প্রতীকী ছবি।
বেলা যত গড়াবে, ততই স্পষ্ট হয়ে যাবে ভোটের ফল। কিন্তু গণনার দীর্ঘ প্রক্রিয়া চলাকালীনই সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব, ভুয়ো খবরের আশঙ্কা করছেন অনেকেই। তা ঠেকাতে উপায়ও বাতলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ বারে ভোটে প্রচারে তো বটেই, বিতর্ক মেটেনি ভোটপর্ব মেটার পরেও। ফেসবুক-টুইটার-হোয়াটসঅ্যাপের মতো সোশ্যাল মিডিয়ার নানা মঞ্চে ভুয়ো খবর ছড়িয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছে বারবার। ফল বেরোনোর আগেও নানা চাপানউতোর চলেছে। ২২টি বিরোধী দল মঙ্গলবারই ইভিএমে কারচুপির আশঙ্কা করে কমিশনে গিয়েছিল। তৃণমূলনেত্রী, মুখ্যমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও দলের কর্মীদের বার্তা দিয়েছেন গণনার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে। শাসক পক্ষ অবশ্য বিরোধীদের আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছে। তবে এ বারের ভোটের ফল বেরোনোর আগের পরিস্থিতি যে অনেকটা আলাদা তা মানছেন সকলেই।
এ বারে ফল বেরোনোর আগে যে উদ্বেগ, আশঙ্কার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে তা কি ফলাফল বেরোনো শুরু হতে না হতেই গুজবের জন্ম দিতে পারে? ভুয়ো খবর ধরার বিশেষজ্ঞ প্রতীক সিন্হা জানাচ্ছেন, তা অনেকটাই নির্ভর করবে ভোটের ফল কোন দিকে গড়ায় তার উপরে। প্রতীকের কথায়, ‘‘ভোটে ফল আশানুরূপ না হলে ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন তোলার ঘটনা আগেও ঘটেছে। উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের পরও বিরোধীরা সেই অভিযোগ তুলেছিল। কিন্তু সেই সমস্ত অভিযোগ নিয়ে পরে মামলা করা বা টানা লড়ে যাওয়ার ঘটনা দেখা যায়নি। তবে কী হবে তা পুরোটাই নির্ভর করবে ফল কী হচ্ছে তার উপরে।’’
শেষ পর্যন্ত কে জিতল, কে হারল সেই ফল পুরোপুরি জানতে যেহেতু বেশ দেরি হবে তাই কোনও পক্ষের এগিয়ে থাকা বা পিছিয়ে থাকা নিয়ে গুজব ছড়াতেই পারে। সেক্ষেত্রে হাতে আসা প্রতিটি তথ্যই যাচাই করার পরামর্শ দিচ্ছেন প্রতীক। তাঁর কথায়, ‘‘এখন তথ্য জানার উৎসের কোনও অভাব নেই। তাই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে কোনও তথ্য মিললে তা একাধিক স্বীকৃত সংবাদমাধ্যমের তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে দেখে নেওয়া উচিত। অজস্র সংবাদমাধ্যম ভোটের ফল জানাবে তাই তথ্য জানতে কোনও অসুবিধে হবে না।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তথ্য পুরোপুরি জানার আগেই ‘ট্রেন্ড’ দেখেই নানা সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ভুয়ো খবর ছড়াতে পারে বলে উদ্বেগ রয়েছে। আগেরবারের লোকসভা ভোটে এই আশঙ্কা এতটা ছিল না বলেই জানাচ্ছেন প্রতীক। তিনি বলছেন, ‘‘মোবাইল ইন্টারনেট এখন অনেক সহজলভ্য। পাঁচ বছর আগে তা ছিল না। এত বিপুল সংখ্যক মানুষের হাতে ইন্টারনেট থাকায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবর ছড়ানোর আশঙ্কাও বেড়েছে।’’
আশার কথাও অবশ্য শুনিয়েছেন প্রতীক। তিনি বলছেন, ‘‘আগে ভুয়ো খবর ছড়ালেও তাকে প্রশ্ন করার তেমন কেউ ছিল না। এখন ভুয়ো খবর ধরার জন্যই অনেক সংস্থা তৈরি হয়েছে। মানুষও অনেক সচেতন হয়েছেন। তাই সেই যুক্তির উপরেই আমাদের নির্ভর করতে হবে।’’