কলকাতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তিনি খুশি। কারণ, এটি তাঁদের নৈতিক জয়। দিল্লিতে তাঁর সাংসদবাহিনীর মুখে সে কথারই প্রতিধ্বনি শোনা গেল আজ। তবে রায়ের পরেও রীতিমতো জঙ্গি মেজাজে তাঁরা দিনভর কার্যত অচল করে রাখলেন সংসদের দুই কক্ষ।
সিবিআই-পুলিশ সংঘাতে প্রথম থেকেই যারা পাশে থেকেছে তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখে এগোচ্ছে তৃণমূল। সুপ্রিম কোর্টের রায় কী ভাবে তৃণমূলের জন্য জয়— সব বিরোধী দলকে তা জানানোর জন্য ঘরোয়া ভাবে একটি নোটও তৈরি করা হয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, ওই নোটে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টও রাজ্য সরকারের সঙ্গে সহমত হয়ে জানিয়েছে, কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে গ্রেফতার করা যাবে না। তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘কোনও গ্রেফতার নয়, আত্মসমর্পণ নয়, অমর্যাদা নয়।’’
সিবিআইকে কাজে লাগিয়ে দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ধ্বংস করা হচ্ছে — এই অভিযোগ তুলে গত কাল গোটা দিন সংসদে সরব ছিল তৃণমূল। ওয়েলে নামার সময় পাশে পেয়েছে টিডিপি-আরজেডিকে। আজও সকাল থেকে সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্লোগানে মুখর হন মমতার দলের সাংসদেরা। রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল এ দিন। কিন্তু সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বারবার ওয়েলে নেমে চিৎকার করে স্লোগান দিতে থাকেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ইদ্রিশ আলি, অপরূপা পোদ্দার, শতাব্দী রায়েরা। স্লোগান না-দিলেও ওয়েলে নেমে আসেন মুনমুন সেনও।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে জিতল কে? মমতা বললেন ‘আমরা’, রবিশঙ্কর বললেন
অধিবেশনের শেষ ভাগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আচরণের প্রতিবাদে ওয়াক আউট করে তৃণমূল। সুদীপবাবুর কথায়, ‘‘গত কাল তৃণমূলের পক্ষ থেকে সৌগত রায় দাবি করেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী অধিবেশনে আসুন। বিবৃতি দিন। আমরা আজও অপেক্ষা করেছিলাম। কিন্তু যেহেতু তিনি এলেন না আমরা কক্ষত্যাগ করতে বাধ্য হলাম।’’
সুদীপবাবু এর আগে বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গে একটি আন্দোলন করছেন। সেটি কোনও ব্যক্তিবিশেষকে গ্রেফতার করা নিয়ে নয়। দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র বিপন্ন। এবং তার প্রতিবাদেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই আন্দোলন। আমরা মুলতুবি প্রস্তাব চাইছি। আগামিকাল থেকে টানা অধিবেশন যাতে চলে তার জন্য আমরা কথা দিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু আজ আমাদের অনুরোধ মানা হল না।’’