্দুত্বের লাইন উস্কে দিয়েছেন তাই নয়, কংগ্রেসকে হিন্দু বিরোধী প্রমাণের মরিয়া চেষ্টাওচালিয়েছেন। মহারাষ্ট্রের মালেগাঁও বিস্ফোরণের পর ‘হিন্দু সন্ত্রাস’ শব্দবন্ধ ব্যবহার শুরু হয়। সেই মোদী এ দিন দাবি করেন, ‘‘কংগ্রেস হিন্দু সন্ত্রাসবাদ শব্দের ব্যবহার করেছে। শান্তিপ্রিয় হিন্দুদের সন্ত্রাসবাদী বলছে। দেশবাসী কংগ্রেসকে এর জন্য কখনও ক্ষমা করবে না।’’
আরও পড়ুন: অসমে ৭০ হাজার চিহ্নিত অনুপ্রবেশকারী উধাও! সুপ্রিম কোর্টে তথ্য দিল রাজ্য সরকার
আরও পড়ুন: আখলাক খুনে মূল অভিযুক্ত যোগীর সভার প্রথম সারিতে!
মহারাষ্ট্রে শিবসেনা-বিজেপি জোটের মঞ্চে এই প্রথম প্রচার শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সেই মঞ্চ থেকেই স্বভাবসিদ্ধ ঢঙে জনসাধারণের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘‘একটাও ঘটনা দেখাতে পারবেন, যেখানে হিন্দু সন্ত্রাসের প্রমাণ মিলেছে।’’
মোদীর ওই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় কংগ্রেস জানিয়েছে, সম্প্রদায়ের বিভাজন তাদের লক্ষ্য নয়, সকলেই এক দেশের সন্তান। দলের মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে হিন্দু-মুসলিম পৃথক নয়। সকলেই ভারতবাসী।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
মহারাষ্ট্রে দীর্ঘদিন ধরেই এনসিপি-কংগ্রেস জোট রয়েছে। এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পওয়ার ইউপিএ জমানার মন্ত্রীও ছিলেন। এ বার ভোটেও দু’দল আসন ভাগাভাগি করে লড়ছে। কিন্তু ভোটে লড়বেন না বলে আগেই ঘোষণা করেছিলেন পওয়ার। সেই প্রসঙ্গ টেনে তাঁকে খোঁচা দিতেও ছাড়েননি মোদী। তিনি বলেন, ‘‘অপ্রীতিকর কিছুর আঁচ পেয়েই উনি (শরদ পওয়ার) ভোটে দাঁড়াচ্ছেন না।’’