মোদীর হাতিয়ার জাতীয়তাবাদই

ঝাড়খণ্ডে তিনটি সভা করার কথা ছিল মোদীর সেনাপতি অমিত শাহের। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়ায় সেখানে যেতেই পারলেন না তিনি। প্রধানমন্ত্রী প্রচারের ফাঁকে ঘূর্ণিঝড়ের খবর নিলেও জনসভায় তা নিয়ে বিশেষ কিছু বলেননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৯ ০৫:০৯
Share:

নরেন্দ্র মোদী।

দেশের পূর্ব উপকূলে ততক্ষণে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। তার খবর নেওয়ার ফাঁকেফাঁকেই পশ্চিম প্রান্তে দাপিয়ে প্রচার চালিয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

ঝাড়খণ্ডে তিনটি সভা করার কথা ছিল মোদীর সেনাপতি অমিত শাহের। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়ায় সেখানে যেতেই পারলেন না তিনি। প্রধানমন্ত্রী প্রচারের ফাঁকে ঘূর্ণিঝড়ের খবর নিলেও জনসভায় তা নিয়ে বিশেষ কিছু বলেননি। বলেননি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা একাধিক ব্যর্থতার অভিযোগ নিয়ে একটি শব্দও। বরং আগাগোড়াই কংগ্রেস এবং প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাকে নিশানা করলেন। রাজস্থানের জনসভায় কংগ্রেসকে জাতীয়তাবাদের ফাঁদে ফেলারও চেষ্টা চালালেন।

গত কালই কংগ্রেস দাবি করেছিল, তাদের জমানাতেও ছ’বার সার্জিকাল স্ট্রাইক হয়েছে। সেই ছ’বারের দিনক্ষণও জানিয়ে দেয়। আজ মোদী বলেন, ‘‘এখন কংগ্রেসও দাবি করছেন তারা ছ’বার সার্জিকাল স্ট্রাইক করেছে। কিন্তু সে স্ট্রাইকের খবর জঙ্গিরা জানে না, পাকিস্তান জানে না, এমনকি কোনও ভারতীয়ও জানেন না। প্রথম বার যখন সার্জিকাল স্ট্রাইকের খবর শুনল, কংগ্রেস প্রথমে উপেক্ষা করে, পরে বিরোধ। তার পর ভাবে, আমরাও বলে দিই। তাই কংগ্রেসও শুরু করল ‘মি-টু’, ‘মি-টু’।’’

Advertisement

মোদী বলেন, ‘‘যদি কাগজেই সার্জিকাল স্ট্রাইক করার ছিল, ভিডিয়ো গেমেই করার ছিল, তা হলে ৬ হোক বা ৩, ২০ হোক বা ২৫, এই মিথ্যেবাদীদের কী এসে যায়?’’ মোদীর কথা শুনেই রে-রে করে ওঠে কংগ্রেস। তারা বলতে শুরু করে, শুধু ইউপিএ জমানায় নয়, অটলবিহারী বাজপেয়ীর সময়েও সার্জিকাল স্ট্রাইক হয়েছিল। কিন্তু মোদীর মতো কেউ ঢাক পেটাননি। কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘প্রাক্তন সেনাপ্রধান বিক্রম সিংহও ইউপিএ জমানায় সার্জিকাল স্ট্রাইকের কথা বলেন। আজ প্রধানমন্ত্রী যা বললেন, সেটি সেনা ও তাদের প্রধানের অপমান। যে মোদী সেনার বাহাদুরি নিয়ে ভোট চাইছেন, এখন সেই সেনাকেই অপমান করলেন।’’

আজ সকাল থেকেই মাসুদ আজহারকে নিয়ে তাতানো শুরু করেন মোদী। তখনই দিল্লিতে কংগ্রেসের আনন্দ শর্মা সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘‘দেশভক্তি নিয়ে বিভাজন তৈরি করতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী। কেন বেকারি, কৃষক দুর্দশা, আর্থিক সঙ্কটের মতো বিষয়গুলি থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে চাইছেন?’’ দিন গড়াতে কংগ্রেসের সার্জিকাল স্ট্রাইক নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসলে মোদী সুকৌশলে তাদের দেশভক্তির বিতর্কেই টেনে আনতে চাইলেন। কংগ্রেসকেও তার জবাব দিতে হল।

গত কাল মায়ের কেন্দ্র রায়বরেলীতে প্রচারের ফাঁকে প্রিয়ঙ্কা সাপুড়েদের সঙ্গে কথা বলার সময় সাপ নেড়েচেড়ে দেখেন। মোদী আজ নাম না করে তাঁর উদ্দেশে বলেন, ‘‘এক সময় কংগ্রেসের নামদাররা বিদেশি অতিথিদের সামনে সাপ-নেউল নাচিয়ে খুশি হতেন। আজ এই নামদার পরিবারের চতুর্থ প্রজন্মও এই কাজ করছে। আজও সাপ-সাপুড়েদের খেলা দেখিয়ে ভোট চাইছে। ওঁরা ভুলে গিয়েছেন, ভারত এখন সাপ নয়, কম্প্যুটারের মাউস চালায়।’’ যা শুনে কংগ্রেস বলছে, মোদী জমানাতেই ভারতে বিজ্ঞান চর্চা এবং গবেষণা সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন