কোথায় ছাত্রীর চিঠি, তোলপাড় মোদীর দফতর

সিবিএসই-র দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির কিছু প্রশ্ন যে পরীক্ষার আগেই ফাঁস হয়ে গিয়েছে, সেই কথা প্রধানমন্ত্রীকে তিনি চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন বলে দাবি করলেন লুধিয়ানার ছাত্রী জাহ্নবী বহল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:২৯
Share:

প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডে এ বার সরাসরি অস্বস্তিতে পড়ল নরেন্দ্র মোদীর দফতর।

Advertisement

সিবিএসই-র দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির কিছু প্রশ্ন যে পরীক্ষার আগেই ফাঁস হয়ে গিয়েছে, সেই কথা প্রধানমন্ত্রীকে তিনি চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন বলে দাবি করলেন লুধিয়ানার ছাত্রী জাহ্নবী বহল। গত ১৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রীকে তিনি ওই চিঠি লিখেছিলেন বলে গত কাল দাবি করেন দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী জাহ্নবী। আজ রবিবারের ছুটির দিনে সেই চিঠি খুঁজতে গিয়ে তুলকালাম অবস্থা হয় প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ে।

বছর দুয়েক আগে জেএনইউয়ের ছাত্র নেতা কানহাইয়া কুমারকে তাঁর সঙ্গে প্রকাশ্য বিতর্কে বসার আহ্বান জানিয়ে প্রথম বার খবরের শিরোনামে এসেছিলেন সেই সময়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী জাহ্নবী। এ বার তাঁর দাবি, দশম শ্রেণির অঙ্ক ও জীববিদ্যা এবং দ্বাদশ শ্রেণির অর্থনীতি ও হিসাবশাস্ত্রের প্রশ্ন ফাঁসের কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে গত ১৭ মার্চ চিঠি লিখেছিলেন তিনি। জাহ্নবীর বক্তব্য, ‘‘যারা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস করছিল, আমার স্কুলের এক শিক্ষক এবং এক ছাত্র তাদের খোঁজ পেয়ে গিয়েছিলেন। বিষয়টি স্থানীয় পুলিশকে জানানো সত্ত্বেও তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এর ফলে পরিশ্রমী পরীক্ষার্থীরা মনোবল হারিয়ে ফেলছে।’’

Advertisement

বিষয়টি সামনে আসার পরেই জাহ্নবীর সেই চিঠির খোঁজ শুরু হয় প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় জুড়ে। একটি সূত্র জানায়, সারা দিনে অসংখ্য চিঠি আসে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। এখন জাহ্নবীর চিঠিটি কবে এসেছে বা আদৌ এসেছে কি না, তা সবার আগে নিশ্চিত জানা প্রয়োজন। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘চিঠি লিখে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ তুললেই পরীক্ষা বন্ধ করা যায় না। তার জন্য প্রমাণ দিতে হয়।’’ তিনি জানান, এ বার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে বলে দাবি করে প্রশ্নের নমুনা-সহ কয়েকশো অভিযোগ জমা পড়েছে মন্ত্রকের কাছে। কিন্তু দেখা গিয়েছে, দু’টি ছাড়া সব অভিযোগই ভুয়ো। ইউটিউবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এ রকমই একটি ভুয়ো প্রশ্নপত্র পাওয়া যাচ্ছে। হিন্দির একটি প্রশ্নপত্রও হোয়াটসঅ্যাপে ঘুরছে। সেটি দু’-তিন বছর আগেকার।

আরও পড়ুন: প্রশ্নপত্রের ‘কোড’ ধরিয়ে দিল ত্রয়ীকে

প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডে মোদীর নীরবতা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি তুলেছে তারা। তদন্তে নেমে গত কাল ঝাড়খণ্ডের চাতরার একটি কোচিং সেন্টারের অন্যতম মালিক সতীশ পাণ্ডেকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। কংগ্রেসের অভিযোগ, সতীশ অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)-র নেতা। প্রশ্ন ফাঁসে এবিভিপি-র হাত থাকার অভিযোগ তুলে দিল্লিতে তাদের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন এনএসইউআই। এবিভিপি-র মিডিয়া আহ্বায়ক সাকেত বহুগুণা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘কোচিং সেন্টার খোলার পরেই ওই ব্যক্তিকে সংগঠন থেকে বার করে দেওয়া হয়েছিল।’’ এবিভিপি জানিয়েছে, প্রশ্ন-ফাঁসের প্রতিবাদে দু’দিন ধরে বিক্ষোভ দেখাবে তারা। সিবিএসই চেয়ারপার্সনের ইস্তফাও দাবি করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন