কড়া প্রহরা সীমান্তরক্ষী বাহিনীর। ফাইল চিত্র।
ভোটের সময় সীমান্ত দিয়ে দুষ্কৃতী অনুপ্রবেশ এবং বেআইনি অস্ত্রের চোরাচালান রুখতে কড়া পদক্ষেপ করল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। শুধু আন্তঃরাজ্য সীমানাই নয়, আর্ন্তজাতিক সীমান্তে নজরদারি আঁটোসাঁটো করা হচ্ছে। এমনকি, সীমান্ত সিলও করে দেওয়া হতে পারে বলে কমিশন সূত্রে খবর।
পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশ রুখতে ভুটান এবং বাংলাদেশের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরের নির্দেশে এই দুই দেশের পুলিশ এবং প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক সেরে নিয়েছেন এ রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তারা। এই বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে বলে খবর। বৈঠকে বিভিন্ন দিক উঠে এসেছে। সে বিষয়ে একটি রিপোর্ট জাতীয় নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছে। তা খতিয়ে ভোটের সময় আর্ন্তজাতিক সীমান্ত সিল করে দেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচন নিয়ে এখন থেকেই রাজনীতির পারদ চড়তে শুরু করেছে। দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনে বিজেপি শীর্ষ স্থানীয় প্রতিনিধিরা এ রাজ্যের জন্যে ‘বিশেষ পর্যবেক্ষক’ নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন। বিশেষ পর্যবেক্ষকের রিপোর্টের ভিত্তিতেই যেন পশ্চিমবঙ্গে প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ করা হয়, এমন দাবিও জানানো হয়েছে। পাশাপাশি, এ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশও করেছে বিজেপি।
আরও পড়ুন: সারা দেশে চলছে অঘোষিত ‘সুপার-ইমার্জেন্সি’, বিজেপিকে তোপ মমতার
বুধবারই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে সোমেন মিত্রের নেতৃত্বে কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা প্রতিটি বুথকেই স্পর্শকাতর ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। বামেরা আগেই তাদের অভিযোগ জানিয়ে গিয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখেই এ রাজ্য লাগোয়া প্রতিবেশী রাজ্যের সীমানায় বিশেষ নজরদারির বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। এমনকি, পশ্চিমবঙ্গের লাগোয়া বাংলাদেশ, ভুটান, নেপালের সীমন্তেও কড়া নজরদারির বন্দোবস্ত করা হবে বলে কমিশন সূত্রে খবর।
এ রাজ্যের আর্ন্তজাতিক সীমানায় বেশিরভাগটাই রয়েছে বাংলাদেশের সঙ্গে। যেমন কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, দুই ২৪ পরগনা, জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিংয়ের একাংশ। বাংলাদেশ থেকে যাতে এই জেলাগুলিতে দুষ্কৃতী অনুপ্রবেশ না হয়, সে কারণে ইতিমধ্যেই সে দেশের প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশ প্রশাসনের তরফে সব রকমের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। একই ভাবে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কালিম্পঙের একাংশ আবার ভুটানের সীমান্তে রয়েছে। নেপাল সীমান্তের সঙ্গেও রয়েছে এ রাজ্যের সীমানা। ফলে আর্ন্তজাতিক সীমান্তে নিরাপত্তার বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়ার কারণ রয়েছে বলে জানান এক আধিকারিক।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিহার, সিকিম, অসম, ঝাড়খণ্ডের সীমানা দিয়ে ভোটের সময় দুষ্কৃতীরা ঢুকে হিংসাত্মক কার্যকলাপ চালাতে পারে বলে রাজনৈতিক দলগুলি অভিযোগ করে। সে বিষয়টিও মাথায় রাখা হচ্ছে। এমনিতেই সীমান্ত অঞ্চলগুলি যথেষ্ট স্পর্শকাতর বলে কমিশন সূত্রে খবর।
গত মাসের শুরুর দিকে এ রাজ্যে যখন কমিশনের ফুল বেঞ্চ আসে তখন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি আন্তর্জাতিক সীমান্ত এবং আন্তঃরাজ্য সীমানা সিল করে দেওয়ার দাবি তুলেছিল। এ বিষয়ে নির্দিষ্ট রিপোর্ট এবং অভিযোগ পাওয়ার পর নির্বাচন কমিশন সীমান্ত লাগোয়া জেলাগুলির সঙ্গে অন্য রাজ্যের জেলার মধ্যে সমন্বয় তৈরি করার নির্দেশ দেয়।