—ফাইল চিত্র।
লোকসভার প্রথম দফার ভোটগ্রহণ পর্বের দিনেই অসমে গিয়ে নাগরিকপঞ্জি নিয়ে সুর চড়ালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ শিলচরে নির্বাচনী সভায় তিনি জানান, বিজেপি ক্ষমতায় ফিরলে পুরনো বয়ানে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আসছে না। কিছু সংশোধন পাশ করা হবে। সেই সংশোধনী আনার সময় অসমিয়াদের স্বার্থ সুরক্ষায় গুরুত্ব দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর।
নাগরিকত্ব সংশোধনী নিয়ে অসমে দুই জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধ রয়েছে। ভোট মরসুমে দুই পক্ষকেই নিজেদের দিকে টানার কৌশল নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বাঙালি হিন্দুদের মন জয়ের লক্ষ্যে তিনি বললেন, ‘‘ফের নাগরিকত্ব বিল পেশ হবে। এ বার পাশও হবে। দেশভাগের জন্যই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’’ ওই দুর্ভোগের জন্য কংগ্রেসকেই দোষারোপ করেন তিনি। একই সঙ্গে, অসমিয়াদের স্বার্থরক্ষার আশ্বাসও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
নাগরিকপঞ্জির পাশাপাশি, মহিলাদের ভোট যেন পদ্মশিবিরই পায় তা নিশ্চিত করতে চেষ্টার ত্রুটি করেননি মোদী। তাঁর কথায়, ‘‘কংগ্রেস আমাকে শৌচালয়ের চৌকিদার বলে কটাক্ষ করে। আমি খুশিই হই। মা-বোনেদের ইজ্জত রক্ষার চৌকিদারি করছি।’’ এর পরই তাঁর প্রতিশ্রুতি, ক্ষমতায় ফিরে এ বারও তিন তালাক প্রতিরোধে বিল আনবেন এবং আইন প্রণয়ন করেই ছাড়বেন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
দুদিন আগেই বরাক উপত্যকায় নির্বাচনী প্রচারে এসে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী বলেছিলেন, ‘‘চৌকিদার শুধু চোর নয়। ভীতুও। বিতর্কে আহ্বান করেছিলাম, সাহস দেখাননি।’’ মোদী আজ নিজেকে ‘চৌকিদার’, ‘চা-ওয়ালা’ হিসেবে বারবার উল্লেখ করলেও বিতর্কের প্রসঙ্গ এড়িয়েই যান। বরং রাহুল-সনিয়া গাঁধী যে ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় জামিনে মুক্ত, সে কথা স্মরণ করিয়ে দেন। তাঁর কথায়, ‘‘দেশকে বন্ধক রাখার চেষ্টা করলে চৌকিদার হিসেবে তিনি কোনও ভাবেই তা সফল হতে দেবেন না।’’
বিহারের ভাগলপুরে আজ প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতি এবং পরিবারতন্ত্র নিয়ে বিরোধী মহাজোটকে নিশানা করেন। মহাজোটকে ‘মহাভেজাল’ বলে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘ওরা ভয় পাচ্ছে, মোদী ফের ক্ষমতায় ফিরলে ওদের দুর্নীতির দোকান বন্ধ হয়ে যাবে। পরিবারতন্ত্র আর চলবে না। তাই ওরা বলছে, মোদী ফের জিতলে ভোট হবে না, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলি সঙ্কটের মুখে পড়বে।’’
শিলচরের সভায় চা-শ্রমিক এবং জনগোষ্ঠীর আবেগ ছোঁয়ারও চেষ্টা করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘‘চা-ওয়ালা বলে ওঁরা আমাকে নানা গালিগালাজ করেন বটে, কিন্তু তাঁরা কি জানেন, চায়ের পাতা তুলতে হাত কেটে যায়! রাসায়নিকের জন্য অসম, পশ্চিমবঙ্গের চা শ্রমিকদের কত সমস্যার মোকাবিলা করতে হয়!’’
ত্রিপুরায় অভিযোগ একটি আসনেই ভোট। আর সেখানেও বিজেপি’র বিরুদ্ধে বিরোধী দলের পোল-এজেন্টদের বুথ থেকে বার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। সিপিএম নির্বাচন কমিশনে অভিযোগও করেছে। শহরে সারাদিন দেখা মেলেনি কেন্দ্রীয় বাহিনীর। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব অবশ্য দাবি করেছেন, নাগরিকেরা উৎসবের মেজাজে ভোট দিয়েছেন।