ত্রিপুরায় ভোটের সভা সারলেন নরেন্দ্র মোদী। ছবি পিটিআই।
এক দিকে বিরোধীরা পাকিস্তানের জয়গান গাইছে বলে অভিযোগ তোলা। অন্য দিকে স্থানীয় উন্নয়নের খতিয়ান আর আবেগের মিশেল। উত্তর-পূর্বের দুই রাজ্য ত্রিপুরা ও মণিপুরে আজ এই রসায়নেই ভোটের সভা সারলেন নরেন্দ্র মোদী।
ত্রিপুরা ও মণিপুরে দু’টি করে লোকসভা আসন। ভোট ১১ ও ১৮ এপ্রিল। ত্রিপুরার উদয়পুরের সভায় আজ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘মোদীকে উৎখাত করতে কংগ্রেস আর বাম একযোগে কাজ করছে। এনডিএ সরকার যখন জখন জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়ছে, তখন পাকিস্তানের জয়গান গাইছে তারা।’’ জনতাকে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘‘আমি কি জঙ্গিদের জবাব দিয়ে ঠিক কাজটাই করছি না?’’
মণিপুরে গিয়ে এর সঙ্গে মোদী জুড়ে নিয়েছেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নাম। প্রধানমন্ত্রীর সভা বয়কট করে মণিপুরে জঙ্গি সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ আজ বন্ধ ডেকেছিল। তার মধ্যেই ইম্ফলের হফতা কাংজেইবুং এলাকায় জনসভা করেছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘নেতাজির সঙ্গে মৈরাংয়ে দেশের মাটিতে প্রথম তেরঙ্গা ওড়ানো (সম্ভবত বোঝাতে চেয়েছেন আন্দামানের পরে মূল ভূখণ্ডে প্রথম বার) মণিপুর কি কখনও দেশবিরোধী কংগ্রেসকে ক্ষমা করতে পারে? দেশের সেনার বীরতার উপরে আপনাদের ভরসা আছে, কিন্তু কংগ্রেসের নেই। পাকিস্তান যে অপপ্রচার দুনিয়ায় ছড়াচ্ছে, কংগ্রেস সেটাই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। যারা বলছে কাশ্মীরে আলাদা প্রধানমন্ত্রী হওয়া উচিত, কংগ্রেস তাদেরই সমর্থন করে। কংগ্রেসের ইস্তাহারকে ভারতের নয়, পাকিস্তানের ভেঁপু মনে হচ্ছে।’’
বাংলাভাষী ত্রিপুরায় অবশ্য কংগ্রেসের পাশাপাশি পূর্বতন বাম সরকার এবং তৃণমূলকে সমান তালে আক্রমণ করেছেন মোদী। বলেছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে ত্রিপুরায় থাবা বসাতে দেননি এখানকার মানুষ। তাঁরা ২৫ বছরের বাম সরকারকে উৎখাত করে গোটা দেশে নজির গড়েছেন।’’ বিরোধী আক্রমণের মুখে কৃষি নিয়েও মুখ খুলতে হয়েছে মোদীকে। ত্রিপুরার বিজেপি সরকার দালাল ও মহাজনদের রাজত্ব বন্ধ করে চাষিদের থেকে সরাসরি কৃষিপণ্য কিনছে বলে দাবি করেন তিনি। ব্রড গেজ রেললাইন, সেতুর কাজ শুরু, বিমানবন্দর সংস্কারের কথা জানান। আর মণিপুরে বলেন, ‘‘কংগ্রেস শাসনে ইচ্ছে করলেই রেল, সড়ক, বাঁধ নির্মাণ শেষ হতে পারত। কিন্তু কংগ্রেস দালালি খেতে ব্যস্ত। মেরি কম, বোম্বাইলা, সরিতার মতো প্রতিভা গ্রামে গ্রামে। বিজেপি এখানে ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করছে। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ নিজে ফুটবলার। আসুন আমরা কংগ্রেসকে লাল কার্ড দেখিয়ে মণিপুর তথা উত্তর-পূর্বের রাজনীতির ময়দান থেকে বরাবরের মতো বের করে দিই। কংগ্রেস আমলে এখানকার ছেলেমেয়েরা ভিন্ রাজ্যে হেনস্থার মুখে পড়ত। তা-ও কমেছে।”
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
মণিপুরের মোরেতে আবার সংঘর্ষবিরতিতে থাকা কুকি জঙ্গি সংগঠন কেএনএর সেনাধ্যক্ষ থাংবই হওকিপ গ্রামপ্রধানদের ডেকে হুমকি দেন, বিজেপি প্রার্থীরা ৯০ শতাংশের বেশি ভোট না-পেলে তাঁদেরই দোষী সব্যস্ত করা হবে। বিজেপির দাবি, হাওকিপের সঙ্গে দলের সম্পর্ক নেই।