নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় না-ফিরলে বিরোধী শিবিরের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন? প্রশ্নটি রাজনীতির অন্দরে ঘুরপাক খাচ্ছে অনেক দিন। কিন্তু অন্য নেতানেত্রীদের মতোই কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীও এর সরাসরি জবাব দিলেন না। বরং জোরের সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, আপাতত তাঁর ‘পাখির চোখ’ বিজেপি বিদায়।
বিজেপি বিরোধী দলগুলি যত কাছাকাছি এসেছে, কংগ্রেসের সঙ্গে এক মঞ্চে সামিল হয়েছে ততই সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রীর নাম নিয়ে গুঞ্জনও বেড়েছে।
মঙ্গলবার পুরুলিয়ায় নির্বাচনী সভার ফাঁকে এবিপি আনন্দের সঙ্গে কথা বলেন রাহুল। সেই সময় তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, প্রধানমন্ত্রী পদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মায়াবতী, শরদ পওয়ার, চন্দ্রবাবুদের মধ্যে বেশি পছন্দ কাকে?
পরিণত রাজনীতিকের দক্ষতায় রাহুল জবাব দেন, ‘‘আপনারা আমাকে মূল লক্ষ্য থেকে সরাতে চাইছেন। এই ফাঁদে আমি কিছুতেই পা দেব না। এ নিয়ে আলোচনাই করব না। আমার কাছে ২৩ মে এখন অর্জুনের পাখির চোখের মতো। লক্ষ্য পূর্ণশক্তিতে বিজেপি ও আরএসএস-কে হারানো।’’
এই রাজ্যে মমতার দলের সঙ্গে তাঁদের নির্বাচনী বোঝাপড়া হয়নি। পরস্পরের বিরুদ্ধে সব আসনে প্রার্থী দেওয়া তো বটেই, প্রচারে পারস্পরিক আক্রমণও চলছে। এই অবস্থায় ভোটের পরে উভয় দলের মধ্যে সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নেবে, জল্পনা
তা নিয়েও।
কিন্তু রাহুল সেই প্রসঙ্গেও স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘‘আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক অবস্থানগত বিরোধ আছে। এই টেনশন থাকবে। তবে ব্যক্তিগত স্তরে মমতাজির সঙ্গে কোনও সমস্যা নেই। ওঁর আলাদা জায়গা আছে। আমি তাঁকে সম্মান করি।’’
তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, মমতা আপনাকে ‘বাচ্চা ছেলে’ বলেন। আপনার কেমন লাগে? রাহুলের জবাব, ‘‘যাঁর যা মনে হয় বলুন। আমি তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। আমি সকলের কাছ থেকেই শিখি।’’
নির্বাচনী প্রচারে মমতা কংগ্রেসের সঙ্গে আরএসএসের ‘গোপন সম্পর্কে’র ইঙ্গিত করে অভিযোগ করেছিলেন, অধীর চৌধুরী ও অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের মতো কংগ্রেস প্রার্থীরা আরএসএসের টাকায় ভোট করছেন। এ দিন তা নিয়েও প্রশ্ন করা হয় রাহুলকে। তিনি বলেন, ‘‘এটা হতেই পারে না। আমি ওঁদের দু’জনকেই জানি। অধীরকে আমি ভাল করে চিনি। এটা সম্ভব নয়।’’
বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতা ভেস্তে যাওয়া নিয়ে প্রশ্নের জবাবে রাহুল বলেন, ‘‘আমরা আলোচনা করেছিলাম। কিন্তু এগোয়নি। বামেরা যদি চায়, কংগ্রেস থাকবে না তা তো হতে পারে না।’’ এ নিয়ে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু যে টাকাপয়সা লেনদেনের অভিযোগ করেছিলেন, তা-ও পুরোপুরি অস্বীকার করেন কংগ্রেস সভাপতি।