কেশসজ্জাশিল্পী জাভেদ হাবিব। —ফাইল চিত্র।
জনপ্রিয় কেশসজ্জাশিল্পী জাভেদ হাবিবের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিস জারি করল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। তিনি এবং তাঁর পুত্র বহু মানুষকে ঠকিয়েছেন বলে অভিযোগ। কোটি কোটি টাকার আর্থিক তছরুপের অভিযোগ রয়েছে হাবিব এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে। পুলিশ ইতিমধ্যে একাধিক মামলা রুজু করেছে। হাবিব বা তাঁর পরিবারের কেউ যাতে দেশ ছেড়ে যেতে না-পারেন, তা নিশ্চিত করতে লুকআউট নোটিস জারি করা হয়েছে।
কেশসজ্জার দুনিয়ায় হাবিব অত্যন্ত পরিচিত নাম। দেশের নানা প্রান্তে তাঁর নামের পার্লার গড়ে উঠেছে। বহু মানুষ কেশসজ্জার আশায় সেই সমস্ত পার্লারে যান। কেশসজ্জা সংক্রান্ত বিভিন্ন সেমিনারেও হাবিব যোগ দেন। কিন্তু সম্প্রতি তাঁর এবং তাঁর পুত্রের বিরুদ্ধে বহু মানুষ আর্থিক তছরুপের অভিযোগ দায়ের করেছেন থানায়। উত্তরপ্রদেশের সম্ভলের এসপি কেকে বিশ্নোই জানিয়েছেন, হাবিব, তাঁর পুত্র-সহ মোট তিন জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে অন্তত ২০টি মামলা রুজু করা হয়েছে। তাঁরা একজোট হয়ে আর্থিক প্রতারণা করেছেন। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন, কিন্তু প্রতিশ্রুতিমতো তা ফেরত দেননি।
এসপির কথায়, ‘‘এক-এক জনের কাছ থেকে পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা করে নিয়েছেন হাবিবরা। বিটকয়েনের মাধ্যমে তাঁদের বিনিয়োগ করায় উৎসাহ দিয়েছেন। দাবি করেছেন, এই বিনিয়োগ থেকে বছরে বিপুল অর্থ রিটার্ন আসবে। কিন্তু আড়াই বছর কেটে যাওয়ার পরেও কেউ কোনও রিটার্ন পাননি। ভুক্তভোগীরা বুঝেছেন, তাঁরা প্রতারিত। ফলে তাঁরা পুলিশের কাছে এসেছেন। এখনও পর্যন্ত ৩৫ জনের কাছ থেকে আমরা এই অভিযোগ পেয়েছি।’’ আরও কেউ হাবিব দ্বারা প্রতারিত হয়ে থাকলে তাঁদের থানায় গিয়ে অভিযোগ জানানোর অনুরোধ করেছেন সম্ভলের এসপি।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, হাবিবের স্ত্রী এফএলসি নামের এক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা। দীর্ঘ দিন ধরেই এই সংস্থার সম্পত্তি এবং অনলাইন লেনদেন তদন্তকারীদের নজরে ছিল। এই সংস্থায় বিনিয়োগের জন্যই সাধারণ মানুষকে উৎসাহ দিতেন হাবিবরা। ফাঁদে পা দিয়ে অনেকে অনেক টাকা হারিয়েছেন।
হাবিবের আইনজীবী অবশ্য দাবি করেছেন, কেশসজ্জাশিল্পীর বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর দায়ের করা হয়নি। এফএলসি-র সঙ্গে তাঁর সরাসরি কোনও যোগাযোগ নেই। ওই সংস্থার আয়োজিত একটি সেমিনারে তিনি গিয়েছিলেন মাত্র। হাবিবের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলিকে ভুয়ো বলেও দাবি করেছেন তাঁর আইনজীবী।