জোটের দরজাটি ফের খুলতে চাইলেন শরদ পওয়ার। ছবি: পিটিআই।
অরবিন্দ কেজরীবালের সঙ্গে জোটে রাজি নন দিল্লির কংগ্রেস সভানেত্রী শীলা দীক্ষিত। রাহুল গাঁধী তবু সমঝোতার দরজা পুরো বন্ধ না করে ভেজিয়ে রেখেছিলেন। কারণ দিল্লিতে জোটের ব্যাপারে কংগ্রেস এখনও কার্যত দ্বিধাবিভক্ত। আজ জোটের দরজাটি ফের খুলতে চাইলেন শরদ পওয়ার। রাহুল আজ সকালে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন। তার কিছু পরেই আপের সঞ্জয় সিংহও যান পওয়ারের বাড়িতে। দলীয় সূত্রের ইঙ্গিত, পওয়ার রাহুলকে বুঝিয়েছেন, গোটা দেশে যখন বিরোধীদের জোট হচ্ছে, তখন খোদ রাজধানীকে জোট না-হলে, সেটিকে বড় করে প্রচার করবে বিজেপি।
শীলা অবশ্য আগেই রাহুলের কাছে গিয়ে জোটের বিপক্ষে মত দিয়েছিলেন। কিন্তু শীলা-বিরোধী অজয় মাকেন-সহ দিল্লি কংগ্রেসেরই সব প্রাক্তন সভাপতি, এমনকি সিংহভাগ জেলা সভাপতিও রাহুলকে চিঠি লিখে আপের সঙ্গে জোট করার আর্জি জানান। যার পর খোদ সনিয়া গাঁধী ও রাহুলকে চিঠি লিখে জোট নিয়ে হাইকমান্ডের মত জানতে চেয়েছেন শীলা। আসলে এক বার ‘না’ করার পরে ফের জোটের কথা উঠে আসায় শীলা বিরক্ত। ক্ষুব্ধও। নিজের বাড়িতে কয়েক জন নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। এর পরে বলেছেন, ‘‘আমি আপের সঙ্গে সমঝোতার ঘোর বিরোধী। এর পরেও যদি সমঝোতা করতে হয়, সেটি হাইকমান্ড স্থির করবে।’’
শীলা শিবিরের মতে, আসলে কংগ্রেসেরই অনেক নেতা আপের সঙ্গে সমঝোতার পক্ষে সওয়াল করে নিজেদের আসন বাঁচাতে চাইছেন। কংগ্রেসের শক্তি বৃদ্ধি তাঁদের লক্ষ্য নয়। তাঁরা জানেন, জোট না-হলে বিজেপির লাভ। জোট হলেই আপের সাহায্যে নিজেদের আসন বার করে নিতে পারবেন। দিল্লির দায়িত্বে থাকা এইআইসিসি নেতা পি সি চাকোও বলেছেন, ‘‘ভোটপর্ব শুরু হয়ে গিয়েছে। জোট হলেই দলের মঙ্গল। আলাদা ভোটে লড়লে বিজেপিরই সুবিধা।’’ গত সপ্তাহে রাহুল জানিয়েছিলেন, দিল্লিতে ৭টি আসনেই কংগ্রেসকে জিততে হবে। তার পরেও এই চাকোই দলের ‘শক্তি’ অ্যাপের মাধ্যমে জোট নিয়ে দলের কর্মীদের মতামত নেন। শীলাকে না জানিয়েই।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
রাহুলের দলে এই দোটানার মধ্যে আপ শীর্ষনেতা কেজরীবাল সকালে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘কংগ্রেস আনুষ্ঠানিক ভাবেই জানিয়ে দিয়েছে, জোট হবে না। আমরা কংগ্রেসের সঙ্গে কথা বলছি না। সংবাদমাধ্যম যে বলছে আলোচনা হবে, সেটা ওরাই ছড়াচ্ছে।’’ আপ নেতা গোপাল রাইও সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দেন, কংগ্রেসের সঙ্গে আর জোট হওয়া সম্ভব নয়। অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। যদিও দুই দলের নেতারাই জানেন, রাজনীতিতে ‘দেরি’ বলে কিছু হয় না। এখনও বিস্তর সময় রয়েছে। কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, ‘‘আপ পঞ্জাব ও হরিয়ানাতেও আসন চাইছে। সেটি একেবারেই সম্ভব নয়। তবে দিল্লিতে ৭টির মধ্যে ৩-৪ টি আসন যদি তারা ছেড়ে দেয়, কংগ্রেস লুফে নেবে। নয়তো রাহুলকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদীর দলকে হারানোয় বেশি জোর দেবেন, নাকি ভবিষ্যতে কংগ্রেসের শক্তি বাড়ানোর চেষ্টায়।’’