যোগেশ্বরী গোহিতে (বাঁ দিকে) এবং রিনা দ্বিবেদীর এই ছবিই ভাইরাল।
প্রথম জনের পরনে হলুদ শিফন শাড়ি, চোখে রোদচশমা, হাতে ইভিএম! দ্বিতীয় জনও ভোটের ডিউটিতে। নীল রঙা পোশাকের সঙ্গে গলায় মানানসই নেকপিসে আত্মবিশ্বাসী।
সোশ্যাল মিডিয়ায় দুই তরুণীর ছবি পোস্ট হতেই সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাল, ফেসবুকে বন্ধু হওয়ার অনুরোধে ছয়লাপ, লোকসভা ভোটের বাজারে ‘ইন্টারনেট সেনসেশন’ হয়ে উঠেছেন দুই তরুণী পোলিং অফিসার। উত্তরপ্রদেশের পূর্ত দফতরের জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট রিনা দ্বিবেদী এবং ভোপালের কানাড়া ব্যাঙ্কের অফিসার যোগেশ্বরী গোহিতে। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ থেকে টিকটক, তাঁদের ছবি ভাইরাল সর্বত্র।
দেওরিয়ার বাসিন্দা ৩২ বছর বয়সি রিনা জানিয়েছেন বিয়ে করেছিলেন খুব অল্প বয়সে। ছেলে এখন নবম শ্রেণিতে পড়ে। ভোটের ডিউটি পড়েছিল লখনউয়ে। ইভিএম নিয়ে যাওয়ার সময়ে এক সহকর্মী মজাচ্ছলেই ছবিটি তুলেছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় দিতেই এত কাণ্ড।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আপনি তো এখন জনপ্রিয়? জবাবে রিনা বলেন, ‘‘বিয়ে তাড়াতাড়ি করেছিলাম। কিন্তু নিজের জন্য কেরিয়ারও খুব গুরুত্বপূর্ণ। লোকে আমাকে এত পছন্দ করছেন, প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করছি। নজরে পড়তে কার না ভাল লাগে? আমি খুশি।’’
রিনা জানান, সব চেয়ে মজা পেয়েছেন ছেলের কথায়। তাঁর ছবি ভাইরাল হওয়ার পরে ছেলে স্কুলে গিয়ে বন্ধুদের জানিয়েছিল, ওই মহিলা তার মা। কিন্তু বন্ধুরা বিশ্বাস করেনি। তাই ছেলে এসে রিনাকে বলে, বন্ধুদের ভিডিয়ো কল করতে। তরুণী বলেন, ‘‘ছেলে এসে কাকুতি মিনতি করছে, ওর বন্ধুদের ভিডিয়ো কল করতে হবে। ওরা নাকি বিশ্বাস করছে না, হলুদ শাড়ির মহিলা ওর মা।’’ এই বছরই প্রথম নয়, আগেও ভোটের ডিউটিতে গিয়েছিলেন রিনা। ‘‘এ বারে ছবি পোস্ট হতে কেমন সেলেব্রিটি হয়ে গিয়েছি,’’ বললেন তিনি।
রিনার নিজের কেন্দ্রে ভোট অবশ্য হয়নি। ১৯ মে ভোট দেওরিয়ায়। স্বামী সঞ্জয়ের সঙ্গে ভোট দিতে যাবেন। বললেন, ‘‘গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। কখনও ভোট বাদ দিই না।’’
যোগেশ্বরী গোহিতের ছবি অবশ্য তুলেছিলেন সাংবাদিকরা। মধ্যপ্রদেশের গোবিন্দপুরার বুথে তাঁর ডিউটি পড়েছিল। সে দিন বেশ কয়েক জন সাংবাদিক তাঁর সঙ্গে কথাও বলতে যান। এড়িয়ে গিয়েছিলেন যোগেশ্বরী। জানিয়েছিলেন, তিনি ভোটের ডিউটিতে, তাই কথা বলবেন না। কিন্তু এর কয়েক ঘণ্টায় তাঁর ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল। পরে বলেন, ‘‘রোজ যে রকম পোশাক পরি, তেমনই পরেছিলাম। কোনও ফ্যাশন রোলমডেল নেই। পোশাক দিয়ে কাউকে বিচার করা ঠিক নয়। কাজের দক্ষতা দিয়েই দেখা উচিত।’’ আরও বললেন, ‘‘সবাই নিজস্বী তুলতে চাইছে। মিনিটে মিনিটে সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধু হওয়ার অনুরোধ পাচ্ছি। এ বার দেখছি প্রোফাইল আর পাবলিক রাখা যাবে না, লুকোতে হবে...।’’