Shah Faesal

উপত্যকায় নয়া দল গড়লেন প্রাক্তন আইএএস শাহ ফয়জল, যোগ দিলেন জেএনইউ-এর শেলা

সিভিল সার্ভিস থেকে সরে আসার পরই রাজনীতিতে যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন ২০০৯ সালের আইএএস বাছাই তালিকার শীর্ষে থাকা শাহ ফয়জল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শ্রীনগর শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৯ ১৮:৩৯
Share:

শ্রীনগরে অনুষ্ঠানের মঞ্চে শাহ ফয়জল ও শেলা রশিদ। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

লোকসভা নির্বাচনে বাকি নেই আর একমাসও। তার আগে আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজনীতিতে যোগ দিলেন প্রাক্তন আইএএস অফিসার শাহ ফয়জল। রবিবার কাশ্মীর উপত্যকায় নিজের রাজনৈতিক দল ‘জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর পিপলস মুভমেন্ট’-এর সূচনা করেন তিনি। সেখানে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছেন বলে জানান তিনি। সেই সঙ্গে বলেন, শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় কাশ্মীর সমস্যার সমাধান বের করাই লক্ষ্য হবে তাঁদের।

Advertisement

সিভিল সার্ভিস থেকে সরে আসার পরই রাজনীতিতে যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন ২০০৯ সালের আইএএস বাছাই তালিকার শীর্ষে থাকা শাহ ফয়জল। যার পর জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আব্দুল্লার সঙ্গে একাধিকবার তাঁর বৈঠকেরও খবর আসে। সেই থেকে ন্যাশনাল কনফারেন্সেই তিনি যোগ দিতে পারে বলে জল্পনা শুরু হয়। আবার উপত্যকার বিচ্ছিন্নতাকামী নেতারাও তাঁকে দলে টানার চেষ্টা করেন বলে খবর ছড়ায়।

তবে সব জল্পনা উড়িয়ে শেষমেশ নিজের আলাদা দল তৈরি করলেন শাহ ফয়জল। সেই উপলক্ষে এ দিন শ্রীনগরের রাজবাগে বিশেষ জনসভার আয়োজন হয়েছিল। লেহ এবং জম্মু থেকেও বহুমানুষ অংশ নিয়েছিলেন তাতে। উপস্থিত ছিলেন দিল্লির জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটির ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন সহ সভাপতি ও সমাজকর্মী শেলা রশিদও। উপত্যকার কয়েক’শ মানুষের সঙ্গে এ দিন শাহ ফয়জলের দলে যোগদান করেন তিনি। উপত্যকার মহিলাদের সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নিতে আহ্বান জানান।

Advertisement

আরও পড়ুন: অভিনন্দনের চোখ-হাত বাঁধা ভিডিয়ো দেখেই পাকিস্তানে মিসাইল তাক করেছিল ভারত!​

ওই জনসভায় শাহ ফয়জল বলেন, ‘‘কাশ্মীরিদের জম্মু-কাশ্মীরে সাধারণ মানুষকে আজকের এই জনসভায় স্বাগত জানাই। কাশ্মীর উপত্যকায় অনেক রাজনৈতিক দল রয়েছে। প্রথম সারির সেই দলগুলির মধ্যেই কোনও একটিতে যোগ দেব ভেবেছিলাম শুরুতে। কিন্তু আমাকে নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করি ওদের মধ্যে। তাই আমার মতো অন্য কাশ্মীরি যুবকদের সুযোগ করে দিতে নিজের আলাদা দল গঠন করার সিদ্ধান্ত নিই।’’

শাহ ফয়জল আরও জানান, ‘‘কাশ্মীর উপত্যকার সাধারণ মানুষ যা চান, তাই হবে। তাঁদের ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান বের করতে কাজ করব আমরা। ধর্মের নামে যাঁরা জম্মু-কাশ্মীরে বিভাজন ঘটানোর চেষ্টা করছেন, সর্বশক্তি দিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব। কাশ্মীরের যুবসমাজের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করব। সকলের কাছে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া এবং রাজ্যে দুর্নীতির অবসান ঘটানোই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’’

মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় শুরুতে তাঁকে দলে টানতে চেয়েছিলেন বিচ্ছিন্নতাকামী নেতারা। নাম না করে এ দিন তাঁদের বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন শাহ ফয়জল। তিনি বলেন, ‘‘নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দার জন্য আমাকে দলে জায়গা দিয়ে প্রস্তুত ছিলেন অনেকে। কিন্তু তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছি বলে, এখন আবার অনেকে আমাকে বিজেপি-আরএসএস-এর এজেন্ট বলে ডাকতে শুরু করেছেন। তবে ওসবে কানে তোলার সময় নেই আমাদের। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে কাশ্মীরের যুবসমাজকে সুযোগ করে দিতেই এই দলের সূচনা করেছি আমরা।’’ কাশ্মীরি পণ্ডিতদেরও নির্দ্বিধায় উপত্যকায় ফিরে আসতে আহ্বান জানান তিনি।

আরও পড়ুন: আজহার নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বুঝি, সমস্যার সমাধান হবে, বললেন নয়াদিল্লির চিনা রাষ্ট্রদূত​

আদতে উত্তর কাশ্মীরের কুপওয়ারা জেলার সোগাম-লোলাব এলাকার বাসিন্দা শাহ ফয়জল। ২০০৯ সালে কাশ্মীর থেকে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় প্রথমবার শীর্ষ স্থান দখল করে নজরে এসেছিলেন শাহ ফয়জ়ল। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ইস্তফা দেন তিনি। সেই সময় বলেন, ‘‘কাশ্মীরিদের হত্যা থামাতে সদিচ্ছা দেখাচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্যের বিশেষ মর্যাদার উপরেও আঘাত হানার চেষ্টা হচ্ছে। হিন্দুত্ববাদীদের চাপে দেশের ২০ কোটি মুসলিম কার্যত দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হয়েছেন। এর প্রতিবাদে সিভিল সার্ভিস থেকে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, সিবিআই, এনআইএ-র মতো প্রতিষ্ঠানে হস্তক্ষেপ করে নরেন্দ্র মোদী সরকার এ দেশের সাংবিধানিক কাঠামোকে নষ্ট করে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি। তখনই রাজনীতিতে আসার ইঙ্গিতও তখন দিয়ে রেখেছিলেন।

(কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন