রাহুল গাঁধীর সঙ্গে দেখা করলেন চন্দ্রবাবু নায়ডু। ছবি টুইটার।
বুথ ফেরত সমীক্ষা সরকার গড়ার দৌড়ে এনডিএ-কে এগিয়ে রাখলেও হাল ছাড়ছেন না বিরোধীরা। আসল ফল প্রকাশের পরে সরকার গড়তে এনডিএ যদি হোঁচট খায়, বিরোধীরা মিলে যাতে তড়িঘড়ি সরকার গড়া যায়, আজ তার তোড়জোড় চলল দিল্লিতে।
গত কালই রাহুল গাঁধীর সঙ্গে দেখা করে চন্দ্রবাবু নায়ডু লখনউ গিয়েছিলেন মায়াবতী-অখিলেশের সঙ্গে দেখা করতে। আজ চন্দ্রবাবুর দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মায়াবতী আগামিকাল দিল্লিতে এসে সনিয়া গাঁধী-রাহুল গাঁধীর সঙ্গে দেখা করতে পারেন। যদিও কংগ্রেস তরফে বলা হচ্ছে, এখনই হয়তো ফের এই বৈঠক হচ্ছে না। চন্দ্রবাবু আজ দিল্লিতে ফিরেও প্রথমে রাহুল, পরে দশ জনপথে গিয়ে সনিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন। শরদ পওয়ার, সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে দেখা করেও লখনউ বৈঠকের নির্যাস জানান। বিরোধী শিবিরের নেতারা এখনও মনে করছেন, বিজেপি কোনও অবস্থাতেই এনডিএ-র বর্তমান শরিকদের সঙ্গে নিয়ে সরকার গড়তে পারবে না। কে চন্দ্রশেখর রাও, জগন্মোহন কিংবা নবীন পট্টনায়কদের উপরে ভরসা রাখতে হবে অমিত শাহকে।
সে কারণেই চন্দ্রবাবুর মতো এক নেতাকে সামনে রেখে যেমন বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন করতে উদ্যোগী হয়েছেন রাহুল গাঁধী, তেমনই সনিয়া নিজেও কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের নানা দলের সঙ্গে কথা বলার নির্দেশ দিয়েছেন। এনডিএ-র শরিক নীতীশ কুমার আজ প্রজ্ঞা ঠাকুরের বিতর্কিত মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন। যার পরে বিরোধী শিবিরেও আশার আলো জেগেছে। পটনায় বসেই কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী পদ নিয়ে জেদ ধরে থাকবে না কংগ্রেস। তাঁর এই বার্তা নীতীশের উদ্দেশেই ছিল— এ কথা জানাচ্ছেন কংগ্রেসের অনেকে।
আজ অখিলেশ যাদবও বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে বিরোধী জোট ভাল ফল করবে। চার দিন পরে দেশে নতুন সরকার ও নতুন প্রধানমন্ত্রী হবে।’’ উত্তরপ্রদেশে এসপি-বিএসপি-র সঙ্গে কোনও জোট হয়নি কংগ্রেসের। গোটা ভোট প্রক্রিয়ায় মায়াবতী থেকে অখিলেশ বিজেপির পাশাপাশি কংগ্রেসকেও দুষেছেন। কিন্তু ভোট শেষ হওয়ার পরে মায়াবতী যদি এ বারে দিল্লিতে এসে সনিয়া ও রাহুলের সঙ্গে দেখা করেন, তা হলে সেটিও হবে প্রায় এক বছর পর। গত বছর কর্নাটকে এইচ ডি কুমারস্বামীর শপথ গ্রহণেই সকলকে এক মঞ্চে দেখা গিয়েছিল।
কংগ্রেসের নেতারা বলছেন, বুথ ফেরত সমীক্ষা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মেলেনি। এ বারেও তাই হবে। কিন্তু এনডিএ-র শরিকদের নিয়ে মোদী যথেষ্ট আসন না পেলে কেসিআর-জগনরা যাতে বিজেপির সঙ্গে না যান, তার চেষ্টা এখন থেকেই করা হচ্ছে। সকলের সঙ্গেই যোগাযোগ করা হয়েছে। দূত মারফত কেসিআর জানিয়েছেন, তিনি কোনও অবস্থাতেই বিজেপির সঙ্গে যাবেন না। তাতে তাঁর নিজস্ব ভোটব্যাঙ্ক নষ্ট হবে। আর কেসিআর যেখানে থাকবেন, জগনও সঙ্গে যাবেন। ফলে গোটা ভোট প্রক্রিয়ায় রাহুল গাঁধী যেমন নরেন্দ্র মোদীর জন্য সব পথ বন্ধ করার চেষ্টা করেছেন, ভোটের পরেও এখন সেই কাজটি করছে কংগ্রেস।