ছবি- পিটিআই
ভোটের ৭২ ঘণ্টা আগে তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্রের ভোটারদের উদ্দেশে খোলা চিঠি লিখলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। আর তাতে তাঁর আসনের ভোটারদের তিনি ‘আমার অমেঠি পরিবারের সদস্য’ বলে উল্লেখ করলেন। সেই চিঠিতে রাহুল লিখলেন, ‘‘প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, ক্ষমতায় ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা আপনাদের সেই সব জরুরি প্রকল্পের কাজ শুরু করে দেব, যেগুলি বিজেপির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রের এনডিএ সরকার আটকে রেখেছে। তাই আগামী ৬ মে আপনারা সকলে আপনাদের পরিবারের এই সদস্যকে (রাহুল গাঁধী) ভোট দিন। জেতান।’’
তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, নিজেকে অমেঠীর পরিবারের সদস্য বললেও, ভোটের ঘণ্টা বাজার পর এ বার তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্রে যত বার আসতে দেখা গিয়েছে কংগ্রেস সভাপতিকে, তার চেয়ে বহু বার দাদার কেন্দ্রে এসে ভোটের প্রচার করে গিয়েছেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা।
অমেঠীর ভোটারদের উদ্দেশে লেখা চিঠিতে কংগ্রেস সভাপতির অভিযোগ, বিজেপি নেতারা যে সব কথা বলছেন, তার ‘পুরোটাই মিথ্যায় ভরা’। এও অভিযোগ, ভোটারদের ‘কিনতে টাকার বন্যা বইয়ে দিয়েছেন’ বিজেপি নেতারা। তাতে ভোটাররা যাতে বিভ্রান্ত হয়ে না পড়েন, প্রলুব্ধ না হন, সেটা মনে করিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করেছেন রাহুল। লিখেছেন, ‘‘অমেঠীর শক্তিটা হল তার সততা, সংহতি এবং সারল্য।’’
আজ থেকে ১৫ বছর আগে, ২০০৪ সালে রাহুল যখন প্রথম রাজনীতিতে এলেন, সেই তখন থেকেই অমেঠীর মানুষ তাঁর পাশে থেকেছেন। তবে গত লোকসভা নির্বাচনে অমেঠীতে তাঁর ভোট ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর তুলনায় তাঁর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাত যথেষ্টই কমে যায়। গত বার বিজেপি তাঁর বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছিল স্মৃতি ইরানিকে। স্মৃতি এক লক্ষ ভোটের ব্যবধানে হেরেছিলেন রাহুলের কাছে। কিন্তু তার পর অমেঠীতে বহু বার এসেছেন স্মৃতি। এ বারও গোড়া থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়েছেন প্রচারে। বিজেপি নেতাদের একাংশ বলছেন, লড়াইটা এ বার আরও জোরালো হবে ভেবেই কেরলের ওয়েনাড় লোকসভা আসনেও প্রার্থী হয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন- ‘বিজেপিকে সাহায্য! বরং মরে যাব’
আরও পড়ুন- রাহুলকে রুখতে মামলা
এই সব অভিযোগকে লঘু করতেই সম্ভবত তাঁর লেখা চিঠিতে অমেঠীর ভোটারদের ‘একটি পরিবারের সদস্য’ বলে উল্লেখ করেছেন কংগ্রেস সভাপতি। লিখেছেন, ‘‘অমেঠী আমার পরিবার। আমার অমেঠী পরিবারের সদস্যরা আমাকে সাহস জোগান যাতে আমি সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য লড়ি। যাতে আমি গরিবের দুঃখের কথা শুনতে পাই। যাতে তাঁদের জন্য সরব হতে পারি।’’
তাঁর ওই খোলা চিঠিতে কংগ্রেস সভাপতি দেশে চালু ‘দু’টি মতাদর্শে’র উল্লেখ করেছেন। বলেছেন, একটি মতাদর্শ হল, কংগ্রেসের মতাদর্শ। যা কৃষকদের কথা ভাবে। ভাবে মহিলা, যুবক, দুর্বল শ্রেণির মানুষ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কথা। রয়েছে আরও একটি মতাদর্শ। সেটা বিজেপির। সেই মতাদর্শ শুধুই পনেরো/কুড়ি জন শিল্পপতির কথা ভাবে।