জাতীয় নির্বাচন কমিশন। — ফাইল চিত্র।
২০১১ সালের পর থেকে ওবিসি শংসাপত্রের (বাতিল হওয়া) তালিকা রাজ্য সরকারের থেকে চেয়ে পাঠিয়েছে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) দফতর। আজ, শনিবার এসআইআরের শুনানি শুরুর আগেই শুক্রবার পৃথক ভাবে তফসিলি জাতি (এসসি), তফসিলি জনজাতি (এসটি), অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি), এবং জন্মের শংসাপত্র জেলা প্রশাসনগুলির থেকে চেয়ে পাঠাল নির্বাচন কমিশন। ঘটনাচক্রে, যে নথিগুলি বিহারে এসআইআর ঘোষণার পর দেওয়া হয়েছে, সেগুলিই চেয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, বিহার এসআইআর ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই নথি সংগ্রহের চাহিদা বেড়েছিল এরাজ্যের জেলাগুলিতে।
গত ২৪ জুন বিহারে এসআইআর ঘোষণা হয়েছিল। এ দিন সব জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিককে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে, সে দিনের পর থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রত্যেকটি জেলায় যত এসসি, এসটি, ওবিসি এবং জন্মের শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে, সেগুলির তথ্য সংগ্রহ করে রাখতে হবে। বিধানসভা, মাস এবং তারিখ ধরে সেই তথ্যগুলি রিপোর্ট আকারে কমিশনকে পাঠাতে হবে জেলাশাসকদের। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, প্রত্যেক বছর ধরে যাঁরা এই জন্মের শংসাপত্র দিয়েছেন, পদমর্যাদা উল্লেখ করে তাঁদের তালিকাও আজ, শনিবার বিকেলের মধ্যে পাঠাতে হবে জেলা প্রশাসনগুলিকে। কমিশন সূত্রের খবর,—জন্মের এই শংসাপত্র সম্প্রতি জন্মানো শিশুদের জন্য কার্যকর নয়। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষেরা, যাঁরা জন্মের শংসাপত্রের প্রতিলিপি (বিলম্বিত) সরকারের থেকে চেয়েছেন ও পেয়েছেন, সেগুলির তথ্য থাকতে হবে রিপোর্টে। তেমন শংসাপত্র কারা দিয়েছেন, দিতে হবে সেই তথ্যও।
আধিকারিকমহলের বক্তব্য, জেলা প্রশাসনের কাছে এই ক্ষমতা থাকে। যেমন, কোনও ব্যক্তি ৮০ বা ৯০ দশকে জন্মেছেন। এখন তিনি তখনকার জন্মের বিলম্বিত শংসাপত্র চাইছেন এসআইআর-তথ্যের কারণে। সেই আবেদন যায় এসডিও বা তেমন পদমর্যাদার আধিকারিকের কাছে। তিনি সেই আবেদন দেখে, আবেদনকারীর নথি যাচাই করে এবং আবেদনকারীর এলাকায় গিয়ে প্রতিবেশি বা চেনা-পরিচিতদের সঙ্গে কথা বলে (ফিল্ড ভেরিফিকেশন) সন্তুষ্ট হলে শংসাপত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তবে সেই প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ। ফলে আবেদন করার পরেই দ্রুত সেই শংসাপত্র পাওয়া কার্যত অসম্ভব। পাশাপাশি, বিভিন্ন জেলা থেকে অভিযোগ পাচ্ছিল কমিশন, যেখানে এমন প্রক্রিয়ায় হচ্ছিল অসাধু হস্তক্ষেপও। কমিশনকে অভিযোগ জানান বিরোধীরাও।
এ রাজ্যে এসআইআর চালু হওয়ার পর থেকেই রাজ্য সরকার প্রয়োজনীয় নথি তৈরি করে দেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়ে আসছে সাধারণ মানুষকে। দরকারে এলাকায় এলাকায় শিবির করে নথি তৈরি করিয়ে দেওয়ার কথা প্রশাসনের শীর্ষমহল থেকে জেলা-কর্তাদের বলা হয়েছিল বলেও সূত্রের দাবি। আবার অনেকদিন ধরেই এ রাজ্যে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির সঙ্গে চলেছিল ‘দুয়ারে সরকারও’। সেখানেও নথি তৈরির সুবিধা দিয়ে থাকে প্রশাসন। অভিজ্ঞ আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, অনেক ধরনের পদ্ধতিগত বিধি, যাচাই এবং শুনানির পর্ব থাকার কারণে এমন জাতি শংসাপত্র পাওয়াও বেশ সময়সাপেক্ষ। সম্ভবত সেই কারণে কমিশন দেখতে চাইছে, বিহার এসআইআরের পর থেকে রাজ্যে যে নথি-আবেদনগুলি হয়েছিল, সেগুলি দেওয়ার আগে আদৌ সরকারি বিধি মান্যতা পেয়েছিল কি না।
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে