বিপন্ন মর্যাদা, লড়তে বুথমুখী বারামুলা 

পুলওয়ামা-বালাকোট এবং তার পরে চলতে থাকা সেনা অভিযানের প্রেক্ষিতে কাশ্মীরের ভোটদান নিয়ে আশঙ্কায় ছিল সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বারামুলা শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৯ ০২:৫৬
Share:

সওয়ার: শিকারায় প্রচারে ন্যাশনাল কনফারেন্স কর্মীরা। বৃহস্পতিবার শ্রীনগরে। ছবি: পিটিআই।

প্রথম দফার ভোটের পরীক্ষায় মোটের উপরে উতরে গেল জম্মু-কাশ্মীর। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, উত্তর কাশ্মীরের বারামুলা কেন্দ্রে গড় ভোটদানের হার ৩৪.৬১ শতাংশ। জম্মুতে ওই হার ৭২.১৬ শতাংশ। গত কয়েক বছরের হিংসার আবহের প্রেক্ষিতে বারামুলায় এই ভোটদানের হার সন্তোষজনক বলে মনে করছেন রাজনীতিক ও প্রশাসনিক কর্তারা। নির্বাচনী হিংসায় নিহত হয়েছেন এক জন।

Advertisement

পুলওয়ামা-বালাকোট এবং তার পরে চলতে থাকা সেনা অভিযানের প্রেক্ষিতে কাশ্মীরের ভোটদান নিয়ে আশঙ্কায় ছিল সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই। কিন্তু এ দিন সকাল থেকে বারামুলার বিভিন্ন এলাকায় বুথে ভিড় জমান স্থানীয়েরা।

সকালে হান্দোয়ারার বুথে উৎসাহ নিয়েই ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন এক দল যুবক। বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলার ফাঁকে মহম্মদ ইমরান বললেন, ‘‘আগে দু’বার ভোট দিইনি। কিন্তু কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপ করার চেষ্টা হচ্ছে। তাই এ বার ভোট দিলাম।’’ কাকে ভোট দিয়েছেন, তা অবশ্য বলতে রাজি হলেন না। একটু দূরেই দাঁড়িয়েছিলেন আর এক ভোটার রফিক আহমেদ। বললেন, ‘‘রাজ্যে নির্বাচিত সরকার নেই। তাই বাহিনীর কনভয় চালানোর জন্য জম্মু-শ্রীনগর সড়ক বন্ধ রাখার মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া গিয়েছে। নির্বাচিত সরকার থাকলে এমনটা হত না।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

প্রায় একই কথা বললেন কুপওয়ারা শহরে ভোট দিতে আসা এক প্রাক্তন শিক্ষক। তাঁর কথায়, ‘‘বিশেষ মর্যাদা রক্ষার লড়াই সংসদে লড়তে হবে। আমরা এ বার ভাল জনপ্রতিনিধিকে নির্বাচিত করার চেষ্টা করছি। আশা করি তাঁরা আমাদের বিশ্বাসের মর্যাদা রাখবেন।’’

জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের জন্য সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে। বিজেপিও তাদের ইস্তাহারে জানিয়েছে, জনসঙ্ঘের সময়ে নেওয়া বিশেষ মর্যাদা লোপের অবস্থানে তারা অনড়। এই পরিস্থিতিতে কাশ্মীরের মানুষ ভোটের মাধ্যমে বিশেষ মর্যাদা রক্ষার লড়াই লড়তে চাইছেন বলে ধারণা উপত্যকার রাজনীতিকদের। এতে পিডিপি, ন্যাশনাল কনফারেন্সের মতো কাশ্মীরের মূলস্রোতের দলগুলির সুবিধে হতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।

তবে উন্নয়ন নিয়ে সচেতন বারামুলার ভোটারেরা। হান্দোয়ারার হানগা গ্রামে ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন কয়েকশো বাসিন্দা। প্রশ্ন করতেই প্রবীণ আব্দুল আহাদ খান বললেন, ‘‘গ্রামের স্কুলটা হাইস্কুল হয়েছিল ১৫ বছর আগে। একটা চিকিৎসালয় আছে। সেটার উন্নয়নও হয়েছিল ১৫ বছর আগে। স্কুল-চিকিৎসালয়ের জন্যও ভোট দেওয়ার প্রয়োজন আছে।’’ আজ সিয়াচেনে ভোট দিয়েছেন সেনারা। এই প্রথম ব্যালট পেপার ডাউনলোড করে ভোট দেওয়ার পরে ডাক ব্যবস্থার মাধ্যমে তা সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে পাঠানো হয়।

ভোট শেষ হওয়ার পরে কুপওয়ারার ল্যানগেট এলাকায় বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় স্থানীয় যুবকদের একাংশ। তাতে নিহত হয়েছেন ওয়াইস মির নামে এক যুবক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন