বাবাকে নিয়ে বললে মুখ খুলুন রাফাল নিয়েও: রাহুল

রাহুল বলেন, ‘‘মোদী যেখানেই যান, ঘৃণা ছড়াতে থাকেন। হরিয়ানায় এক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আর এক সম্প্রদায়ের লড়াই বাধানোর চেষ্টা হচ্ছে। তিনি তামিলনাড়ুতে গেলে কোনও পক্ষের সমালোচনা করেন। মহারাষ্ট্রে গেলে উত্তরপ্রদেশ, বিহারের মানুষের বিরুদ্ধে বলেন, এক ধর্মের মানুষকে অন্য ধর্মের মানুষের সঙ্গে লড়িয়ে দেন।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

সিরসা শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৯ ০৩:০৯
Share:

সিরসায় প্রচারে রাহুল গাঁধী। বৃহস্পতিবার হরিয়ানায়। ছবি: পিটিআই।

তাঁর বাবা প্রয়াত রাজীব গাঁধী কিংবা তাঁকে নিয়ে বলতেই পারেন নরেন্দ্র মোদী, কিন্তু একই সঙ্গে তাঁকে মুখ খুলতে হবে রাফাল কেলেঙ্কারি নিয়েও। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে আজ এই ভাষাতেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন রাহুল গাঁধী।

Advertisement

রাজীবকে প্রথমে ‘ভ্রষ্টাচারী নম্বর ওয়ান’ হিসেবে তুলে ধরা, তার পরেই ভারতের রণতরী ‘আইএনএস বিরাট’-কে পারিবারিক ছুটি কাটানোর সময়ে ব্যবহার করার অভিযোগ— ভোটবাজারে প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে একের পর এক তির ছুড়ছেন মোদী। এ নিয়ে বিভিন্ন স্তরে সমালোচনা হলেও পিছিয়ে আসছেন না তিনি। হরিয়ানার সিরসায় আজ এর জবাব দিয়েছেন রাহুল। মোদীর উদ্দেশে তাঁর মন্তব্য, ‘‘রাজীব গাঁধী কিংবা আমার সম্পর্কে আপনার যদি কিছু বলার থাকে, নিশ্চয়ই বলবেন। কিন্তু প্রথমে বলুন, রাফাল নিয়ে আপনি কী করেছেন। দেশের মানুষের কাছে আপনাকে ব্যাখ্যা করতে হবে, ২ কোটি চাকরির যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা পূরণ করলেন না কেন?’’

উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড়ে কংগ্রেসের রাজীব-কন্যা প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাও নিশানা করেন প্রধানমন্ত্রীকে। মোদীর কথা টেনে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদিকা বলেন, ‘‘ওঁর থেকে বেশি ভীতু আর কমজোর প্রধানমন্ত্রী আমি জীবনে দেখিনি।’’ প্রিয়ঙ্কার মতে, রাজনীতির শক্তি কখনওই বড়সড় প্রচার সভা কিংবা টিভি শো থেকে আসে না। গণতন্ত্রে মানুষই সবচেয়ে বড়। রাজনীতিকদের উচিত তাঁদের সমস্যার কথা শোনা। তাই বিরোধীদের কথা শোনার ক্ষমতা থাকা উচিত মোদীর। তবে মানুষের দুর্দশার দিকে নজর দেওয়া তো দূর, কী ভাবে জবাব দিতে হবে প্রধানমন্ত্রী তা-ও জানেন না।

Advertisement

এ দিন সিরসার সভায় বেড়ে চলা বেকারি নিয়ে মোদীকে কটাক্ষ রাহুল। বলেন, ‘‘শুরুতে আপনি বললেন মেক ইন ইন্ডিয়ার কথা। তার পরে স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া থেকে স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া। সব শেষে বলছেন, পকোড়া বানিয়ে রোজগার করার কথা।’’ মোদীর উদ্দেশে রাহুলের প্রশ্ন, ‘‘চাষিদের ফসলের সঠিক দাম দিতে পেরেছেন কি? ১৫ লক্ষ টাকা দেশের মানুষের অ্যাকাউন্টে দিয়েছেন?’’ কংগ্রেস সভাপতি অভিযোগ করেন, ‘৫৬ ইঞ্চির ছাতি’ নিয়ে ভোটপ্রচারে কোথাও বেকারি কিংবা কৃষকদের সমস্যা নিয়ে কোনও কথা বলছেন না মোদী।

রাহুল বলেন, ‘‘মোদী যেখানেই যান, ঘৃণা ছড়াতে থাকেন। হরিয়ানায় এক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আর এক সম্প্রদায়ের লড়াই বাধানোর চেষ্টা হচ্ছে। তিনি তামিলনাড়ুতে গেলে কোনও পক্ষের সমালোচনা করেন। মহারাষ্ট্রে গেলে উত্তরপ্রদেশ, বিহারের মানুষের বিরুদ্ধে বলেন, এক ধর্মের মানুষকে অন্য ধর্মের মানুষের সঙ্গে লড়িয়ে দেন।’’ গত পাঁচ বছরে মোদী কোন কাজ করেছেন, তা সামনে আনার জন্যও চ্যালেঞ্জ ছোড়েন রাহুল।

পাশাপাশি, কংগ্রেস সভাপতি এ দিন দাবি করেন, কংগ্রেস সরকারে এলে তাদের প্রস্তাবিত ‘ন্যায়’ প্রকল্প দেশের আর্থিক পরিস্থিতিকে ফিরিয়ে দিতে পারে। গরিব পরিবারগুলিকে বছরে ৭২ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে এই প্রকল্পে। তবে সরকারে এলে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে গিয়ে মধ্যবিত্তের উপর করের বোঝা চাপানো হবে না বলেই জানিয়েছেন রাহুল। বরং তাঁর দাবি, মোদী জমানায় ‘অবৈধ ভাবে’ সুবিধা পাচ্ছেন যে শিল্পপতিরা, তাঁদের থেকেই ওই প্রকল্পের টাকা তোলা হবে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন