—ফাইল চিত্র।
বাবার সঙ্গে ছিলেন আইএনএস-বিরাট যুদ্ধজাহাজে। কিন্তু সে বার বাবা রাজীব গাঁধী ছুটি কাটাতে নয়, গিয়েছিলেন সরকারি সফরে।
খোদ রাহুল গাঁধীর এক সাক্ষাৎকারের অংশ আজ পেশ করল কংগ্রেস। নরেন্দ্র মোদীর অভিযোগের পরে গাঁধী পরিবারের তরফে এই প্রথম কোনও বক্তব্য এল। আর সেখানেই রাহুল গাঁধী পাল্টা অভিযোগ করলেন, আসলে ভোটের সময় প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের কথা বলছেন, যাতে যাবতীয় আলোচনার অভিমুখ এই বিতর্কেই কেন্দ্রীভূত থাকে। আমজনতার ‘মূল’ বিষয়গুলি থেকে নজর ঘুরে যায়।
ক’দিন আগেই দিল্লির রামলীলা ময়দানে প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, সেনাকে নিজের সম্পত্তি বানিয়ে রাজীব গাঁধী সপরিবারে ছুটি কাটাতে নৌসেনার যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিরাট ব্যবহার করেছিলেন। লক্ষদ্বীপে সেই ছুটির পর্বে নিয়ে গিয়েছিলেন শ্বশুরবাড়ির লোকজনকেও। যাঁরা কি না ইতালির নাগরিক।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এর জবাব দিয়ে গত কালই নৌসেনার চার প্রাক্তন কর্তা সাফ জানিয়েছিলেন, ছুটি কাটাতে নয়, সরকারি সফরেই সস্ত্রীক লক্ষদ্বীপ গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধী। তাঁর নিরাপত্তার কারণেই লক্ষদ্বীপে মোতায়েন করা হয়েছিল নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ। প্রাক্তন নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল এল রামডস এ-ও জানান, রাহুল গাঁধীকে তিনি দেখেননি আইএনএস বিরাটে। অন্যরা দেখতে পারেন। তার পরেই বিজেপি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায় ত্রিশ বছর আগে ওই যুদ্ধজাহাজে রাহুলের ছবি
প্রকাশ করে।
সাক্ষাৎকারে রাহুল বলেন, তিনি বাবার ওই সরকারি সফরে ছিলেন। কিন্তু একই সঙ্গে প্রশ্ন তোলেন, বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজে কেউ ছুটি কী করে কাটাতে পারে? সেটি তো কোনও প্রমোদতরী ছিল না! কিন্তু তাঁদের জন্য আইএনএস বিরাট মোতায়েন করা হয়েছিল না, তা মনে করতে পারেননি রাহুল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সেটি নৌসেনাকেই জিজ্ঞাসা করতে হবে। ৩৫ বছর আগে একটি বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন ছিল কি না, সেটি কী করে বলব? কিন্তু এটি দেখতে পারছেন না, নরেন্দ্র মোদী এই সব কথা বলে একটি ধোঁয়া তৈরি করছেন? যাতে আসল বিষয়গুলি হারিয়ে যায়?’’
রাহুল বলেন, ‘‘মোদী আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যে ভাবে পড়ে থাকেন, ততটা আমিও থাকি না! আসলে এটিই তাঁর পালানোর পথ। তাঁকে শুভেচ্ছা। আসলে তিনি অতীতে আটকে আছেন। আর আমরা ভবিষ্যতের কথা বলি। মোদী আয়নায় পিছন দিকে তাকিয়ে বাস চালাচ্ছেন। সে কারণে নোটবন্দি, গব্বর সিংহ ট্যাক্স (জিএসটি)র মতো বিষয়গুলি এড়িয়ে যান। আমরা এমন মৌলিক সমস্যার কথা উত্থাপন করি, যেগুলি সাধারণ মানুষের বিষয়। আসলে ভবিষ্যত নিয়ে ভয় পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’’
কংগ্রেস গতকাল থেকেই সোশ্যাল দুনিয়ায় একাধিক ছবি পোস্ট করেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, মোদীর আমলেও তারকাদের সেনার জাহাজ কিংবা বিমানে তোলা হয়েছে। এমনকি সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ‘অরাজনৈতিক’ সাক্ষাৎকার নেওয়ার পরে বলিউডের যে তারকা অক্ষয় কুমারের নাগরিকত্ব নিয়ে বিতর্ক বেধেছে, তাঁকেও ঠাঁই দেওয়া হয়েছে যুদ্ধজাহাজে।
গত কালই অ্যাডমিরাল রামডস বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী সরকারি সফরে তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে যেতেই পারেন। কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা বলেন, ‘‘নিজের পরিবারের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কোনও যোগাযোগই নেই। সে কারণে তিনি তাঁদের নিয়েও যান না। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখলে মোদীও পরিবারকে সেনার জাহাজে নিয়ে যেতে পারতেন।’’