Lok Sabha Election 2019

বন্দি লালুর দিন কাটছে ভজন শুনে

‘‘ইধার যাদা দের তক খাড়া হনে কা নেহি হ্যায়। যাইয়ে ইধারসে, নিকলিয়ে।’’ কটেজের মূল গেটে উঁকিঝুঁকি মারতেই এক সশস্ত্র পুলিশের ধমক।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

রাঁচী শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৯ ০২:৩৭
Share:

হাসপাতালের সামনের এই কটেজই এখন লালুপ্রসাদের ঠিকানা। —নিজস্ব চিত্র।

রোগীর ভিড় উপচে পড়ছে হাসপাতাল চত্বরে। রাঁচীর সরকারি হাসপাতাল, রাজেন্দ্র ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (রিমস)-এর ছবিটা আর পাঁচটা ব্যস্ত সরকারি হাসপাতালের থেকে আলাদা কিছু নয়। কিন্তু হাসপাতালের দ্বিতীয় তলের ডায়ালিসিস বিভাগের সামনের করিডর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে শেষ প্রান্তে পৌঁছলে হঠাৎই যেন সব কিছু পাল্টে যায়। করিডরের শেষ প্রান্তে কটেজগুলিতে ঢোকার গেট। সেখানে বন্ধুকধারী রক্ষীরা ঘুরছেন। ৮টি কটেজের মধ্যে ‘এ-১’ কটেজে ভর্তি রয়েছেন জেলবন্দি লালুপ্রসাদ।

Advertisement

‘‘ইধার যাদা দের তক খাড়া হনে কা নেহি হ্যায়। যাইয়ে ইধারসে, নিকলিয়ে।’’ কটেজের মূল গেটে উঁকিঝুঁকি মারতেই এক সশস্ত্র পুলিশের ধমক। এক হাসপাতাল কর্মী জানালেন, প্রচুর লালু-ভক্ত দর্শনের আশায় এখানে উঁকিঝুঁকি মারেন।

চলছে লোকসভা নির্বাচন। কয়েক দফা ভোটগ্রহণ ইতিমধ্যেই শেষ। ঠিক তখনই কটেজ নম্বর এ-১-এর ভিতরে নিস্তরঙ্গ জীবন কাটছে লালুর। প্রত্যেক শনিবার বিকেলে তিন ঘনিষ্ঠ তাঁর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেতেন। গত দু’সপ্তাহ ধরে সেটাও বন্ধ। রিমসে লালুর প্রধান চিকিৎসক উমেশ প্রসাদ জানান, ‘‘সত্যিই খুব একা লালুজি। দু’বেলাই ওঁকে দেখতে যাই। আগের মতো মজার মজার কথা খুব একটা বলেন না উনি।’’ আর এক চিকিৎসক জানান, এখন বেশ ভোরেই উঠে পড়ছেন। তার পর ফাঁকা কটেজের বাইরে, কমন বারান্দায় মর্নিং ওয়াক করছেন। গোল বারন্দায় কয়েক পাক হাঁটার পরে একটা চেয়ারে বসে কিছুক্ষণ শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম করেন। তার পর ফের ঢুকে পড়ছেন তাঁর কেবিনে। মাঝেমধ্যে ওই কটেজ থেকে ভেসে আসে ভজনের আওয়াজ। উমেশবাবু বলেন, ‘‘উনি ভজন শুনতে ভালবাসেন। টিভির চ্যানেল ঘুরিয়ে কোথাও ভজন হলে সেখানেই আটকে যান। মাঝে মাঝে খবরও শোনেন।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

আমিষ খেতে ভালবাসেন লালুপ্রসাদ। কিন্তু কিডনি সমস্যার কারণে ডায়েটে আমিষ বন্ধ। তাতে লালুজি মনমরা হয়ে পড়ায় এখন তাঁকে সপ্তাহে দু’দিন দেওয়া ছোট চিংড়ি দেওয়া হচ্ছে। উমেশবাবুর কথায়, ‘‘ছোট চিংড়ি কিডনির উপর কোনও প্রভাব ফেলে না। তাই সপ্তাহে দু’দিন বরাদ্দ চিংড়ি। ডিমের সাদা অংশ দেওয়া হচ্ছে সকালের জলখাবারে।’’ কিডনির নানা জটিল সমস্যা, ডায়াবিটিস-সহ বহুবিধ শারীরিক সমস্যার চিকিৎসা চলছে তাঁর। উমেশবাবু বলেন, ‘‘ভোটের সময় বিহারে না থাকতে পারার হতাশা হয়তো গ্রাস করছে তাঁকে। তবে বাইরে থেকে দেখে তা বোঝার উপায় নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন