ভোট দেওয়ার পরে তেজপ্রতাপ। রবিবার পটনায়। পিটিআই
বিতর্কের বাইরে থাকতেই পারছেন না তিনি! কখনও মঞ্চে নিজের ছবি না দেখে কখনও রেগেমেগে বচসা বাধাচ্ছেন, কখনও সভামঞ্চে হাজির থেকেও ভাষণ দেওয়ার সুযোগ না পেয়ে ক্ষেপে গিয়ে ছোট ভাই তেজস্বী যাদবকে তুলোধোনা করছেন। একার ক্ষমতায় সভা করার মুরোদ নেই বলে আক্রমণ করছেন কংগ্রেসকে। আজ ভোট দিতে গিয়েও এক দফা বচসা ও মারপিটে জড়ালেন লালুপ্রসাদের বড় ছেলে তেজপ্রতাপ যাদব। সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের সঙ্গে তাঁর বিরোধের জেরে পটনার এক চিত্রসাংবাদিক জখম হয়েছেন।
বিহারের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী তেজপ্রতাপ আজ ই-রিকশায় চেপে ভেটেরিনারি কলেজ ময়দানের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়েছিলেন। গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি সাধারণ মানুষ। সাধারণের মতোই ভোট দিতে এসেছি।’’
কিন্তু সমস্যা তৈরি হয় এর পরেই।
ভোট দেওয়ার পরে ফেরার জন্য আর ওই ই-রিকশা নয়, তেজপ্রতাপ নিজের এসইউভিতে গিয়ে চাপেন। চিত্রসাংবাদিকেরা সেই ছবি তোলার জন্য হুড়োহুড়ি শুরু করলে তাঁদের মধ্য দিয়েই গাড়ি চালিয়ে দেন তেজপ্রতাপের গাড়ির চালক। এক চিত্রসাংবাদিকের পায়ের উপরে গাড়ির চাকা উঠে যায়। তিনি যেতে পারছিলেন না। এমন অবস্থায় গাড়িটিকে থামানোর চেষ্টায় সকলে সেটির উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ফলে গাড়ির উইন্ডস্ক্রিন ভেঙে যায়। এর পরেই তেজপ্রতাপের নির্দেশে চিত্রসাংবাদিকদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁর নিরাপত্তা রক্ষীরা। বেসরকারি সংস্থার ওই রক্ষীরা বেধড়ক পেটায় সাংবাদিকদের।
তেজপ্রতাপ এর পর সোজা পটনা বিমান বন্দর থানায় গিয়ে এফআইআর দায়ের করেন চিত্রসাংবাদিকদের বিরুদ্ধে। পরে বলেন, ‘‘আমাকে মারধর করার জন্য হামলা করা হয়েছিল। আমার গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আমার নিরাপত্তা রক্ষীরা কোনও হামলা করেনি।’’ কিন্তু ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গিয়েছে বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীরাই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের বাইরে সাংবাদিকদের মারধর করেছে। জখম চিত্রসাংবাদিক রঞ্জন রাহি বলেন, ‘‘আমার পায়ের ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি গাড়ি থামানোর চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু সে সময়ে বাউন্সাররা আমাকে মারতে শুরু করে।’’
এই প্রথম বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীদের নিয়ে বিতর্কে জড়ালেন না তেজপ্রতাপ। এর আগে পটনায় বিয়েবাড়িতে বরযাত্রীদের সঙ্গেও তাঁর নিরাপত্তা রক্ষীদের গোলমাল হয়। দলের ছাত্র শাখায় যোগ দিতে আসা ছেলেদেরও মারধর করার অভিযোগ ওঠে। এমনকি বিধানসভা চত্বরে তাঁর বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষী ও বাউন্সারদের প্রবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। নিজের নিরাপত্তার জন্য সরকারি রক্ষী ছাড়াও বাউন্সারদের একটি দল নিয়ে সব সময়ে ঘোরেন তেজপ্রতাপ। এ দিনের ঘটনার নিন্দা করেছে বিহারের সমস্ত সাংবাদিকদের সংগঠন। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দাবিও করা হয়েছে।