ফাইল চিত্র।
ত্রিপুরায় প্রথম পর্বের নির্বাচনী সন্ত্রাস, কারচুপির পুনরাবৃত্তি যাতে আগামী কালের ভোটে ছায়া না ফেলে তার জন্যে নির্বাচন কমিশন অতিরিক্ত রকম সতর্কতা অবলম্বন করেছে। আগামী কাল উপজাতি অধ্যুষিত পূর্ব ত্রিপুরা (সংরক্ষিত) আসনের ১৬৪৫ টি বুথে ভোটারদের নিরাপত্তা দিতে অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে আজ রাজ্য পুলিশের ডিজি এ কে শুক্ল জানিয়েছেন। পাশাপাশি, মুখ্য নির্বাচনী অফিসার শ্রীরাম তরণীকান্ত জানিয়েছেন, অবসরপ্রাপ্ত ডেপুটি চিফ ইলেকশন কমিশনার বিনোদ জুৎসিকে কমিশন আজ পূর্ব ত্রিপুরা আসনের স্পেশ্যাল অবজারভার নিযুক্ত করেছেন। তিনি আজ সন্ধ্যায় আগরতলায় পৌঁছেই রিটার্নিং এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
সব ভোটারদের নির্ভয়ে ভোট দেওয়ার ডাক দিয়ে নিরাপত্তার বিষয়ে তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন ডিজি। পূর্ব ত্রিপুরা আসনে গত ১৮ এপ্রিল ভোট হওয়ার কথা ছিল। শেষ মুহূর্তে তা পিছিয়ে ২৩ এপ্রিল করার প্রায় নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। উল্লেখ্য, নিরাপত্তাজনিত কারণে ১৯৯৩ সালে একবার ত্রিপুরা বিধানসভার ভোট পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
১৬৪৫টি ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তা দিতে অতিরিক্ত ৪২ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আগামী কাল মোট ৬৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী, ত্রিপুরার স্টেট রাইফেলসের ৪০০০ জওয়ান ছাড়াও থাকবে ত্রিপুরা পুলিশের ২৬০০ জওয়ান। এ ছাড়া ৩১ টি মহিলা পরিচালিত ভোট কেন্দ্রে মহিলা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা থাকবেন বলে ডিজি জানান। পাশাপাশি, ১৫৪টি স্পর্শকাতর বুথের দায়িত্বে সম্পূর্ণ ভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে। এ ছাড়াও ৯০ টি স্ট্যাটিক ফোর্স এবং ৯০ টি ফ্লাইং স্কোয়াড লাগাতার নজরদারি চালাবে বলে শুক্ল জানান। তিনি বলেন, ‘‘এই প্রথম একটি কেন্দ্রে তিন জন পুলিশ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছে কমিশন।’’
ডিজি সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘‘আগামী কাল ভোট দিয়ে সোজা বাড়িতে চলে যাবেন। কোনও রকমের ভয় ভীতি ছাড়া যাতে মানুষ নিজেদের ভোট নিজেরা দিতে পারেন, তার জন্য নিরাপত্তা বাহিনী সব রকমের ব্যবস্থা নেবে।’’ কেউ কোনও বাধার সম্মুখীন হলে সঙ্গে সঙ্গে নিকটবর্তী পুলিশের সাহায্য পাবেন।
এই কেন্দ্রের চতুর্মুখী লড়াইয়ে রয়েছেন বর্তমান সাংসদ তথা সিপিএম প্রার্থী জিতেন্দ্র চৌধুরী, বিজেপির রেবতী ত্রিপুরা, কংগ্রেসের প্রজ্ঞা দেববর্মন, শাসক জোটে বিজেপির শরিক আইপিএফটির সভাপতি তথা রাজস্ব মন্ত্রী নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা। ১৯৫৭ সাল থেকে মোট ষোলো বার এই আসনে নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে ১১ বার জিতেছে সিপিএম। পাঁচ বার ছিল কংগ্রেসের দখলে। তার মধ্যে চার বারই বিজয়ী হন রাজবাড়ির প্রতিনিধিরা। কংগ্রেস প্রার্থী প্রজ্ঞা দেববর্মনের পিতা মহারাজা কিরীট বিক্রম দেববর্মণ তিনবার এবং মা বিভু দেবী একবার এই আসন থেকে নির্বাচিত হন।