সিইও-কে বলে তল্লাশির নির্দেশ কমিশনের  

সূত্রের খবর, দুই আমলাই জানিয়েছেন, তথ্যভিত্তিক তল্লাশি চালানো হয়েছে। যে কারণে কয়েকশো কোটি টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে কমিশনের তরফে তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়, গোটা দেশে আদর্শ নির্বাচনী বিধি বলবৎ রয়েছে। তাই সংশ্লিষ্ট এলাকার মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে জানিয়েই যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের তল্লাশি হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:৫৩
Share:

—ফাইল চিত্র।

প্রশ্ন আগেই তুলেছিল বিরোধী শিবির। আর প্রথম দফা ভোটের ঠিক মুখে বেছে বেছে বিরোধী নেতা ও তাঁদের ঘনিষ্ঠদের বাড়িতে আয়কর হানার ‘স্বচ্ছতা’ নিয়ে এ বার সংশয় প্রকাশ করল নির্বাচন কমিশন। যার জেরে কমিশনের কর্তাদের কাছে আজ নিজেদের অবস্থান জানাতে বাধ্য হলেন প্রত্যক্ষ কর পর্ষদের চেয়ারম্যান পি সি মোদী এবং রাজস্ব সচিব এ বি পাণ্ডে।

Advertisement

সূত্রের খবর, দুই আমলাই জানিয়েছেন, তথ্যভিত্তিক তল্লাশি চালানো হয়েছে। যে কারণে কয়েকশো কোটি টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে কমিশনের তরফে তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়, গোটা দেশে আদর্শ নির্বাচনী বিধি বলবৎ রয়েছে। তাই সংশ্লিষ্ট এলাকার মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে জানিয়েই যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের তল্লাশি হয়।

দু’দিন বাদেই দেশে প্রথম দফা ভোট। তার ঠিক মুখে গোটা দেশে ধরপাকড় শুরু করেছে আয়কর দফতর। মঙ্গলবার অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুর লোকসভা কেন্দ্রে তেলুগু দেশম পার্টির প্রার্থী গল্লা জয়দেবের বাড়ি ও দফতরে তল্লাশি চালায় আয়কর দফতর। তার প্রতিবাদে দলের নেতাদের নিয়ে পাট্টাভিপুরমে ধর্নায় বসেন জয়দেব। গত রবিবার মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথের প্রাক্তন উপদেষ্টা রাজেন্দ্রকুমার মিগলানি ও প্রাক্তন সচিব প্রবীণ কক্করের বাড়িতে তল্লাশি চালায় আয়কর দফতর। তার আগে তল্লাশি হয়েছিল কর্নাটকে জেডিএস-কংগ্রেস জোটের বেশ কিছু নেতার বাড়িতে। তল্লাশির হাত থেকে রেহাই পাননি দলিত নেত্রী মায়াবতীর ঘনিষ্ঠেরাও। ভোটের মুখে বিরোধীদের মনোবল ভাঙতেই তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে সরব হয় বিরোধী দলগুলি।

Advertisement

গত রবিবার মধ্যপ্রদেশের পাশাপাশি দিল্লিতে কংগ্রেসের প্রধান অ্যাকাউন্টেন্ট এস এম মইনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল আয়কর দফতর। সংস্থা জানিয়েছে, মধ্যপ্রদেশে একাধিক স্থানে তল্লাশি চালিয়ে হিসাব বর্হিভূত ২৮১ কোটি টাকার খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। যে টাকার বড় অংশ নয়াদিল্লিতে একটি রাজনৈতিক দলের সদর দফতরেও পাঠানোর প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেছে আয়কর দফতর। তাদের দাবি, হাওয়ালার মাধ্যমে কুড়ি কোটি টাকা নয়াদিল্লির তুঘলক রোডের বাড়ি থেকে ওই দলের দফতরে যায়। দিল্লিতে মইনের বাড়িতে হঠাৎ গিয়ে কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেল তল্লাশিতে বাধা দেন বলে অভিযোগ। তবে কংগ্রেস নেতা জানিয়েছেন, দলীয় কার্যালয়ের কর্মী মইন কাজে অনুপস্থিত থাকায় তাঁর বাড়ি গিয়েছিলেন তিনি। পটেল আজ বলেন, ‘‘আমি যে কোনও তদন্তের মুখোমুখি হতে রাজি আছি।’’

ঘটনাচক্রে গতকাল সকাল ১০.৫৩ মিনিটেই বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় টুইট করেন, আয়কর দফতর ২৮১ কোটি টাকা উদ্ধার করেছে। আয়কর দফতরের গোপন তথ্য কৈলাস কী ভাবে জানলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। কমলনাথ সরকারের মুখপাত্র নরেন্দ্র সলুজার প্রশ্ন, ‘‘আয়কর দফতরের বিবৃতির আগে ওই টাকার পরিমাণ কী করে জানলেন কৈলাস?’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

যদিও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ উড়িয়ে আয়কর দফতর দাবি করেছিল, নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে, মূলত হাওয়ালার সঙ্গে জড়িত চক্রের খোঁজে ওই অভিযান চালানো হয়েছিল। ঘটনাচক্রে, তাতে কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার সঙ্গীদের নাম উঠে এসেছে। আয়কর দফতরের ব্যাখ্যা অবশ্য মানতে রাজি হয়নি নির্বাচন কমিশন। গত রবিবারই সমস্ত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে নির্দেশিকা জারি করে সতর্ক করে তারা। তারপরে আজ বিষয়টি নিয়ে তদন্তকারী সংস্থার অবস্থান জানতে মোদী ও পাণ্ডেকে ডেকে পাঠানো হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন