ভরসা দশেই। অমিল দু’হাজার বা ১০০ টাকার নোট। অগত্যা সবাইকে ১০ টাকার বান্ডিলই নিতে হল। শনিবার কৃষ্ণনগর হেড পোস্ট অফিসে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।
নোট বাতিলের ফরমানের পরে তড়িঘড়ি মাঠে নেমে পড়ল আয়কর দফতরও। ৮ তারিখ পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট নাকচের পরে যাঁরা বিপুল পরিমাণে (মূলত আড়াই লক্ষ টাকার বেশি) নগদ ব্যাঙ্কে জমা করেছেন, তাঁদের অনেকের কাছে আয়ের উৎস জানতে চেয়েছে তারা। ইতিমধ্যে এ ধরনের অন্তত কয়েকশো নোটিস পাঠানো হয়েছে সারা দেশে।
দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, আয়কর আইনের ১৩৩ (৬) নম্বর ধারা মেনে নোটিস পাঠানো হয়েছে। যা অনুযায়ী, আয় সংক্রান্ত তথ্য জানার অধিকার আছে তাঁদের। প্রথমে ব্যাঙ্ক দফতরকে জানাচ্ছে যে, কোন কোন ক্ষেত্রে জমা পড়া টাকার অঙ্ক অস্বাভাবিক ঠেকছে। তারপরে খতিয়ে দেখার প্রয়োজন বুঝলে নোটিস যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থার কাছে। জানতে চাওয়া হচ্ছে আয়ের উৎস।
যে সমস্ত নোটিস এখনও পর্যন্ত পাঠানো হয়েছে, তাতে উল্লেখ থাকছে যে, ৮ তারিখের পরে কবে কত টাকা পুরনো পাঁচশো ও হাজারের নোটে জমা দেওয়া হয়েছে। নোটিস যাচ্ছে তাঁদের ঘরে, যাঁদের জমার অঙ্ক মোটা (অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অন্তত আড়াই লক্ষ) কিংবা আয়ের সঙ্গে তার সামঞ্জস্য নেই। সে ক্ষেত্রে জানতে চাওয়া হচ্ছে ওই টাকার উৎস। জমা দিতে বলা হচ্ছে সংশ্লিষ্ট বিল, হিসেবপত্তর, এমনকী থাকলে গত দু’বছরের আয়কর রিটার্নও।
বাজারে দুই বড় নোট অচল করে দেওয়ার পর থেকেই অনেক প্রোমোটার, সোনা ব্যবসায়ী, হাওয়ালা ব্যবসায়ীদের লেনদেনকে চোখে-চোখে রাখছে কেন্দ্র। বিভিন্ন জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও বারবার বলেছেন, যাঁদের ঘরে কালো টাকা মিলবে, সরকার তাঁদের বিন্দুমাত্র রেয়াত করবে না। আয়ের উৎসের হিসেব পাই-পয়সা বুঝে নেবে আয়কর দফতর। ফলে আগামী দিনে তাদের এই অভিযান আরও জোরালো হবে বলে অনেকের ধারণা।
ব্যাঙ্ক বা ডাকঘরে যাতে কালো টাকা নতুন নোটে বদলে নেওয়া না যায়, তার জন্যও ব্যবস্থার কথা গোড়া থেকেই বারবার বলছে কেন্দ্র। যেমন, গরিব মানুষকে সামান্য কিছু টাকা দিয়ে তাঁদের জন-ধন প্রকল্পের অ্যাকাউন্টকে ওই কাজে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্র জানিয়েছে, ওই সমস্ত অ্যাকাউন্টে জমা পড়া টাকার উপর কড়া নজর রাখছে তারা। নজর রয়েছে সমবায় ব্যাঙ্কগুলির উপরেও। ৮ তারিখ হাতে নগদ কত ছিল, তা জানাতে বলা হয়েছে ধর্মস্থানগুলিকেও। যাতে পুরনো নোটে কালো টাকা সেখানেও জমা দেওয়া শক্ত হয়।