কথা ছিল মায়াবতীর সঙ্গে যৌথ ভাবে উত্তরপ্রদেশে নিজেদের প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করবেন অখিলেশ সিংহ যাদব। কিন্তু গত কাল কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী উত্তরপ্রদেশে নিজের দলের প্রথম দফার প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে দেওয়ার পরে আজ কিছুটা দ্রুততার সঙ্গেই উত্তরপ্রদেশের বেশ কয়েকটি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিল এসপি। মইনপুরি আসন থেকে ঘোষণা করা হয়েছে মুলায়ম সিংহ যাদবের নাম। গত বারের ভোটে মইনপুরি এবং আজমগড় দু’টি আসনে লড়েছিলেন মুলায়ম। কনৌজ কেন্দ্রীয় প্রার্থী হিসেবে নিজের স্ত্রী ডিম্পল যাদবের নাম ঘোষণা করেছেন অখিলেশ।
এসপি সূত্রের বক্তব্য, মুলায়মের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক গতিবিধিতে উদ্বিগ্ন তাঁর ছেলে। কখনও তিনি চলে যাচ্ছেন বিক্ষুব্ধ দলত্যাগী নেতা তথা ভাই শিবপালের অনুষ্ঠানে, কখনও সংসদে প্রশংসা করছেন নরেন্দ্র মোদীর। কেন প্রার্থী বাছাইয়ে বিলম্ব করছে এসপি, তা নিয়েও সমালোচনায় মুখর এসপি-র এই প্রবীণ নেতা। তিনি কেন এই কাজ করছেন, বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের বক্তব্য, ‘শত্রু’ মায়াবতীর সঙ্গে জোট গড়ার ঘোরতর বিরোধী মুলায়ম। টিকিট বণ্টনের পুরো সিদ্ধান্ত যে ভাবে অখিলেশ নিয়েছেন, তা-ও মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না তিনি। এরই মধ্যে অখিলেশের কৌশল, মুলায়মের হাতে আর দেরি না করে একটি আসন তুলে দিয়ে তাঁকে ভোটে ব্যস্ত করে ফেলা। যাতে মুলায়মকে কেন্দ্র করে বাড়তি কোনও সুবিধা না আদায় করতে পারে বিজেপি। মুলায়ম ছাড়াও বদায়ুঁ থেকে ধর্মেন্দ্র যাদব, ফিরোজাবাদ থেকে অক্ষয় যাদবের নামও আজ ঘোষণা করা হয়েছে।
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, প্রার্থী তালিকা ঘোষণার ক্ষেত্রে অখিলেশ এবং মায়াবতী— উভয় পক্ষকেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। রাজ্যের প্রতিটি আসনেই লড়ে অভ্যস্ত এই দুই দল। কিন্তু জোটের দৌলতে নিজেদের ভাগের আসন কমেছে অনেকটাই। ফলে টিকিট না পাওয়ার ক্ষোভ এবং আশঙ্কায় অনেক নেতাই বহির্মুখী। এসপি-র এক নেতার মতে, ‘‘ছিপ ফেলে বসে রয়েছেন শিবপাল যাদব। তা ছাড়া প্রিয়ঙ্কার অভিষেকের পরে কংগ্রেসও পূর্ণ উদ্যমে মাঠে নেমেছে। ফলে সেখানে আসন পাওয়া যায় কিনা, তার খোঁজও নেওয়া শুরু করেছেন অনেক নেতা।’’ তবে অখিলেশ শিবিরের বক্তব্য, শেষ পর্যন্ত হাওয়া যে দিকে থাকে, তার বিপরীতে কেউ সাঁতার কাটতে চায় না। লোকসভার টিকিট না পেলেও সম্ভাব্য জয়ী দলকে ছাড়ার আগে অনেক ভাবতে হবে এই নেতাদের।