খুনসুটি: শনিবার কানপুরের হেলিপ্যাডে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা ও রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই।
চাঁদি ফাটা রোদ্দুর। তার মধ্যেই সময়ে সভায় পৌঁছনোর তাড়া। স্নায়ু টানটান লড়াইয়ে নরেন্দ্র মোদীকে হারানোর জন্য চোয়াল কষা।
এই হাই ভোল্টেজ পরিস্থিতিতে কানপুরের রোদ ঝলসানো হেলিপ্যাড আচমকাই যেন বদলে গেল অপু দুর্গা-র নির্মল খুনসুটির ফ্রেমে! গম্ভীর, ঝাঁঝালো, মুখ খিঁচিয়ে থাকা, পারস্পরিক দোষারোপের রাজনৈতিক সংলাপে গোটা দেশের রক্তচাপ যখন টংয়ে বসে, তখন এই ফ্রেমটি মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে প্রসন্ন বাতাস বইয়ে দিল প্রচার-ক্লান্ত গুমোট দেশে।
উত্তরপ্রদেশের দু’দিকে প্রচার করতে দৌড়চ্ছিলেন রাহুল গাঁধী ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। রাহুলের গন্তব্য ছিল রায়বরেলী, প্রিয়ঙ্কার উন্নাও। তারই মাঝে হঠাৎ দেখা দু’জনের। বাকিটার ভিডিয়ো টুইট করেছেন কংগ্রেস সভাপতি নিজেই। যেখানে দেখা যাচ্ছে টারম্যাকে বোনের কাঁধ জড়িয়ে তাঁর সঙ্গে খুনসুটি করছেন দাদা। কপ্টার চালকদের সহাস্যে বলছেন, ‘‘আপনাদের একটা কথা বলি। ভাল দাদা কাকে বলে শুনুন। আমি খুব লম্বা লম্বা সফর করছি ছোট্ট হেলিকপ্টারে কোনও মতে বসে। আর আমার বোন ছোট্ট সফরেই বড়সড় কপ্টার নিচ্ছে! তবুও আমি বোনকে ভালবাসি।’’ পাশে দাঁড়ানো প্রিয়ঙ্কা কখনও হাসিতে ভেঙে পড়ছেন, কখনও হাসতে হাসতেই দাদার হাত চেপে ছদ্ম ধমক দিচ্ছেন—‘‘একদম সত্যি নয়! একদম সত্যি নয়। আমার একঘণ্টার উড়ান!’ বিমানকর্মীদের অনুরোধে এর পর ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে ভাই-বোন একে অপরকে এক বার জড়িয়ে ধরে উঠে যান নিজ নিজ কপ্টারে। ওঠার আগে বোন জেনে নেন দাদার পরবর্তী সফরসূচি।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
রাজনৈতিক শিবির বলছে, বারাণসী আসনে প্রিয়ঙ্কার না দাঁড়ানো নিয়ে ভাই-বোনের মধ্যে বিভাজনের যে তত্ত্ব বিজেপির একাংশের তরফে ছড়ানো হয়েছিল, তাতে জল ঢেলে দিয়েছে এই ভিডিয়ো। দলের অন্দরেও গুঞ্জন উঠেছিল যে, ভাই-বোনের যুগলবন্দি ভেঙে গিয়েছে। কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব বলছেন, আজকের পরে ‘মনোমালিন্য’ নিয়ে বাকি গুঞ্জনও বন্ধ হয়ে গেল। প্রিয়ঙ্কা নিজেও বলেছেন, ‘‘বারাণসীতে না দাঁড়ানোর বিষয়টি দলের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত। আমার বড় দায়িত্ব রয়েছে। অনেক প্রার্থী চাইছেন তাঁদের জন্য আমি প্রচার করি, আমি তাঁদের হতাশ করতে চাইনি।’’
রাহুলের ‘ন্যায়’ প্রকল্প প্রচারের জন্য প্রিয়ঙ্কার অডিয়ো বার্তা ৪০ লক্ষ মোবাইলে পাঠানো হচ্ছে। প্রিয়ঙ্কা বারাণসীতে প্রচারও করবেন। আজও ভাই-বোন মোদীকে তোপ দেগেছেন। প্রিয়ঙ্কা মোদীর সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘দেশের যুবক কাজ পাচ্ছেন না। তিনি আম খেতে কত ভালবাসেন, সেই গল্প শোনাচ্ছেন!’’ আর রাহুল বলেছেন, ‘‘মোদী মিথ্যা বলেছেন। ৪৫ বছরের মধ্যে বেকারির হার এখন সর্বোচ্চ। মোদী ২ কোটি যুবককে চাকরি দেওয়ার কথা আর বলেন না! কৃষকেদের আত্মহত্যার প্রসঙ্গও নেই। কৃষকদের ঋণও মকুব করেননি। প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত এক পয়সাও দেননি।’’